জাতীয়

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতেও সরকার থেমে নেই: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেসব জিনিস আমদানি করতে হয় যেমন ভোজ্যতেল, জ্বালানি তেল, গম, ভুট্টা- সেগুলোর দাম যেমন বেড়েছে তেমনি পরিবহন ব্যয়ও অনেকাংশে বেড়েছে। তারপরও সরকার থেমে নেই। সরকার এগুলো অতিরিক্ত মূল্যে কিনে দেশের জনগণকে দেওয়ার চেষ্টা করছে এবং উন্নয়ন অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

সোমবার (২১ নভেম্বর) সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২২ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। কোভিড-১৯ পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং একে কেন্দ্র করে স্যাংশনে (নিষেধাজ্ঞা) উন্নয়নের গতি কিছুটা শ্লথ হয়ে পড়েছে। কারণ এর ধাক্কায় বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও হিমশিম খাচ্ছে।

তিনি বলেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে আমরা যেন এই অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে চলতে পারি।

Advertisement

সরকারের টানা ১৪ বছরের শাসনামলে আজ বদলে যাওয়া এক বাংলাদেশ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ২০০৮ এর নির্বাচনে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার যে লক্ষ্য স্থির করেছিলাম, তা করতে পেরেছি। আমরা ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছি এবং সেই সময়ই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।

তিনি বলেন, জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালে জাতির পিতার ‘এদেশের মাটি ও মানুষ দিয়েই এদেশকে গড়ে তোলার’ প্রত্যয়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, আমিও বিশ্বাস করি এই মাটি ও মানুষ দিয়েই এদেশ যে গড়তে পারি, তা আমরা প্রমাণ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ থেকে ২০৪১  সালের বাংলাদেশ কেমন হবে তার পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনাও আমরা প্রণয়ন করেছি এবং তারই ভিত্তিতে আমাদের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার কাজ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এই ব-দ্বীপ অঞ্চলে প্রজন্মের পর পর প্রজন্ম যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে সেজন্য তার সরকার প্রণীত শতবর্ষমেয়াদি ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

Advertisement

এসময় দেশের প্রত্যেক গৃহহীনকে ঘর করে দেওয়ার পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ফলে বিশ্ববাসী আর অতীতের মতো বাংলাদেশকে অবহেলার চোখে দেখে না উল্লেখ করে চলমান বিশ্ব মন্দা মোকাবিলায় দেশের সব পতিত জমি কাজে লাগানোর মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান পুনের্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশে-বিদেশে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারীদের সম্মাননা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, অন্তত এটুকু কাজ আমি করেছি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কেউ আর অসম্মানের চোখে দেখবে না। আর কখনো কেউ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বা তাদের পরিবারকে অবহেলা করবে না। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবার যেন তাদের সম্মান নিয়ে চলতে পারে।

পিতা-মাতা-ভাইসহ স্বজন হারানোর ব্যথা বুকে নিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠায় তার সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে বলেও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

এসইউজে/ইএ/এমএস