দেশজুড়ে

গাজীপুরে গ্রেফতার আতঙ্কে ঘর ছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীরা

আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ দলটির নেতাকর্মীদের ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন গাজীপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা।

Advertisement

এরইমধ্যে গাজীপুর জেলার পাঁচ থানায় দুইদিনে পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। প্রতিটি মামলায় করা হয়েছে বিস্ফোরক আইনে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে অন্তত পাঁচ শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীকে। আর গ্রেফতারও হয়েছেন বেশকিছু নেতাকর্মী।

গাজীপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শওকত হোসেন সরকার বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ বানচাল করতে এবং সেখানে যেন গাজীপুর থেকে কোনো নেতাকর্মী না যেতে পারে সেজন্য গাজীপুর মহানগরীতে পুলিশ নেতাকর্মীদের বাড়িবাড়ি তল্লাশি করছে। নজরদারি করা হচ্ছে দলীয় কার্যালয়গুলোতে। বিনা কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে। ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

তিনি বলেন, কাশিমপুর থানা বিএনপির সভাপতি আলী হোসেন ও থানা যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাহিন, সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান রাজুকে গত বুধবার বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

কোনাবাড়ি থানা বিএনপির সভাপতি রবিউল আলম রবি বলেন, বুধবার কোনাবাড়ি থানা যুবদলের সভাপতি আজিজুল ইসলামকে তার বাসা থেকে এবং পোস্টার লাগানোর সময় রনি ও মাসুদ নামে দুই যুবদল কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাদের পুরাতন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির গণসমাবেশের লিফলেট বিতরণকালে গত বুধবার স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের আট নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে গাছা থানা পুলিশ। ওইদিন বিকেল পৌনে তিনটায় গাজীপুর মহানগরের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইছর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন, গাছা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার ইদ্রিস আলী, নগরীর ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি রমজান আলী, সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি হাসিবুর রহমান সুমন, গাছা থানা যুবদলের সদস্য এমদাদ খান, সেলিম মিয়া, মো. আনোয়ার হোসেন ও গাছা থানা বিএনপির সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন।

তবে, এ বিষয়ে গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইব্রাহীম হোসেন বলেন, লিফলেট নয়, নাশকতার প্রস্তুতিকালে বিএনপি ও যুবদলের আট নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান বলেন, বিস্ফোরণ সংক্রান্ত কোনো ঘটনায় ঘটেনি। অথচ বিএনপির শত শত নেতাকর্মীদের নামে একের পর এক মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে। মূলত ১০ ডিসেম্বরের বিএনপির গণসমাবেশকে বানচাল করতে পুলিশকে দিয়ে এসব মামলা করানো হচ্ছে। মামলা ও ধরপাকড় করে গণসমাবেশ বন্ধ করা যাবে না।

এদিকে, জয়দেবপুর থানার ওসি মাহতাব উদ্দিন বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে।

এ বিষয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (মিডিয়া) চৌধুরী মো. তানভীর বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলার ভিত্তিতে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ বিনা কারণে কাউকে গ্রেফতার করছে না। হয়তো কারও বিরুদ্ধে পুরাতন বা নতুন মামলা রয়েছে। সেই মামলার ভিত্তিতেই পুলিশ গ্রেফতার করছে।

আমিনুল ইসলাম/এমআরআর/জেআইএম