সিরিয়ায় ‘সন্ত্রাস’ দমনে অভিযান চালাতে তুরস্কের কারও অনুমতির প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন। রোববার (৪ ডিসেম্বর) এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
Advertisement
ইব্রাহিম কালিন বলেন, ‘আমাদের অনুমতি নেওয়ার জন্য কাউকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন নেই। আমরা শুধু দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতে মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সিরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতা অবশ্যই কারও জন্য ভালো নয়। এটি প্রত্যেকের জন্য হুমকিস্বরুপ। শুধু আমাদের জন্য নয়, ইরাক, জর্ডান এবং অন্যান্য দেশ, এমনকি ইউরোপের জন্যও হুমকি।’
গত মাসে সিরিয়া ও ইরাকের উত্তরাঞ্চলে কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে), কুর্দিশ পিপলস প্রোটেকশন ইউনিটের (ওয়াইপিজি) স্থাপনা লক্ষ্য করে অভিযান চালায় তুরস্ক।
Advertisement
সম্প্রতি ইস্তাম্বুলের জনপ্রিয় ইস্তিকলাল অ্যাভিনিউতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বোমা হামলা চালালে ৬ জন নিহত ও ৮১ জন আহত হন। এ ঘটনার আটদিন পরই ওই অভিযান চালানো হয়।
গত ২০ নভেম্বর বিমান হামলা চালানোর পর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান ইরাক ও সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে সন্ত্রাস দমনে হামলার ব্যাপারে সতর্ককরেছিলেন।
ওই হামলার প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে এক সিরীয় নারীকে আটক করে তুরস্কের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পুলিশ বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী স্বীকার করেন তিনি সিরিয়ায় কুর্দি যোদ্ধাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আফরিন অঞ্চল দিয়ে তিনি তুরস্কে প্রবেশ করেন।
অভিযান প্রসঙ্গে ইব্রাহিম কালিন আরও দাবি করেন, বেসামরিক ব্যক্তি, আমেরিকান বা রাশিয়ান সৈন্যদের লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়না।
Advertisement
তুরস্ক গত কয়েক দশক ধরে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির (পিকেকে) বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠী পিকেকে-কে তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।
সিরিয়ার যুদ্ধ চলছে প্রায় ১১ বছর ধরে। দেশটির বাশার আল-আসাদ সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া ও ইরান। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ পশ্চিমা দেশগুলো বাশার আল-আসাদবিরোধী। তাদের সঙ্গে রয়েছে তুরস্ক, সৌদি আরবসহ আরও কয়েকটি আরব দেশ।
২০১১ সালের মার্চে দেশটিতে যে সংকটের সূচনা হয়েছিল তার সুরাহা হয়নি এখনও। জাতিসংঘের তথ্য বলছে, ২০২২ সালেরর শুরুর দিকে সিরিয়ার ১ কোটি ৪৬ লাখের বেশি মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। প্রায় ৫ লাখ সিরীয় শিশু ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছে। উদ্বাস্তু হয়েছে কয়েক লাখ সিরীয়।
সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড
এসএনআর/এমএস