দেশজুড়ে

উপহারের ঘরে ভাগ্যবদল ইমনের

ঘর-জমি কিছুই ছিল না মো. ইমন ব্যাপারীর (৩৭)। পরিবার নিয়ে তাই বিভিন্ন জায়গায় ভাড়ায় থাকতেন তিনি। তবে ভাগ্য বদলেছে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়ে। সে ঘরে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বসবাসের পাশাপাশি কবুতর লালন পালন করে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে সংসারে।

Advertisement

মো. ইমন ব্যাপারীর বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ভোজেশ্বর ইউনিয়নের পাচক এলাকায়। ওই গ্রামের আব্দুল মান্নান ব্যাপারীর ছেলে তিনি। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে পাঁচক এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩২টি ঘর নির্মাণ করা হয়। ওই প্রকল্পের নাম রাখা হয় ‘আদর্শ গ্রাম’। সেই আদর্শ গ্রামের ১৬ নম্বর ঘরটি পেয়েছেন ইমন ব্যাপারী।

ঘর পাওয়ার পর কবুতর, হাঁস-মুরগি পালন ও চটপটি, ফুচকা, ঝালমুড়ির দোকান করে স্বাবলম্বী তিনি। তার দেখাদেখিতে কবুতর ও হাঁস-মুরগি পালন শুরু করেছেন প্রকল্পের অনেকে।

ইমন ব্যাপারী জাগো নিউজকে বলেন, ছোটবেলা থেকে কবুতর ও হাঁস-মুরগি পালনের সখ ছিল। কিন্তু সংসারে অভাব-অনটনের কারণে পালন করতে পারিনি। তাছাড়া আমাদের জমি ও ঘর ছিল না। তাই বিয়ে করার পরও বিভিন্ন যায়গায় ভাড়া থাকতাম। শ্রমিকের কাজ করে যা টাকা পেতাম তা দিয়ে কোনো মতে সংসার চালাতাম।

Advertisement

তিনি বলেন, এখন শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেয়েছি। এখন ঘর ভাড়া দিতে হয় না। তাই কিছু টাকা আয় করে প্রথমে কবুতর, হাঁস-মুরগি পালন শুরু করি। পাশাপাশি চটপটি, ফুচকা ও ঝালমুড়ির দোকান করি। আলহামদুলিল্লাহ এগুলো করে আমি সফল।

তিনি আরও বলেন, আমার খোপে বেশিরভাগ কবুতর দেশি ও গিরিবাজ। মূলত দামি কবুতর থেকে দেশি ও গিরিবাজ পালন করে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এর পাশাপাশি দেশি হাঁস-মুরগি পালন করি। এদের রোগব্যাধি কম হয় ও বাচ্চা উৎপাদন খুব ভালো হয়। এদের বাচ্চাও সহজে বিক্রি করা যায়। দেশি জাতের কবুতর ও হাঁস-মুরগি পালন করে কম পুঁজিতে বেশি লাভ করা যায়।

আদর্শ গ্রামে ঘর পাওয়া অঞ্জলি দাস বলেন, ক্ষুদ্র আকারে কবুতর ও হাঁস-মুরগি পালন করে সফল ইমন। ইমনকে দেখে আমরাও কবুতর ও হাঁস-মুরগি পালন করছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল আমিন সিকদার বলেন, অসহায়দের প্রধানমন্ত্রী ঘর-জমি দিয়েছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রতিটি পরিবার তাদের ঘরের সামনে বৃক্ষরোপণ করেছে। পাশাপাশি একটি পরিবার কবুতর ও হাঁস-মুরগি পালন করে সফল হয়েছেন।

Advertisement

ভোজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শিকদার বলেন, আমার ইউনিয়নে যাদের ঘর-জমি ছিল না প্রধানমন্ত্রী তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় এনেছেন। পাশাপাশি ঘর পাওয়া পরিবারগুলো বৃক্ষরোপণ করেছেন। যা আদর্শ গ্রামটির সৌন্দর্য বেড়েছে। প্রতিটি পরিবার ক্ষুদ্র ব্যবসা করে সুখে শান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন। এর মধ্যে কবুতর ও হাঁস-মুরগি পালন করে বেশ ভালো আছেন ইমন।

জেলায় দুই হাজার ৫৩৬টি ও নড়িয়া উপজেলার ৪৯১টি আশ্রয়হীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. পারভেজ হাসান বলেন, যারা আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়েছেন তাদের কর্মসংস্থানের জন্য নানাবিধ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এরা ঘর পেয়েছে আত্মবিশ্বাস পেয়েছে। ঘর পাওয়ার পর তারা যেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে সে ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মো. ছগির হোসেন/আরএইচ/এএসএম