দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া। বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা দ্বীপটি ঘিরে জাতীয় সংসদের ২৭৩ নম্বর আসন নোয়াখালী-৬। জীবনধারণের মতোই দ্বীপের রাজনীতির গতিপথও যেন আলাদা। পর্যটনে অপার সম্ভাবনাময়ী এই দ্বীপের একক নিয়ন্ত্রণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর। ব্যবসা-বাণিজ্য-রাজনীতি সব চলে তার ইশারায়। তিনিই ঠিক করেন কে হবেন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান। সাবেক এ এমপির কব্জায় বিএনপির অনেক নেতাও। তাদের রেখেছেন বিভিন্ন দায়িত্বে। বিভিন্ন সময় এখানে জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি হয়েছে। প্রভাবে মোহাম্মদ আলী এগিয়ে থাকলেও বিএনপির ফজলুল আজিমের জনপ্রিয়তা বেশি।
Advertisement
সরেজমিনে এলাকা ঘুরে জানা যায়, হাতিয়ায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা অন্য দলের তেমন সাংগঠনিক শক্তি নেই। সবার মুখে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর নাম। কাগজে-কলমে এমপি তার স্ত্রী বেগম আয়েশা ফেরদাউস। কিন্তু সব নিয়ন্ত্রণ মোহাম্মদ আলীর কাছে।
স্থানীয়রা জানান, সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী এখানকার রাজনীতি, অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন। বিরোধীদল বলতে এখানে এন্টি মোহাম্মদ আলী গ্রুপ। প্রকাশ্যে কেউ আলীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন না। আওয়ামী লীগেরই অনেককে হামলা মামলা দিয়ে নাস্তানাবুদ করেছেন এই নেতা। আবার বিএনপিসহ অন্য দলের অনেক নেতাও তার পকেটে। হাতিয়ায় বিএনপির কমিটি ও ভালো কার্যক্রম আছে বলে নেতারা দাবি করলেও বাস্তবতা ভিন্ন। সাবেক এমপি ফজলুল আজিম জনপ্রিয়তায় মোহাম্মদ আলীর চেয়ে এগিয়ে।
জানা যায়, মোহাম্মদ আলী ছাত্রজীবনে বামপন্থি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে যোগ দেন বিএনপির যুব সংগঠন- যুবদলে। এরপর জাতীয় পার্টিতে। কালের পরিক্রমায় তিনি হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বনে যান। ১৯৮৬, ৮৮, ৯১ ও ৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসন থেকে নির্বাচন করেন মোহাম্মদ আলী। প্রথম দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিলেও মনোনয়ন না পেয়ে ২০০১ সালে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে এমপি হন। পরে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেলেও ঋণখেলাপি হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউসও স্বতন্ত্র নির্বাচন করে হেরে যান। পরে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে আয়েশা ফেরদাউস এমপি হন।
Advertisement
নির্বাচনী এলাকার বয়ারচরের চেয়ারম্যান ঘাটে কথা হয় অর্ধডজন ভোটারের সঙ্গে। অধিকাংশই নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি। তারা জাগো নিউজকে জানান, এখানে মোহাম্মদ আলী নিজস্ব দলবল দিয়েই এলাকা চালান। হাট-ঘাট, বালু, পরিবহন, মাছ ধরার ট্রলারসহ যাবতীয় ব্যবসা-বাণিজ্য এক হাতে নিয়ন্ত্রণ করেন। আওয়ামী লীগের কেউ এখানে বাধা হলে তাকে একঘরে বা এলাকা ছাড়া করেন। তার প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী, তার ব্যবসার বিরুদ্ধে ব্যবসা করলে চলে মামলা-হামলা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সুরুজ মিয়া (ছদ্মনাম) বলেন, ‘সব ব্যবসাই নিয়ন্ত্রণ করেন মোহাম্মদ আলী। কোনটা বলবো? সব জায়গায় তার লোক আছে। ১০/১৫ হাজার করে বেতন দেন, ফোন করলেই চলে আসবে। এখানে বাক স্বাধীনতা নেই। ভালো নেতা তৈরি হয় না। সব তার নিয়ন্ত্রণে।’
