সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ রোধ ও পরিবেশ রক্ষায় জনসচেতনতা বাড়াতে কক্সবাজারে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ চালু করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন’।
Advertisement
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের সহযোগিতায় শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে সৈকতের বালিয়াড়ি ও আশপাশে থাকা পর্যটকরা প্লাস্টিক পণ্য জমা দিয়ে উপহার হিসেবে পাবেন বই, গাছের চারা ও পাটের তৈরি ব্যাগ।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মাসুম বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে সৈকতের লাবণী পয়েন্টে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান। প্রতি শুক্র ও শনিবার এবং সরকারি বন্ধের দিনে দুই মাস এই কার্যক্রম চলবে।
Advertisement
উদ্বোধনের সময় কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামান, কক্সবাজার প্রেস ক্লাবের সেক্রেটারি মুজিবুল ইসলাম ও বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের বোর্ড সদস্য জামাল উদ্দিনসহ প্রশাসন ও বিচ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পর্যটকরা প্লাস্টিক পণ্য জমা দিয়ে উপহার সংগ্রহ করতে পারবেন। লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে এ কার্যক্রম চলমান থাকবে ১৭ নভেম্বর থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতি শুক্র ও শনিবার এবং অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কার্যক্রম চলবে।
আয়োজক সংস্থা জানায়, বর্তমানে প্লাস্টিক দূষণ বিশ্বে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মানবজাতি, উদ্ভিদকূল, জলজপ্রাণী ও দ্বীপ অঞ্চলের প্রাণীরা প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। খাল, বিল, নদী এমনকী সাগরের দূষণের অন্যতম কারণ পলিথিন ও প্লাস্টিক। প্রতিনিয়ত অতিরিক্ত প্লাস্টিক পদার্থের অপব্যবহার দূষণের মাত্রা বাড়াচ্ছে।
পরিবেশবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘আর্থ ডে নেটওয়ার্ক’ এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিশ্বে প্লাস্টিক দূষণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ রয়েছে ১০ নম্বরে। প্লাস্টিক দূষণের ফলে প্রতি বছর ১০ লাখ সামুদ্রিক পাখি এবং এক লাখ সামুদ্রিক প্রাণী মারা যায়।
Advertisement
বাতাস, পানি কিংবা মাটি বাঁচাতে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচে।ছ বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন।
বিচ ও লাইফগার্ড কর্মীরা জানান, কক্সবাজার সৈকতে ঘুরতে গিয়ে প্লাস্টিকের বোতল, প্যাকেট ও পলিথিন বর্জ্য এদিক-সেদিক ফেলে রাখেন পর্যটকরা। জোয়ারে সেগুলো ভেসে সাগরে গিয়ে পড়ে। সৈকত ও সমুদ্র দূষণ থেকে পর্যটকদের বিরত রাখতে মাইকিং করা হলেও তা কোনো কাজে আসে না। কেউ নির্দেশনা মানেন না।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আবু সুফিয়ান বলেন, আমরা চাই সৈকত পরিচ্ছন্ন থাকুক। আমাদের প্রচেষ্টার সঙ্গে পরিবেশ দূষণ রোধে বিদ্যানন্দের এই উদ্যোগ খুবই যুগান্তকারী।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুজ্জামান বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশও পরিবেশ রক্ষায় সবসময় সহযোগী। আমরা আমাদের মতো প্রচারণা সচল রাখবো।
সায়ীদ আলমগীর/এসআর