সারাদেশে চলমান নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও চাঁদপুরের যাত্রীরা। রোববার (২৭ নভেম্বর) সকাল থেকেই লঞ্চশূন্য ছিল সদরঘাট। ফলে যাত্রীরা এসে ফিরে গেছেন। অনেকেই আবার লঞ্চ জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘাটে অপেক্ষা করছেন।
Advertisement
এদিন সন্ধ্যায় সরেজমিনে সদরঘাট ঘুরে দেখা যায়, লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড়। দক্ষিণাঞ্চলগামী ঘাটে যাত্রীরা এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ কেউ লঞ্চ ছাড়ার অপেক্ষায় ঘাটে অপেক্ষা করছেন। এছাড়া যাত্রীদের ভোগান্তি ও তাদের তীব্র ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে। পাশাপাশি পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
যাত্রীরা জানান, পূর্ব ঘোষণা না দেওয়ার কারণে তারা ঘাটে এসে ফিরে যাচ্ছেন। রাত ১২টার পর ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়ায় অনেকে জানেন না। ফলে সকাল থেকে ঘাটে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। অনেকেই লঞ্চের জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘাটে অপেক্ষা করেছেন।
লাবনী নামে বরিশালগামী এক যাত্রী বলেন, আমরা গত কয়েকদিন পিজি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আজ সকালে হাসপাতাল থেকে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘাটে এসে দেখি লঞ্চ বন্ধ। সকাল থেকে সন্ধ্যা হয়ে গেছে আমরা ঘাটে আছি। ঢাকায় কোথাও যাওয়ার জায়গাও নেই।
Advertisement
রাজধানীর চিটাগাং রোড থেকে এসেছেন জাকির হোসেন। তিনি ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, অনেক কষ্ট করে যানজট পেরিয়ে লঞ্চঘাটে এসেছি। এসে দেখি লঞ্চ নেই, ঘাট ফাঁকা। শনিবার রাত ১২টার পর তারা লঞ্চ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। মানুষ কি রাত জেগে খবর দেখবে? আগে জানলে এত দূর থেকে কষ্ট করে ঘাটে আসতাম না। এখন উপায় না পেয়ে বাসে করে যেতে হবে।
এ বিষয়ে নৌযান শ্রমিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মো. খলিলুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এখনো কোনো বৈঠক হয়নি। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিক কর্মবিরতি চলবে। আমাদের দাবি যদি আদায় হয়, আমরা কালকেই (সোমবার) কাজে ফিরবো। দাবি আদায় না হলে আমাদের সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
লঞ্চ মালিক সমিতির সেক্রেটারি সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জাগো নিউজকে বলেন, নৌযান শ্রমিকদের সঙ্গে আমরা সোমবার দুপুর একটায় বৈঠকে বসবো। সেখানে তাদের দাবির বিষয়ে আলোচনা হবে। এরপর পরবর্তীসময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নৌযান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ও কর্মক্ষেত্রে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণসহ ১০ দফা দাবিতে শনিবার দিবাগত রাত থেকে সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করছেন নৌযান শ্রমিকরা। কর্মবিরতির কারণে রোববার সকাল থেকে সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ ছেড়ে যায়নি।
Advertisement
শান্ত রায়হান/আরএডি/জিকেএস