‘এই দেখেন কী বিশাল এক সি-ট্রাক! এটা সকালে একবার হাতিয়া যায় আসে। এরপর সারাদিন বন্ধ থাকে। কারণ সুরক্ষিত ও নিরাপদ সি-ট্রাকে ভাড়া মাত্র ৯০ টাকা। আর এটা বন্ধ রেখে মোহাম্মদ আলীর ‘১২ আউলিয়া’ (ট্রলার বা নৌকা; যেটি অনিরাপদ ও ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী বহন করে) চালায়। সেটাতে ভাড়া ২৫০ টাকা। স্পিডবোটের ভাড়া ৫শ টাকা। এসবই তার ব্যবসা।’
স্থানীয় আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এই যে সারি সারি নৌকা দেখছেন সবই মাছ ধরার। এগুলোর অধিকাংশের মালিক মোহাম্মদ আলী। কিছু আছে অন্যদের। সবই মোহাম্মদ আলীর ইশারায় চলে। নিঝুম দ্বীপের বন উজাড় থেকে শুরু করে এমন অপকর্ম নেই আলী বা তার লোকদের দিয়ে হয় না। দল ও প্রশাসন সব তার কব্জায়। জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন দেন তিনি। পাস করানও তিনি।’
Advertisement
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও চানন্দি ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক এবং চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিরুল ইসলাম শামীম জাগো নিউজকে বলেন, ‘২০০৮ সাল থেকে আমার বিরুদ্ধে ৪০ এর ওপরে মামলা দিয়েছে। অনেকগুলোর চার্জশিট থেকে বাদ পড়েছি। এখন ১৭টি মামলা আমার বিরুদ্ধে চলমান। সম্পদ যা ছিল সব শেষ। আমরা তো জন্মগতভাবে আওয়ামী লীগ করি। কিন্তু আমরা হয়ে গেছি বিরোধী দল! কিছুদিন আগে নির্বাচন হলো ইউনিয়নে, আমি প্রার্থী হয়েছিলাম। অথচ নৌকা দিয়েছে একজন রাজাকারকে। বাকি ইতিহাস পুরো দেশবাসী জানে। ’
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও হরণি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুশফিক মোরশেদ বলেন, ‘দল বলতে ওনার (মোহাম্মদ আলী) কাছে কিছু নেই। ওনার আনুগত্য যে করতে পারবে, সেই সব। যিনি ওনার আনুগত্য করবেন না, তিনি যতই পুরোনো আওয়ামী লীগার হোন, তাকে জামায়াত-বিএনপি বানিয়ে ফেলবেন। আমরা সারাজীবন আওয়ামী লীগ করছি, আমাদের কোনো স্থান নেই। এমনকি ইউনিয়ন কমিটির সদস্যও রাখেননি আমাকে।
তিনি বলেন, ‘হাতিয়ায় কারও কোনো ব্যবসা নেই। সব ব্যবসা উনি (মোহাম্মদ আলী) নিজেই করেন। সব বাজার বিভিন্ন নামে ডাক নিয়ে ওনার লোকজন দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেন। ঘাট উনি নিয়ন্ত্রণ করেন। নৌকা, ট্রলারসহ ওনার বিভিন্ন নামে লোকজন দিয়ে চালায়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরাও ওনার বেতনভুক্ত কর্মচারী। জোর করে ওদের চেয়ারম্যান বানাইছে, তাদের বেতন দেয়।’
‘তমরউদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জীবনেও রাজনীতি করেননি। ওষুধ কোম্পানিতে ১৩ হাজার টাকা বেতনে চাকরি করতেন। তাকে এনে চেয়ারম্যান বানাইছে। তার কাজ শুধু স্বাক্ষর করা। একই অবস্থা সোনাদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানেরও। অথচ প্রকৃত আওয়ামী লীগার এবং জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্যকে মনোনয়ন দেয়নি। জাহাজমারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজ, উনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, উনি নৌকা পাইছেন। অথচ মোহাম্মদ আলী নৌকার বিরুদ্ধে ভোট করছেন। উনাকে জোর করে হারাই দিছে। ভোটের আগের রাতে উনার চিফ এজেন্টকে গ্রেফতার করাইছে। ভোটের সময় এসে ভীতিকর অবস্থা তৈরি করেন। একটা পুলিশও ওনার কথার বাইরে চলে না। সব অফিসার তার পক্ষে বা নীরব থাকেন।’ হর্নি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুশফিক মোরশেদ জাগো নিউজ বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে যাকে চেয়ারম্যান বানাইছেন, তিনি শিবির নেতা ছিলেন। মোহাম্মদ আলী আমাদের এলাকায় যেতে দেন না। কয়েকদিন আগেও দুটো মামলা দিয়েছেন। দুর্গম চরে ডাকাতদের মারামারিতে একজন মারা গেছে। সেই মামলায় আমার নাম দিয়েছেন। অথচ তখন আমি কুড়িগ্রামে ছিলাম। মোবাইল ট্র্যাক করলে পাওয়া যাবে।’
