মাদারীপুরে শুধুমাত্র ডোপ টেস্টের কিট সংকটে আটকে আছে পাঁচ হাজারের বেশি ড্রাইভিং লাইসেন্স। লাইসেন্স প্রত্যাশীরা গত দেড় মাস ধরে বিআরটিএ অফিস আর হাসপাতালে গিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। বরং ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।
Advertisement
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পাঁচ বছর মেয়াদি পেশাদার লাইসেন্সের জন্য সরকারি ফি এক হাজার ৬৭৯ টাকা। আর ১০ বছর মেয়াদি অপেশাদার লাইসেন্সের জন্য সরকারকে দিতে হয় দুই হাজার ৫৪২ টাকা। মাসে তিনশরও বেশি নতুন লাইসেন্সের জন্য আবেদন পড়ে এ অফিসে। পেশাদার লাইসেন্স পেতে ডোপ টেস্টের নেগেটিভ সনদ জমা দেওয়ার নিয়ম চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে চালু করে মন্ত্রণালয়। সে থেকে ভোগান্তিতে পড়েন চালকরা।
রাজৈর উপজেলার আনোয়ার শেখ বলেন, ঢাকাতে ভাড়ায় সিএনজি চালাই। লাইসেন্সের জন্য মাদারীপুর বিআরটিএ অফিসে আসি। এখান থেকে আমাকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। তিনবার এসেও কিট না থাকায় জমা দিতে পারেনি ডোপ পরীক্ষার কাগজ।
শিবচর উপজেলার অরবিন্দু মণ্ডল বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে পিকআপ চালিয়ে সংসার চালাই। ডোপ টেস্টের অভাবে লাইসেন্স না পাওয়ায় সড়কে প্রায়ই পুলিশের হয়রানি শিকার হতে হচ্ছে।
Advertisement
শরীয়তপুরের চন্দ্রপুর এলাকার মাহবুব খান বলেন, প্রথমে আমি শরীয়তপুর যাই। পরে মাদারীপুরে আসি। এরপর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলেও একই সমস্যায় পড়ি। কোনো অবস্থাতেই ডোপ টেস্ট করাতে পারিনি।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট (ল্যাব) মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রায় দুই মাস কিট সরবরাহ না থাকায় ডোপ টেস্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। বার বার তাগিদ দিলেও কিট পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন টেস্টের জন্য পাঁচজন, সাতজন, ১০ জন করে আসেন। কিট কবে আসবে বলতে পারছি না।
সিভিল সার্জন ডা. মুনীর আহমদ খান বলেন, ডোপ টেস্টের মাধ্যমে আমরা তিন রকমের মাদক আসক্তির পরীক্ষা করে থাকি। লাইসেন্সের জন্য আর সরকারি চাকরির জন্যও এ টেস্ট বাধ্যতামূলক। তাই এর চাহিদাও অনেক বেশি। গত চার মাসে অনেক পরীক্ষা করা হয়েছে। আমরা কিটের জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। দু’একদিনের মধ্যে এর সমাধান হবে।
মাদারীপুর বিআরটিএ অফিসের পরিদর্শক (ইঞ্জিন) রাসেল আহম্মেদ বলেন, পাঁচ হাজারেরও বেশি লাইসেন্স আটকে রয়েছে। ডোপ টেস্টের সার্টিফিকেট ছাড়া কোনো অবস্থাতেই এ লাইসেন্স দেওয়া যাবে না।
Advertisement
আরএইচ/এএসএম