এবারের ফুটবল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শালীন ও ইউনিক হয়েছে। কোনো অশ্লীলতা ছিল না। সবচেয়ে বড় কথা হলো কোরআন থেকে তেলাওয়াত করা হয়েছে বিশ্বকাপের এই আসরে। ছোট্ট একটি আয়াতের উদ্ধৃতি দেন এক কাতারি তরুণ। তবে তিনি অন্যদের মতো স্বাভাবিক নন। শরীরের নিম্নাংশ নেই ২০ বছর বয়সী এই তরুণের। বিরল এক রোগ (কডাল রিগ্রেশন সিনড্রোম) নিয়ে এই অবস্থায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
Advertisement
গর্ভাবস্থায় তার এ শারীরিক ত্রুটি ধরা পড়ে। তখন অনেকেই তার মাকে গর্ভপাত করার পরামর্শ দেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। এ অবস্থায়ই তিনি সন্তানকে লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নেন। স্বামীকে বলেন, ‘সন্তানের নিম্নাংশ নেই তো কী হয়েছে, আমিই হবো তার বাম পা, তুমি হবে ডান পা।’
২০০২ সালের ৫ মে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এরপর নানা প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে আর বাবা-মায়ের সাপোর্টে তিনি এখন নিজের পরিচয়ে পরিচিত। একাধারে ইউটিউবার, মোটিভেশনাল স্পিকার, কাতার বিশ্বকাপের অ্যাম্বাসেডর। শুধু তাই নয়, শরীরের অর্ধাংশ না থাকার পরও স্কুবা ডাইভিং, স্কেটবোর্ডিং ও পবর্তারোহণে দক্ষ এই তরুণ।
এতক্ষণ যার কথা বললাম তার নাম ঘানিম আল মুফতাহ। বর্তমানে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে তার ফলোয়ার ৩ মিলিয়নের বেশি।
Advertisement
সবশেষ গতকালের ফুটবল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের নজর কেড়েছেন তিনি। বাঘা হলিউড অভিনেতা মরগান ফ্রিম্যানের এক প্রশ্নের জবাবে পবিত্র কোরআন থেকে একটি আয়াত পড়ে শোনান। যার অর্থ, ‘হে মানব, আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পারো। নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সে-ই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেজগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং সবকিছুর খবর রাখেন’ (সূরা হুজুরাত, আয়াত ১৩)।
ঘানিম দেখিয়ে দিলেন শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জীবনে চলার পথে কোনো বাধা হতে পারে না। যদি থাকে অদম্য মনোবল।
ইতিকথা, কাতার বিশ্বকাপ ইতিহাস হয়ে থাকবে কয়েকটি কারণে। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো একজন কৃষ্ণাঙ্গ ও আরেকজন শারীরিক প্রতিবন্ধীকে উদ্বোধনী মঞ্চে আনা।
সূত্র: গানিমআলমুফতাহ ডট ওআরজি
Advertisement
এসআর/এমএইচআর/জেআইএম