ধর্ম

যে পাথরে ৬ লক্ষ মানুষের পানির ব্যবস্থা

হজরত মুসা আলাইহিস সালাম তাঁর জাতির জন্য আল্লাহর নির্দেশে যে পাথরকে আঘাত করেছেন, তা কি সাধারণ পাথর ছিল নাকি বিশেষ কোনো পাথর ছিল। এ ব্যাপারে মুফাসসিরিনগণ বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন, যা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-ক. হজরত কাতাদাহ বর্ণনা করেন, পাথরটি ছিল তুর পাহাড়ে, বনি ইসরাইল তা সঙ্গে সঙ্গে রাখতো। যখন পানির প্রয়োজন হতো মুসা আলাইহিস সালাম স্বীয় লাঠি দ্বারা আঘাত করলে ১২টি নির্ঝর প্রবাহিত হতো এবং তা দিয়ে বনি ইসরাইলের ৬ লক্ষ মানুষ পানির প্রয়োজন পূরণ করতো। (তাফসিরে কবীর)খ. এটি ছিল জান্নাতি পাথর হজরত আদম আলাইহিস সালাম জান্নাত থেকে নিয়ে এসেছিলেন। আর লাঠিটিও ছিল জান্নাতি। এ দুটি নিজিস একের পর এক হাত বদল হতে হতে হজরত শোয়ায়েব আলাইহিস সালামের নিকট পৌঁছে। তিনি এগুলো হজরত মুসা আলাইহিস সালামকে দান করেন। (তাফসিরে মাজহারী)গ. আল্লামা জমখশরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এটি ছিল সাধারণ পাথর, যা মুসা আলাইহিস সালামের উপর আদেশ হয়েছিল যে কোনো পাথরের উপর আঘাত করার জন্য। মুসা আলাইহিস সালাম তাই করেছিলেন।ঘ. মুফাসসিরিনে কেরামগণ মুসা আলাইহিস সালামের একটি ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, মুসা আলাইহিস সালাম কখনো প্রকাশে গোসল করতেন না বা উলঙ্গ হতে না। যার ফলে তার কাওমের লোকেরা মনে করতো মুসা আলাইহিস সালাম একশিরা (অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া) রোগে আক্রান্ত। একবার তিনি গোসল করার জন্য প্রসবণে ঢুকেছেন। তার পরিধেয় কাপড় খুলে একটি সাধারণ পাথরের উপর রাখেন। তিনি গোসল করার পর পাথরের দিকে উদ্যত হতেই দেখেন, পাথরটি দ্রুত বেগে ছুটে চলেছে। মুসা আলাইহিস সালামও পাথরের পিছনে ছুটলেন। পাথরটি এলাকাবাসীর কাচারীর সামনে এসে থেমে যায়। যেখানে এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিল। তার কাওম তাঁকে দেখে অহেতুক ধারণা পাল্টে নিল।তার পর নির্দেশ হলো পাথরটি সংরক্ষণের জন্য। যা পরবর্তীতে কাজে আসবে। পাথরটি ছিল নরম এবং সাদা। প্রায় এক হাত পরিমান চতুর্ভূজ। প্রতিটি কোনে তিনটি উঁচু প্রান্ত ছিল। যেগুলো থেকে ১২টি নির্ঝর প্রবাহিত হতো।নিঃসন্দেহে এটি বনি ইসরাইলের জন্য আল্লাহর রহমত ও বিশেষ অনুগ্রহ। যে পাথরের কথা আল্লাহ তাআলা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুয়তের প্রমাণের সহায়ক হিসেবে উম্মাতে মুসলিমার জন্য কুরআনে প্রকাশ করেছেন। আল্লাহ তাআলা মুসলিম জাতিকে নবুয়তের মর্যাদা রক্ষা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/এমএস

Advertisement