পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতকে ১৯৯৮ সালে পর্যটন নগরী হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। তারপর থেকেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ভ্রমণপিপাসুর কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই সৈকত। যে কারণে সাগরকন্যা হিসেবে খ্যাতি লাভ করতে থাকে বঙ্গোপসাগরের তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা এই নগরী।
Advertisement
তবে পর্যটন নগরী ঘোষণা হওয়ার পর থেকে পর্যটকদের আগমনের যে সংখ্যা ছিল তা কয়েকগুণ বেড়েছে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে। পর্যটক বাড়ার সঙ্গে কুয়াকাটায় ছোট-বড় বিনিয়োগও বেড়েছে।
বছরের সাধারণত নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত সময়কে পর্যটন মৌসুম বিবেচনা করা হলেও গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে পর্যটকদের ঢল নামে কুয়াকাটায়। মৌসুমে যে পর্যটকের আগমন ঘটে তার কয়েকগুণ বেশি পর্যটক এরইমধ্যে কুয়াকাটায় এসেছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, কুয়াকাটায় দুই-তিনদিন সময় নিয়ে ভ্রমণে এলেও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা বা বিনোদন স্পট না থাকায় একদিন পরই পর্যটকদের ফিরে যেতে হয়। এ কারণে কুয়াকাটায় নতুন নতুন পর্যটন স্পট নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন আগত দর্শনার্থীরা।
Advertisement
ফরিদপুর থেকে আসা পর্যটক সাইদুর রহমান সাঈদ জাগো নিউজকে বলেন, আমি এই প্রথম পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছি। কিন্তু কক্সবাজারে যাওয়া হয়েছে কয়েকবার। কুয়াকাটায় এসে একদিনে সবকিছু দেখা হয়েছে, এখন চলে যেতে হবে। কুয়াকাটায় যদি আরও নান্দনিক হোটেল-মোটেল বা বিনোদন স্পট তৈরি করা হয় তাহলে আরও পর্যটন বাড়বে।
কুয়াকাটার পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, হঠাৎ কয়েকগুণ পর্যটক বাড়ায় আবাসিক হোটেল-মোটেলগুলোতে জায়গা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে সেই সংকট কাটিয়ে উঠতে বিনিয়োগকারীদের আগমনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তারা।
পদ্মা সেতুর সুফল ভোগ করতে গত আগস্ট মাসে কুয়াকাটায় জমি কেনে মিয়াদ ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ইব্রাহিম ওয়াহিদ জাগো নিউজকে বলেন, আসলে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পরে কুয়াকাটায় যে একটি আমূল পরিবর্তন এসেছে সে লক্ষ্যেই আমরা একটি হোটেল তৈরির কাজে হাত দিয়েছি। এরইমধ্যে ৪০ শতাংশ কাজ শেষ করেছি। আমাদের মতো অনেক বিনিয়োগকারী এখন কুয়াকাটায় আসছেন।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার জাগো নিউজকে বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ার পরে কুয়াকাটার সঙ্গে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের যোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে। যে কারণে পর্যটকদের আগমনও বাড়তে শুরু করে। সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে অনেক সময় হোটেলের বাইরে কাছাকাছি বাসাবাড়িতেও মাঝে মাঝে পর্যটকদের আশ্রয় দিতে হয়।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের আগমনের পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারী বাড়ার কারণে দ্রুত কুয়াকাটার একটি বড় পরিবর্তন আসবে এটা বলতে পারি।
পটুয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান হাফিজ জাগো নিউজকে বলেন, শেখ হাসিনা দক্ষিণের মাটিকে ভালোবাসায় পদ্মা সেতুসহ বেশকিছু উন্নয়নের কাজ দৃশ্যমান। তার সবচেয়ে বেশি সুফল কুয়াকাটায়। দেশের বড় বড় বিনিয়োগকারী আজ কুয়াকাটায় আসছেন। এটি বড় একটি সুখবর বলবো। তবে যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেগুলো আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সমাধান করবো। কুয়াকাটা একটি আন্তর্জাতিক মানের সৈকতে পরিণত হবে বলে আশা করি।
এমআরআর/এএসএম