শাহজাহান খান, পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। পটুয়াখালী পৌর শহরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীও ছিলেন। বরিশালে বিএনপির গণসমাবেশ অংশ নিতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ৪ নভেম্বর সন্ধ্যার পর মোটরসাইকেলে যাত্রা করেছিলেন তিনি। শাহজাহান খানের কাঁধে ছিল নাতনির স্কুলব্যাগ, তাতেই তার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আর ওষুধ ছিল। তবে সেদিন তার আর বরিশাল যাওয়া হয়নি।
Advertisement
পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের তেলিখালী এলাকায় হামলার শিকার হন শাহজাহান খান। চিকিৎসা নিয়ে পৌর শহরের সবুজবাগের বাসায় ফিরে এলেও আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। হামলার ২৪ দিন পর অবশেষে ২৮ নভেম্বর সকালে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
দুপুরে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শ্নেহাংসু সরকার কুট্টি জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পটুয়াখালী পুরাতন আদালত মাঠে জানাজা শেষে তার দাফন করা হবে।
এদিকে রোববার রাতে শাহজাহান খানের বড় ছেলে পটুয়াখালী জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শিপলু খান তার ফেসবুকে প্রোফাইলে বাবার অসুস্থতা নিয়ে সেই দিনের স্মৃতিচারণ করেছেন। পোস্ট করেছেন বেশ কিছু ছবিও।
Advertisement
শিপলু খান লিখেছেন, ‘সেদিন বলেছিলে আপু তোমার একটা স্কুল ব্যাগ দাও। কতটা আনন্দে তোমার নাতনির ব্যাগ কাঁধে নিয়ে রওনা দিয়েছিলে বরিশালের গণ সমাবেশের উদ্দেশ্যে। আজও তুমি তার ভার বহন করছো। কী অপরাধ ছিল আমার বাবার? যার জন্যে তাকে এত কষ্ট সহ্য করতে হচ্ছে। তোমার আঘাত আমাদের কতকিছু শিখাচ্ছে।’
শাহজাহান খানের মৃত্যুর খবরে জেলায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দল মত নির্বিশেষে সবাই শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করছেন। পাশাপাশি শাহজাহান খানের মত একজন প্রবীণ রাজনৈতিক নেতাকে মারধর কারার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে অনেকেই এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির নেতা অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটন বলেন, শাহজাহান খান কোনো দিন প্রতিহিংসার রাজনীতি করেননি। তার মতো একজনকে এভাবে মারধর করা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
শাহজাহান খানের বড় ছেলে শিপলু খান বলেন, আমার বাবা তার রাজনৈতিক জীবনে কাউকে কোনো দিন কটুকথা বলেননি। রাজনীতিতে বিরোধিতা থাকতে পারে কিন্তু এভাবে তার চলে যাওয়া মেনে নেওয়া যায় না।
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, ‘শাহজাহান খানের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
আব্দুস সালাম আরিফ/এসজে/এএসএম