আইন-আদালত

মামলার নথি না দেওয়ায় রংপুরের এডিসিকে হাইকোর্টে তলব

এক ব্যাক্তির মামলার আদেশের কপি (নথি) চাওয়ার পরও না দেওয়ার ঘটনায় রংপুরের সাবেক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ও বর্তমান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) ফিরুজুল ইসলামকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৭ নভেম্বর স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে কেন তিনি মামলার আদেশের অনুলিপি দেননি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্যে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

Advertisement

একই সঙ্গে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। জারি করা রুলে সহি মহুরি আদেশনামা প্রদান না করা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সানোয়ার হোসেন ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।

এ বিষয়ে দায়ের করা এক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (৭ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

Advertisement

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. সানোয়ার হোসেন। অন্য দিকে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এম এম জি সারোয়ার পায়েল।

সম্পত্তির বিরোধ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় রংপুর কতোয়ালী থানার অধিবাসী নসিরুজ্জামান চৌধুরীর সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলায় করা অভিযোগের ভিত্তিতে দেওয়া আদেশের কপি চেয়ে করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ জুলাই বিবাদী মোহাম্মদ সাব্বির সুলতান তার নথি চেয়ে করা আবেদনটি না মঞ্জুর করে আদেশ দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম)।

এর আগে গত ২৯ জুন ওই আদেশর কপি চেয়ে আবেদন করেন মোহাম্মদ সাব্বির সুলতান। বিবাদী পক্ষ থেকে করা ওই ব্যাক্তির বিষয়ে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও আদেশের জাবেতা নকলের কপি (নথি) চাওয়ার পরও না দেওয়ার ঘটনায় রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে রংপুরের সাবেক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) তলব করেন হাইকোর্ট।

এর আগে ৬ জুন রংপুরের রেভিনিও ডেপুটি কালেক্টর মো. আমিনুল ইসলামের সই করা একটি প্রতিবেদন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আদালতে দাখিল করে।

Advertisement

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রংপুর সদর জেলাধীন আলমনগর মৌজার এসএ ২৩০৪ নম্বর খতিয়ানের ৪২৭৩ নম্বর দাগে ০. ৪৮ একর জমি সরেজমিনে তদন্ত করি। তদন্তে জানা যায় বর্ণিত বাড়ি ও জমির মালিকানা দাবি করে সাব্বির সুলতান সরকারের বিরুদ্ধে ৭৯/২০১৩ মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি নিষ্পত্তি করে ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি নিষ্পন্ন করে সরকারের পক্ষে আদেশ দেন আদালত।

নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, নলিশী জমি নিলামে ক্রয়কারী নাজনীন আক্তার তার স্বামী নাসিরুজ্জামান চৌধুরীকে ১৯৮৬ সালের ১৭ এপ্রিলে ৫২২/১(৩) নম্বর স্মারকে গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে (নির্বাহী প্রকোশলীর কপি সংযুক্ত) বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রেকর্ড পর্যালোচনায় দেখা যায় নলিশী জমি বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক, রংপুর অনুকুলে ১/১ নম্বর আরএস খতিয়ানে রেকর্ড হয়েছে। চূড়ান্ত আরএস খতিয়ান প্রকাশ হয়নি।

সরজমিন দেখা যায় উক্ত পরিত্যাক্ত বাড়িটিতে সামছুল উলুম সিদ্দিকীয়া মাদ্রাসার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মাদ্রাসার মক্তব বিভাগে ১২০ জন ছাত্র সকালে এবং ১০১৫ জন ছাত্র আবাসিক পড়াশুনা করে। এছাড়া ওই দাগের জমিতে উত্তর পশ্চিম পাশে ৯টি পরিবার বসবাস করে। বসবাসকারীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা কাজলের নিকট থেকে ভাড়া নিয়েছেন।বসবাসকারীরা আরও জানায় সাব্বির সুলতান বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছেন। এছাড়াও রাস্তা সংলগ্ন কিছু স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে অযুখানা নির্মাণ করা হবে বলে জানান বসবাসকারী লোকজন।

এফএইচ/জেডএইচ/জিকেএস/এমআইএইচএস