কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের সোনাভরি শাখা নদী পারাপারে সেতু না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসী। নড়বড়ে একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে কষ্ট করে পারাপার হতে হয় আট গ্রামের বাসিন্দাদের। পণ্য পরিবহনেও গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। এছাড়া স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী ও শিশু-বৃদ্ধের চলাচলে নানান দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগ যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গেছে। এসব দেখার যেন কেউ নেই। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে ১৫ হাজার মানুষের দুর্ভোগ ও ভোগান্তি কমাতে একটি সেতু চায় স্থানীয়রা।
Advertisement
জানা গেছে, স্থানীয়দের উদ্যোগে সোনাভারি নদীর (শাখা) উপর প্রায় ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যর একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছে। সাঁকোটির অবস্থা খুবই নড়বড়ে। ফলে প্রতিদিন এ সাঁকোর ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন নানান বয়সী মানুষজন। উৎপাদিত কৃষিপণ্য আনা নেওয়ায় দ্বিগুণ ব্যয় হয়। অনেকে ঝুঁকি নিয়ে পণ্য, মালামাল মাথায় করে পার হচ্ছেন। এতে প্রতিদিন ঘটে ছোট বড় নানান দুর্ঘটনা।
কান্দাপাড়া গ্রামের কৃষক মো. আসলাম হোসেন বলেন, আগে এই সাঁকোটিও ছিল না। আমরা নিজেদের উদ্যোগ ও স্বেচ্ছাশ্রমে এই বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করেছি। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে মানুষ খুব কষ্ট এ পথে যাতায়াত করছেন। মানুষের দুঃখের যেনো শেষ নেই। আমরা এখানে একটি সেতু চাই।
ব্যবসায়ী মো. ওসমান গনি বলেন, বাঁশের এ সাঁকো দিয়ে এ অঞ্চলের বয়স্ক মানুষ, স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী ও রোগীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। নিরুপায় হয়ে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন। অনেক সময় সাঁকোর খুঁটি ও মাচা ভেঙে পড়ে ঘটে নানা দুর্ঘটনা।
Advertisement
শিক্ষার্থী মো. মিন্টু মিয়া বলেন, এই সাঁকোতে উঠলেই মনে হয় যেন জীবন শেষ। আতঙ্ক নিয়ে আমার মতো ছোট বড় ভাইবোনেরা পারাপার হতে হচ্ছে। অথচ দেখেও না দেখার ভান করছে এখানকার জন প্রতিনিধিরা। আমরা দ্রুত এ দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে একটি সেতু চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ওই জায়গায় ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের বাঁশের সাঁকোর বদলে একটি সেতু নির্মাণ করা গেলে আশপাশের কান্দাপাড়া, চাক্তাবাড়ী, ফলুয়ারচর, ধনারচর নতুনগ্রাম, যাদুরচর নতুনগ্রাম, যাদুরচর চাক্তাবাড়ী, ঠনঠনিপাড়া, বালিয়ামারী গ্রামের হাজার মানুষের চলাচলের দুর্ভোগ দূর হবে।
যাদুরচর মডেল কলেজের প্রভাষক হাবিবুর রহমান বলেন, সারা বছর বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে এখানকার প্রায় আট গ্রামের মানুষের। বাঁশের সাঁকো টেকসই না হওয়ায় প্রায় দিনই ঘটে ছোট বড় দুর্ঘটনা। এছাড়া বন্যার সময় বাঁশের সাঁকোটিতে পারাপারের চাপ বেড়ে যায়। এতে বাঁশের খুঁটি, মাচা ভেঙে মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়।
রৌমারী উপজেলার প্রকৌশলী যুবায়েত হোসেন বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ উপজেলার ৩০টি ব্রিজের তালিকা দেওয়া আছে। এর মধ্যে কান্দাপাড়া এলাকায় একটি সেতু নির্মাণে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবভুক্ত (ডিপিপি) করা হয়েছে।
Advertisement
ফজলুল করিম ফারাজী/জেএস/জেআইএম