শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে টিউবওয়েল। তার সঙ্গে ঝুলছে তালাও। মানিকগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে এখন এভাবেই টিউবওয়েল চুরি ঠেকানোর অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
Advertisement
পাটুরিয়া ফেরিঘাটের সঙ্গেই হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী রানা শিকদারের বাড়ি। বাড়ির সঙ্গেই তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। দোকানের পাশে ছিল একটি টিউবওয়েল। স্থানীয় ব্যবসায়ী আর আশপাশের মানুষ পানি নিতেন এই টিউবওয়েল থেকে। গত ২৩ নভেম্বর রাতে তার টিউবওয়েলটির ওপরের অংশ খুলে নিয়ে যায় চোর। পড়ে থাকে শুধু পাইপ। এরপর নতুন করে টিউবওয়েলের মাথা স্থাপন করেছেন রানা। কিন্তু পুনরায় চুরি ঠেকাতে বিশেষ কায়দায় শিকল ও তালা দিয়ে টিউবওয়েল বেঁধে রেখেছেন তিনি।
রানা শিকদার জানান, হঠাৎ করেই পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় চুরি বেড়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যানবাহনের পাশাপাশি ঘাটে মানুষের আনাগোনা কমেছে। তাছাড়া বিআইডব্লিউটিএর সড়কবাতিগুলোও বিকল হয়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে। এই সুযোগটিই কাজে লাগাচ্ছে চোরচক্র।
তিনি আরও বলেন, তার টিউবওয়েল ছাড়াও ঘাট এলাকার আরও বেশ কয়েকটি টিউবওয়েল চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরি হয়েছে বিভিন্ন দোকানপাটেও।
Advertisement
রানা শিকদারের তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি পাটুরিয়া ১ নম্বর ঘাটের আল্লাহর দান বালু ভান্ডার থেকে টিউবওয়েল চুরি হয়। ৪ নম্বর ঘাটের উত্তম পালের বাড়ির টিউবওয়েলটিও চুরি হয়েছে। নালী বাজারের এক পানবিক্রেতার বাড়ি থেকে টিউবওয়েল চুরি করে নিয়ে গেছে চোর। পাটুরিয়া ট্রাক টার্মিনালের টিউবওয়েলেরও হ্যান্ডেল (হাতল) চুরি হয় কয়েকদিন আগে। সপ্তাহখানেক আগে চুরি হয় বিআইডব্লিউটিএর পাবলিক টয়লেটের পানি তোলার মোটর।
৩ ও ৪ নম্বর ফেরিঘাটের মাঝামাঝিতে গাজী টায়ারের একটি সাইনবোর্ডের দুটি বড় লোহার পিলার কেটে নিয়ে যায় চোরচক্র। কয়েকটি দোকানের টিন কেটে মালামাল চুরি করে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
একের পর এক চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন ঘাট এলাকার ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। অনেকেই ধারণা করছেন, পেশাদার চোর ছাড়াও এলাকার মাদকসেবীরা এই চুরির সঙ্গে জড়িত। নেশার টাকা জোগাড় করতে এসব চুরি হচ্ছে বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ-নূর এ আলম বলেন, পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় দু-একটি বিচ্ছিন্ন চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে বেশিরভাগ ঘটনাতেই ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করেননি।
Advertisement
তিনি বলেন, চোরচক্রটি ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। চুরি ঠেকাতে রাতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
বি.এম খোরশেদ/এসআর