এ মাসের মাঝামাঝি ইস্তাম্বুলে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর উত্তর সিরিয়ার কুর্দি মিলিশিয়া অধ্যুষিত এলাকায় ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে তুরস্ক। এমন পরিস্থিতে আঙ্কারার এমন হামলা ওই অঞ্চলে অবস্থানকারী মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে বলে দাবি করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন।
Advertisement
আলজাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, স্থানীয় সময় বুধবার (২৩ নভেম্বর) সিরিয়ায় তুরস্কের এমন হামলা নিয়ে বিবৃতি দেন পেন্টাগনের মুখপাত্র ও মার্কিন এয়ার ফোর্স ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আঙ্কারার ধারাবাহিক ও ক্রমবর্ধমান এসব কর্মকাণ্ড ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো দীর্ঘদিন ধরে যে অগ্রগতি অর্জন করেছে, তা বিপন্ন করে তুলেছে।
প্যাট রাইডার বলেন, আইএসকে পরাজিত করতে ও দশ হাজারেরও বেশি আইএস বন্দীকে হেফাজতে রাখতে সিরিয়ায় স্থানীয় অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছেন মার্কিন সেনারা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তুরস্ক সিরিয়ায় যেভাবে বিমান হামলা চালাচ্ছে, তা সরাসরি মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
Advertisement
‘কুর্দি মিলিশিয়াদের নিয়ে তুরস্কের বৈধ নিরাপত্তা উদ্বেগকে আমরা যৌক্তিক মনে করি। তবে আইএসকে পরাজিত করার মিশনে মনোযোগ বজায় রাখতে ও এ মিশনে কাজ করা সামরিক কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শিগগিরই এ উত্তেজনা নিরসন করা প্রয়োজন।’
অন্যদিকে, একইদিনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, তুরস্ক কেবল সিরিয়ায় বিমান হামলা শুরু করেছে। ব্যাপক প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর পর তুরস্ক সেখানে স্থল অভিযান শুরু করবে।
১৩ নভেম্বর ইস্তাম্বুলের ইস্তিকলাল অ্যাভিনিউ এলাকায় বোমা বিস্ফোরণে ছয়জন মারা যান ও ৮১ জন আহত হন। ওই হামলায় কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) ও ওয়াইপিজিকে দায়ী করে তুরস্ক। ওই হামলার প্রতিশোধ নিতে গত সপ্তাহের শেষের দিকে সিরিয়ায় বিমান হামলা শুরু করে এরদোয়ান প্রশাসন।
আঙ্কারা এর আগে সিরিয়ায় পিকেকে হেডকোয়ার্টার লক্ষ্য করে সামরিক হামলা চালিয়েছিল। অবশ্য আগেই তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন পিকেকে’কে সন্ত্রাসীগোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
Advertisement
উত্তর সিরিয়ায় তুরস্কের অভিযানের কারণে মার্কিন সামরিক কর্মীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৯ সালে এই অঞ্চলে অবস্থানরত আমেরিকান সৈন্যরা তুরস্কের অবস্থান থেকে গোলাবর্ষণের শিকার হয়েছিল।
সেই সময়ে মার্কিন-মিত্র কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করেছিল তুরস্ক।
সিরিয়ায় প্রায় ৯০০ মার্কিন সৈন্য রয়েছেন। এসব মার্কিন সেনা প্রধানত দেশটির উত্তর-পূর্বে সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসের (এসডিএফ) সঙ্গে কাজ করেন। আবার এ গোষ্ঠীর নেতৃত্বেই ওয়াইপিজির কুর্দি যোদ্ধারা আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করে থাকেন।
সূত্র: আল জাজিরা
এসএএইচ