আন্তর্জাতিক

রাশিয়ায় অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ অস্বীকার উত্তর কোরিয়ার

রাশিয়ার কাছে গোপনে অস্ত্র বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেছে উত্তর কোরিয়া। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তোলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় বার্তা সংস্থায় (কেসিএনএ) একটি বিবৃতি প্রকাশ করে উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

Advertisement

ওই বিবৃতিতে কিম জং ‍উনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বিরুদ্ধে গোপনে রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রির যে অভিযোগ তুলেছে, তা আসলে গুজব। পিয়ংইয়ং কখনোই মস্কোর কাছে অস্ত্র বিক্রি করেনি, ভবিষ্যতেও এ ধরনের চুক্তি করার কোনো পরিকল্পনা নেই।

‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের পদক্ষেপকে আমাদের ওপর জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা আরোপের একটি কৌশল হিসেবে দেখছি। এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে ওয়াশিংটন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পিয়ংইয়ংয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে।’

গত সপ্তাহে হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তা জন কিরবি এক বিবৃতিতে বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করছে।

Advertisement

তিনি দাবি করেন, বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করতে উত্তর কোরিয়া মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর মাধ্যমে এসব অস্ত্র রাশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করছে। তবে চালানগুলো শেষপর্যন্ত কোথায় গিয়ে খালাস হয়, তার ওপর নজর রাখছে ওয়াশিংটন।

কিরবি আরও বলেন, উত্তর কোরিয়া রাশিয়ায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র পাঠাচ্ছে। তবে তাদের পাঠানো অস্ত্র রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে আরও দীর্ঘ করলেও যুক্তরাষ্ট্র-ন্যাটো যে পরিমাণ অস্ত্র ইউক্রেনকে সরবরাহ করছে তার তুলনায় অপ্রতুল।

সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ তোলে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার কাছে অস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনা করছে। তখনই এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে প্রত্যাখ্যান করেছিল পিয়ংইয়ং।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ভিক্টর চা এক বিবৃতিতে বলেন, উত্তর কোরিয়া স্পষ্টভাবে রাশিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্ক শক্ত করতে ইউক্রেন যুদ্ধকে ব্যবহার করছে। যেকোনো অস্ত্র সরবরাহ দেশ দুটির মধ্যকার সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার ইজ্ঞিত দেয়।

Advertisement

এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরে ইউক্রেনে রাশিয়ার অধিকৃত অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে রিপাবলিকের স্বীকৃতি দেয় সিরিয়া ও উত্তর কোরিয়া। এমনকি, ইউক্রেনের অন্যান্য অংশেও রুশ সংযুক্তির সমর্থন দেয় উত্তর কোরিয়া। এর বিপরীতে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে কিয়েভ, যদিও এ সম্পর্ক আগে থেকেই বেশ ঠুনকো ছিল।

গত সপ্তাহে যৌথভাবে সবচেয়ে বড় বিমান মহড়া চালায় বাইডেন ও ইওল প্রশাসন। সে সময় একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ একাধিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালায় কিম জং উন প্রশাসন। এ ঘটনায় কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এর কয়েকদিন পরই উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে রাশিয়ায় অস্ত্র বিক্রির অভিযোগ তোলে যুক্তরাষ্ট্র।

২০১৭ সালে প্রথম পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায় কিম জং উন প্রশাসন। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া বিশ্বকে সতর্ক করে আসছিল যে, উত্তর কোরিয়ার ভবিষ্যতেও পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালাতে পারে।

 

সূত্র: আল জাজিরা

এসএএইচ