রাজনীতি

নয়াপল্টনে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে নিহত এক, আহত ২০

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মকবুল হোসেন (৪০) নামে একজন নিহত হয়েছেন।

Advertisement

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর আড়াইটা থেকে ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষ হয়।

এসময় আহত হন মকবুল। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

Advertisement

এদিকে, নয়াপল্টনে সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২০ জনকে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আহতরা হলেন- বোরহান উদ্দিন কলেজ ছাত্রদলের কর্মী আনোয়ার ইকবাল, পল্টন থানা যুবদলের কর্মী মো. খোকন, মো. মনির হোসেন, মো. রাশেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দীন হলের ছাত্রদল নেতা মো. ইয়াসির আরাফাত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের নেতা মো. সুমন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা মো. জহির হাসান, রূপনগর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. শামীম, কদমতলী থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. হানিফ, মো. হৃদয়, মো. মকবুল হোসেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. ফারহান আরিফ, শাহবাগ থানা যুবদল নেতা মো. নূরনবী, মনির, শাহ আলী থানা যুবদলের নেতা মো. সুলতান আহমেদ, শেরেবাংলা নগর যুবদলের নেতা মো. আমিনুল ইসলাম, গুলশান থানা ছাত্রদলের নেতা আশরাফুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রদলের বিপ্লব হাওলাদার, মো. আসাদুজ্জামান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের নেতা মো. মেহেদী হাসান নয়ন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। দুপুরে নেতাকর্মীদের বেশ ভিড় দেখা যায়। এসময় পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।

Advertisement

এসময় পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশকে ধাওয়া করে। দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে নয়াপল্টন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

পরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিএনপির নেতাকর্মীরা দফায় দফায় মিছিল করেন। সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেন।

এদিকে, বিকেল ৪টার কিছু সময় পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে সামনের সড়কে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা।

এসময় গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যরা এ্যানী ও জুয়েলকে তুলে নিয়ে যায়। তবে সাংবাদিকরা ডিবির কর্মকর্তাদের কাছে তাদের আটক করা হয়েছে কি না, জানতে চাইলেও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অন্যদিকে রাজধানীর নাইটিঙ্গেল মোড়ে ব্যারিকেড দিয়েছে পুলিশ। ফলে রাস্তার দুপাশেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নয়াপল্টনসহ নাইটিঙ্গেল মোড় ও কাকরাইলে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।

নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীরাই চড়াও হয়েছিল বলে দাবি করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম-কমিশনার মেহেদী হাসান।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি বেআইনিভাবে অনুমতি না নিয়ে নয়াপল্টনে সড়কের ওপর বিভিন্ন সময়ে সভা-সমাবেশ করে আসছে। আজ তারা নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর হঠাৎ চড়াও হয়। আক্রমণাত্মকভাবে পুলিশকে আঘাত করে। পুরো এলাকায় তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না ঘটে, সেজন্য ডিএমপি ব্যবস্থা নিয়েছে।’

কেএইচ/কাজী আল-আমিন/এএইচ/জিকেএস