‘উনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি এমনভাবে সাজাইছেন, উনি দল ত্যাগ করলে সবাই ওনার সঙ্গেই যাবে, আওয়ামী লীগে থাকবে না। সব শাখা ও ইউনিয়নগুলোতেও একই অবস্থা।’ যোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতা মুশফিক মোরশেদ।
বিএনপিতে জনপ্রিয় ফজলুল আজিমভোটের বিশ্লেষণে দেখা যায়, নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনটিতে স্বাধীনতার পর থেকে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির অবস্থান ছিল প্রায় সমানে সমান। জাতীয় পার্টিরই নেতা ছিলেন মোহাম্মদ আলী। তার আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর জাতীয় পার্টি বিলুপ্তির পথে। ক্ষমতার প্রভাবে মোহাম্মদ আলী ও তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ এখন শক্ত প্রভাব বিস্তার করলেও ভোটে এগিয়ে বিএনপি। ১৯৯৬ ও ২০০৮ এর এমপি ফজলুল আজিম সারাদেশের মতো এখানেও বেশ সাড়া ফেলেছেন। সরকারবিরোধী স্বাভাবিক সেন্টিমেন্ট এবং মোহাম্মদ আলীর একক নিয়ন্ত্রণ থেকে বের হতে মরিয়া ভোটাররা ফজলুল আজিমকেই শক্ত বিকল্প ভাবছেন।
ইদানীং রাজনীতিতে ততটা সরব নন আজিম। এলাকায়ও যান কম। তার ছেলে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন এলাকার মানুষের সঙ্গে। তবে ব্যক্তিগতভাবে তিনি ও তার দল সুবিধাজনক অবস্থানে। ব্যবসায়ী আজিম স্থানীয় লোকদের কর্মসংস্থান ও আর্থিক সহযোগিতা করেন। পাশাপাশি আলীর প্রভাবমুক্ত হতেও তার পক্ষে বড় একটি অংশ।
নির্বাচন কমিশন বলছে, নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৫৮ হাজার ৮২০। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৩ হাজার ৮১৩, নারী ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ৭ জন।
হাতিয়ার বাসিন্দা আলাউদ্দিন (ছদ্মানাম) বলেন, ‘এখানে ভোট হবে আলী ও এন্টি আলী গ্রুপের। দলমত নির্বিশেষে একটা বড় পক্ষ আলী পরিবারকে ঠেকানোর জন্য মুখিয়ে আছে।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও হর্নি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুশফিক মোরশেদ দাবি করেন, ‘মানুষ ভয়ে কথা বলে না। কিন্তু সুযোগ পেলে ভোটে জবাব দিয়ে দেবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে উনি (মোহাম্মদ আলী বা তার স্ত্রী) এক লাখ ভোটে হারবেন।
মোহাম্মদ আলীর আশীর্বাদপুষ্ট বিএনপি-জামায়াত নেতারা
মোহাম্মদ আলীর হয়ে বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পরিষদ নিয়ন্ত্রণ করছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুল ইসলাম বাদশাহ। বর্তমানে তাকে সোনাদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। তিনি মোহাম্মদ আলীর সেকেন্ড ইন কমান্ড।
অপরদিকে তমরুদ্দি ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ করছেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও তমরুদ্দি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী আলা উদ্দিন বাবু।
সোনাদিয়া ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ করতেন স্থানীয় যুবদল নেতা ও গত নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী জোবায়ের। জোবায়ের সর্বশেষ দুই গ্রুপে সংঘর্ষে মারা যান।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ করছেন স্থানীয় বিএনপির সভাপতি ও গত নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী ইব্রাহীম।
মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে থেকে তার সহকারী হিসেবে কাজ করতেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী বখতিয়ার খলজি মুজিব। বর্তমানে তিনি সরকারি এই চাকরি ছেড়ে দিয়ে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
বুড়িরচর ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ করছেন বিএনপির সাবেক নেতা ফখরুল ইসলাম। তিনি মোহাম্মদ আলীর আশীর্বাদ নিয়ে গত ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জিয়া আলী মোবারক কল্লোলকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান হন।
আব্দুর রহিম রতন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে রাজনীতি করে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
যা বললেন মোহাম্মদ আলীমনোনয়নের বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘এখানে তো আমার স্ত্রী এমপি আছে। গত দুবারই সে এমপি। এখন নেত্রী আমাদের দুজনের মধ্যে যাকে ইচ্ছা দিতে পারেন। আমাদের দুজনের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। আমার এখানে সব ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে সংগঠন আছে।’
‘আপনাদের দুজনের বাইরে কাউকে দিলে কেমন হবে?’ জবাবে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমাদের দুজনের বাইরে কেউ মনোনয়ন চাইবেও না। ওখানে আমাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক এমপি অধ্যাপক ওয়ালী উল্যাহ সাহেব। ওনার এক ছেলে মেয়র, এক ছেলে উপজেলা চেয়ারম্যান, আমরা একসঙ্গে আছি। ওনারা আমার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। এখন ওনারা বরং আমার নাম প্রস্তাব করবেন।’
‘প্রকৃত আওয়ামী লীগাররা এখন দলে নেই, তাদের অবস্থা ভালো নেই’ এমন অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রকৃত আওয়ামী লীগাররাই এখন সক্রিয়। আগে যারা আওয়ামী লীগ করেছে, অধ্যাপক ওয়ালী উল্যাহ সাহেব ৫০ বছর আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদক। এখন ওনার দুই ছেলের একজন উপজেলা চেয়ারম্যান এবং অপরজন পৌর মেয়র। ভাতিজা দুজন দুই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। বাকিরাও সবাই বিভিন্ন পদে ও অবস্থানে ভালো আছে।
‘রাজনৈতিক পদ পাওয়া, জনপ্রতিনিধি হওয়া বা ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুতেই আপনার আশীর্বাদ থাকলে সবই সম্ভব, না থাকলে কোনো কিছুই সম্ভব নয়’ এমন অভিযোগ কি সত্য? জবাবে মোহাম্মদ আলী বলেন, না। যেহেতু আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, স্বাভাবিক কারণেই যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ সব সংগঠনের নেতারা আসেন। কাজ করেন। আমার তো একটা গুরুত্ব বা মতামত আছেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে।
বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ ফজলুল আজিমের সঙ্গে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও উত্তর মেলেনি। তবে দলটির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম জাগো নিউজকে বলেন, নোখায়ালী-৬ (হাতিয়া) থেকে কে প্রার্থী হবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সিনিয়র নেতারা ঠিক করবেন। তবে হাতিয়ায় আমাদের (বিএনপি) শক্তিশালী সংগঠন আছে। নির্বাচিত কমিটি আছে সেখানে। কার্যক্রম আছে বেশ ভালো।
এসইউজে/এএসএ/এএসএম