দুয়ারে কড়া নাড়ছে কাতার ফুটবল বিশ্বকাপ। এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে চলছে ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনা। ময়মনসিংহেও তার ব্যতিক্রম নয়। খেলা শুরু হওয়ার আগে পছন্দের দলের পতাকা ও জার্সি কেনার ধুম পড়েছে। ক্রেতাদের চাপে খাওয়ারও সময় পাচ্ছেন না বিক্রেতারা।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহ মহানগরীর গাঙ্গিনারপাড়ের খেলাঘর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দোকানে দোকানে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। কেউ কিনছেন পতাকা, কেউ কিনছেন জার্সি, আবার অনেকে দোকানে দাঁড়িয়ে পছন্দের দলের জার্সি খুঁজছেন। আর ক্রেতার চাপে খাওয়া-নাওয়া বাদ দিয়ে জার্সি বিক্রিতে ব্যস্ত দোকানিরা।
মহানগরীর আকুয়া শিকদার বাড়ি এলাকা থেকে আর্জেন্টিনার পতাকা কিনতে এসেছেন মো. শারুফ নামের এক তরুণ। তিনি টাইলস মিস্ত্রির কাজ করেন। শারুফ বলেন, মেসির খেলা অনেক ভালো লাগে। তাই আর্জেন্টিনার সমর্থন করি। এখন আর্জেন্টিনার পতাকা কিনেছি। টাকা হলে নতুন একটা জার্সি কিনবো।
আর্জেন্টিনা সমর্থক নাদিম রহমান বলেন, নগরীর কাঁচিঝুলি থেকে আর্জেন্টিনার জার্সি কিনতে এসেছি। জার্সিতে মেসির নাম লিখিয়েছি। মেসির প্রতি ভালোবাসা থেকেই আর্জেন্টিনাকে সমর্থন করি। একটা পতাকা কেনা বাকি আছে। তবে দাম বেশি চায়।
Advertisement
জার্সি বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, শিশুদের জার্সি ১৩০-১৫০ টাকা। বড়দের জার্সি ২০০-২৫০ টাকা টাকা বিক্রি করছি। আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের জার্সি সমান তালে বিক্রি হচ্ছে। তবে, অন্য দলের জার্সির চাহিদা কম। প্রতিবারের চেয়ে এবার বিক্রি অনেক বেশি। একদিনে সর্ব্বোচ্চ ৮০-৯০টা জার্সি বিক্রি হয়।
নগরীর বিদ্যাময়ী স্কুল এলাকা থেকে ছেলের জন্য জার্সি কিনতে এসেছেন হারাধন সাহা। তিনি বলেন, আমার ছয় বছরের ছেলে ব্রাজিল সমর্থন করে। তাই ছেলের জন্য একটি জার্সি কিনেছি।
বাবা-মায়ের সঙ্গে আর্জেন্টিনার জার্সি কিনতে এসেছে ছয় বছরের শিশু নুর ইসলাম। সে জানায়, আমি মেসির খেলা পছন্দ করি। তাই আর্জেন্টিনার জার্সি কিনেছি। জার্সিতে আমার নাম লেখাবো।
নুর ইসলামের মা রুনা বেগম বলেন, ছেলে কয়েকদিন যাবত আর্জেন্টিনার জার্সি কিনে দিতে বলছে। তাই দোকানে চলে এলাম। আমি নিজেও আর্জেন্টিনার সমর্থন করি।
Advertisement
লক্ষ্মী খেলাঘরের বিক্রেতা জাহাঙ্গীর আলম রনি বলেন, দৈনিক ৫-৬ হাজার টাকার জার্সি বিক্রি করছি। বেশি বিক্রি হয় ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, পর্তুগাল ও স্পেনের পতাকা। বেচাকেনা এত বেশি যে খাওয়ারও সময় পাচ্ছি না।
এদিকে বিশ্বকাপের উন্মাদনাকে ঘিরে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পতাকা বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারাও। জাতীয় বিভিন্ন দিবস ও ফুটবল-ক্রিকেট বিশ্বকাপে বিভিন্ন জেলায় পতাকা বিক্রি করেন আরব আলী। তিনি বলেন, ১৮ বছর বছর যাবত দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে পতাকা বিক্রি করে আসছি। পতাকা বিক্রি করেই আমার সংসার চলে। আমার কাছে ছোট বড় মাঝারি পতাকা আছে। ছোট পতাকা ১০ টাকা ও বড়গুলো ৮০ থেকে ১০০ টাকা বিক্রি করি। এবার বেচাকেনা ভালো। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের পতাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে।
এসজে/জিকেএস