গ্রাহকের অজান্তে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নেয়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুথ বন্ধ রাখার কোনো নির্দেশনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেয়নি। তাই এটিএম বুথ বন্ধ রাখা যাবে না। স্বেচ্ছায় যদি কোনো ব্যাংক বুথ বন্ধ রাখে তবে সে ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা।১২ ফেব্রুয়ারি ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) এক গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ ব্যবহার করে কৌশলে টাকা তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। পরে জানা যায়, আরো অন্তত ২১ জন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে একইভাবে আনুমানিক ১০ লাখ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর ইবিএলসহ একাধিক ব্যাংক এটিএম সেবা বন্ধ রাখে। অনেক ব্যাংক টাকা উত্তোলনের পরিমাণ কমিয়ে আনে। এতে বুথ থেকে টাকা উত্তোলনে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ গ্রাহকদের।এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভংকর সাহা বলেন, এটিএম বুথ বন্ধ রাখতে আমরা এখনো পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা দেইনি। ইবিএলের ঘটনা তদন্ত করে আমরা জানতে পেরেছি তিন ব্যাংকের ছয়টি এটিএম বুথে স্কিমিং মেশিন লাগিয়ে বেশ কিছু কার্ডের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর ওই তথ্য দিয়ে কার্ড ক্লোনিং করা হয়েছে। এজন্য ৮৫ লাখ কার্ড ব্যবহারকারীকে ভোগান্তিতে ফেলা যাবে না। এজন্য আগের মতোই এটিএম ও অন্যান্য লেনদেন সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। কেউ যদি বন্ধ করে তবে তা আমরা খতিয়ে দেখবো।তিনি আরো জানান, ওই ছয় বুথে স্কিমিং মেশিন লাগানো অবস্থায় যে কার্ডগুলো ব্যবহার করা হয়েছিল সে কার্ডধারীদের বিষয়টি জানিয়ে তা ডিঅ্যাক্টিভেট করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একইসাথে তাদের নতুন কার্ড সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে।শুভঙ্কর সাহা জানান, কার্ড ক্লোনিং করে টাকা চুরির ঘটনা তদন্তে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি টিম কাজ শুরু করেছে। এ তদন্তের পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক্ষেত্রে যে ব্যাংকের কারণে টাকা খোয়া গেছে সে ব্যাংকই গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ দেবে।ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ ঠেকাতে কী পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চাই প্রত্যেকটা ব্যাংক যেন তাদের বুথের সিসিটিভি ফুটেজগুলো দিনে অন্তত একবার পরীক্ষা করে। কেউ সেখানে স্কিমিং মেশিন লাগলে সেটা জানা যাবে। পাশাপাশি অ্যান্টি স্কিমিং ডিভাইস বাজারে পাওয়া যায় কি না সেটাও আমরা খোঁজ-খবর করছি। আবার যারা এ ধরনের চুরির কাজ করে তারা বুথে প্রবেশের সময় সাধারণত মাথায় এমন ক্যাপ ব্যবহার করেন, যাতে ক্যামেরায় মুখ দেখা না যায়। আবার বুথের সামনে যে ক্যামেরা লাগানো থাকে তাও তারা চুইংগাম জাতীয় কিছু দিয়ে বন্ধ করে দেন। আমরা চিন্তা করছি কেউ যখন কোনো ক্যামেরা ব্লক করার চেষ্টা করবে তখনই যাতে অ্যালার্ম বেজে ওঠে। এ ব্যাপারে এখনো কোনা সিদ্ধান্ত হয়নি।এসআই/এনএফ/এবিএস
Advertisement