বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী যাদের ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর বা টিআইএন রয়েছে তাদের জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। তবে রিটার্ন দাখিল করলেই যে আয়কর দিতে হবে তা নয়। কারো আয় যদি করযোগ্য না হয় তাহলে কর দেওয়ার প্রয়োজন নেই, শুধু রিটার্ন জমা দিলেই হবে।
Advertisement
সাধারণত প্রতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই পাঁচ মাস জরিমানা ছাড়া বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া যায়। ৩০ নভেম্বর দেশে আয়কর দিবস হিসেবে পালিত হয়। এদিনই ব্যক্তি করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমার শেষ তারিখ। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত আয়কর মেলায় করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।
চাইলে ঘরে বসেই খুব সহজে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। আয়কর অফিসে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার ঝামেলায় পড়তে হবে না। এছাড়াও ই-রিটার্ন থাকার অনেক সুবিধা রয়েছে। এটা দিয়ে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন, ই-পেমেন্ট করতে পারবেন। এমনকি ঘরে বসেই সনদ, আয়কর রিটার্নের কপি নেওয়া যাবে এবং রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানোর আবেদন করার সুযোগ রয়েছে অনলাইনে।
চলুন দেখে নেওয়া যাক অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার নিয়ম- >> অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে প্রথমে etaxnbr.gov.bd লিঙ্ক বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
Advertisement
>> এবার এখান থেকে ই-রিটার্ন অপশন সিলেক্ট করুন।
>> এবার এখানে থাকা ‘গাইডলাইন’ অপশনে গিয়ে গাইডলাইনগুলো ভালোভাবে পড়ে নিন।
>> আগে থেকেই অ্যাকাউন্ট করা থাকলে সেটি লগ ইন করুন। না থাকলে রেজিস্ট্রেশন অপশনে ক্লিক করে অ্যাকাউন্ট করে নিন।
>> আপনার টিন নম্বর, মোবাইল নম্বর ও একটি ক্যাপচা থাকবে সঠিকভাবে দিয়ে ভেরিফাই অপশনে ক্লিক করে দিন।
Advertisement
>> আপনার দেওয়া ফোন নম্বরে যে ওটিপি কোড যাবে সেটি এবার বসিয়ে একটি নতুন পাসওয়ার্ড দিয়ে দিন। নতুন পাসওয়ার্ডটি আবার দিয়ে সাবমিট করুন।
>> এরপর লগইন করলেই একটি ইন্টারফেস পাবেন। যেখানে আপনার নাম ঠিকানাসহ বিভিন্ন তথ্য দিয়ে পূরণ করে সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ দিলেই একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে।
>> এখন নিজের টিআইএন এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে যে কোনো সময় যে কোনো জায়গা থেকে অ্যাকাউন্ট সাইন ইন করতে পারবেন।
>> নিবন্ধন হয়ে গেলে সাইন-ইন করুন এবং বামে উপরে থাকা রিটার্ন সাবমিশন অপশনে গেলেই একটি ফরম আসবে। আপনার সব তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করুন।
>> এভাবে পরের স্টেপগুলোতে আসা ফরমগুলো পূরণ করুন। আপনার ইনকাম সোর্সগুলো সঠিকভাবে বাছাই করুন বা লিখে দিন। তাহলে পরের স্টেপে পাবেন ট্যাক্স অ্যান্ড পেমেন্ট নামের একটি পেজ। সেখানে আপনাকে কত টাকা ট্যাক্স দিতে হবে সেটিও দেখতে পাবেন।
>> যাদের করযোগ্য আয় নেই তাদের ‘জিরো ট্যাক্স’ আসবে। তারা প্রসিট টু অনলাইন রিটার্ন অপশনে ক্লিক করে দিন। তাহলে আপনার রিটার্ন ফ্রম আপনার সামনে আসবে। এখান থেকে ভালোভাবে আবার তথ্য যাচাই করার সুযোগ পাবেন। এরপর সাবমিশন রিটার্ন অপশনে ক্লিক করে দিন। ইয়েস এবং নো দুইটি বার আসবে ইয়েস ক্লিক করলেই আপনার রিটার্ন সাবমিট হয়ে যাবে। আপনাকে একটি রেফারেন্স নম্বর দেওয়া হবে।
>> যাদের ট্যাক্স দিতে হবে তারা পে নাও অপশনে যান। এখানে আপনি কীভাবে ট্যাক্সের টাকা পরিশোধ করতে চান তার বিভিন্ন অপশন পাবেন। এরপর সেখানে গিয়ে পেমেন্ট করে দিন।
>> সবশেষে আপনার রিটার্ন ও ট্যাক্স জমা দেওয়ার স্লিপ ও সার্টিফিকেট ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করুন। আপনার হোম পেজের উপরের বামেই সার্টিফিকেট, রিটার্ন ফরম সবকিছু পেয়ে যাবেন।
কেএসকে/এএসএম