এক সময় বালুর আস্তরণ পড়া যমুনা নদীর চরের জমিগুলো প্রায় অনাবাদি পড়ে থাকতো। বালু মাটিতে তেমন কোনো ফসলের চাষ হতো না। তাই সেদিকে নজরও ছিল না কারো। কিন্তু সেই জমিতেই এখন ফলছে বাদাম। কয়েক বছর ধরে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় যমুনার চরে বালিয়াড়িতে পুরোদমে চলছে বাদামের চাষ।
Advertisement
স্থানীয়রা জানান, যুগ যুগ ধরে যমুনা নদীর ভাঙনে বসতভিটা ও আবাদি জমি বিলীন হয়ে যায়। ফলে পথে বসেন হাজার হাজার সমৃদ্ধ কৃষক। যমুনার বুকে জেগে উঠছে নতুন নতুন চর। এসব চর প্রথম দিকে কৃষকদের কোনো কাজেই আসতো না। কিন্তু প্রায় ১০ বছর আগে কয়েক জন চাষি চরের জমিতে স্বল্প পরিসরে বাদামের আবাদ শুরু করেন।
চরের কয়েক জন কৃষক জানান, জেগে ওঠা চরের উপরিভাগে বেশি পরিমাণ বালু থাকায় সেসব জমিতে অন্য কোনো ফসল হয় না। এ কারণে কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসে সেসব জমিতে বাদাম রোপণ করা হয়। কাঁচা বাদাম কেনার পর তার ছাল ছড়িয়ে ভেতরের কোয়া (বীজ) রোপণ করা হয়।
তবে এজন্য জমিতে বাড়তি কোনো খরচের প্রয়োজন পড়ে না। শুধু জমিতে লাঙল দিয়ে লাইন টেনে তার ভেতর এক ফুট দূরত্বে বাদামের বীজ ফেলে বালু মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হয়। এরপর আর কোনো কাজ নেই। আপনাতেই চারা গজিয়ে সেখানে বাদাম ফলে।
Advertisement
প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম চাষে তাদের খরচ হয় সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা। আর সেখানে ফলন পাওয়া যায় প্রায় ৭ মণ। গতবছর প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হয়েছে ৬ হাজার টাকা দরে।
সরেজমিন দেখা যায়, বৈশাখি, রাধানগর, নিউসারিয়াকান্দি, বতুয়ারভিটা ও পুকুরিয়া চরে প্রায় দুই হাজার হেক্টর বালুর আস্তরণ পড়া জমিতে কোনো ফসল হয়নি। এসব জমি বাদাম চাষের আওতায় আনা গেলে চরের হতদরিদ্র কৃষকদের মুখে হাসি ফোটানো সম্ভব। এ কাজে স্থানীয় কৃষি বিভাগকেই প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে। এমনই প্রত্যাশা ওই জনপদের কৃষকদের।
ধুনট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, বেলে-দোআঁশ মাটিতে বাদাম চাষ ভালো হয়। চরের মাটি এ ফসলের জন্য উপযোগী। চরে স্থানীয় জাতের বাদাম চাষ হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে প্রায় ৭০০ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে।
এসইউ/জিকেএস
Advertisement