ক্যাম্পাস

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন

 

‘৯ বছর ধরে আমি মালীর কাজ করছি। শুধু আমি না প্রতিটা হলেই এমন অনেকে কাজ করছে। সবার একই অবস্থা। আমাদের খুবই কম বেতন দেওয়া হয়। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের যে দাম এতে আমাদের সংসার চলে না। আমার দুইটা বাচ্চা। একটা বাচ্চা লেখাপড়া করে। স্কুলের বেতন ৩৫০০ টাকা। আপনারাই বলেন ১২ হাজার টাকায় আমাদের কীভাবে সংসার চলে? আমাদের একদফা এক দাবি আমরা চাকরি স্থায়ীকরণ চাই।‘ মানববন্ধনে দাড়িয়ে এসব বলছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের মালী শরিফুল ইসলাম। দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে মানববন্ধনে নেমেছেন তারা।

Advertisement

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন রেজিস্টার ভবনের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেন প্রায় ৮০জন কর্মচারী। এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসেও একই দাবিতে মানববন্ধন করেন তারা।

মালী শরীফুল আরও বলেন, এখন আমাদের ধৈর্য্যর বাধ ভেঙে গেছে। এখন আর আমরা ধৈর্য্য ধরতে পারছি না। তাই আমরা প্রশাসনের কাছে আসছি। প্রশাসন আমাদের একটা উপায় করুক।

জাহানারা ইমাম হলের অফিস সহায়ক নাসরিন আক্তার বলেন, আমার স্বামী নাই। ২০১৮ সালে মারা গেছেন। আমার একটা মেয়ে আর একটা ছেলে। আমার জীবনটা কীভাবে চলবে? জাহানারা ইমাম হলে আছি সাত বছর। একটা স্থায়ীকরণের আশায় আছি এখনও। আমাদেরকে প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল যে আমাদের চাকরিটা স্থায়ী করা হবে। সাতটা বছর আমি অপেক্ষায় আছি আজ না কাল আমার চাকরিটা স্থায়ী হবে। আমাদের বাঁচার সুযোগ করে দিবেন ওনারা।

Advertisement

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা জানান এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের স্থায়ী চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু মাসে পর মাস গেলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। একই দাবিতে উপাচার্য বরাবর আবার চিঠি দিবেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ১৫০ জনের মতো দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

জানা যায়, দৈনিক ৩৩০ টাকা মজুরিতে কাজ করে আসছেন দৈনিক মজুরি ভিত্তিক কর্মচারীরা। তাদের বেশ কয়েকজন ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন। অথচ তাদের সঙ্গে যারা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে স্থায়ী চাকরি পেয়েছেন তাদের বেতন এখন প্রায় ২০ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার (চুক্তিভিত্তিক) রহিমা কানিজ বলেন, তাদের প্রতি আমাদেরও সহানুভূতি আছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো স্থায়ী চাকরির পদ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ঘোষণা করেন। তারা পদ না দিলে আমরা কিছুই করতে পারি না। পদের জন্য ইউজিসির কাছে আমরা দাবি জানিয়েছি। আশা করছি তারা পদ ঘোষণা করবেন।

Advertisement

মাহবুব সরদার/জেএস/জেআইএম