খুব বেশি ইচ্ছে হয় না। তার নামটি মুখে আনতে। লিখতে! ঘাতক জিয়াপুত্র তারেক রহমানের কথাই বলছি। নাশকতার পূর্বপ্রস্তুতি নিতে বিএনপির চলমান সমাবেশগুলোয় দেখা যাচ্ছে যে, দুটি চেয়ার খালি রাখা হচ্ছে। একটি বেগম জিয়ার। অন্যটি তারেক রহমানের জন্য।
Advertisement
আচ্ছা, দেশবাসীর কাছেই আমার জিজ্ঞাসা, তারেক রহমানকে নিজ দলের অভ্যন্তরেই বিএনপির শীর্ষ নেতা হিসেবেই তো কেউ কেউ মানে না। তাকে বাংলাদেশের নেতা হিসেবে কে গ্রহণ করতে চায়? প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সিদ্ধান্তের দিক চিন্তা করলে ৫ শতাংশ মানুষ কি তারেক রহমানকে মেনে নিতে পারে বা পারবে? বিএনপি তাই মূলত মস্তিষ্ক বিকৃতিকারীদেরই দল। চেয়ার খালি রাখার মধ্য দিয়েও তাদের রাজনৈতিক পরাজয় নিশ্চিত হয় বলে মনে করার সুযোগ আছে।
বহু বছর পর বিএনপি এখন পর্যন্ত মূলধারার রাজনীতির দরজায় এসে নক করছে, তা দেখে মন্দ লাগবে কেন? গণতন্ত্রের সৌন্দর্যের দিক চিন্তা করলে তাদের সু স্বাগত বলার উপলক্ষ তৈরি হয়। কিন্তু, রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে শুরু করে ১৪ দলীয় জোটেরর প্রত্যেকটি শরিক দল ও সচেতন মানুষ টের পাচ্ছে, আর ক’দিন পরেই বিএনপির আসল চেহারা জনশ্রেণির মাঝে উন্মোচিত হবে। তারা নাশকতার রাজনীতিকে আবারও সামনে নিয়ে আসবে।
এখন প্রয়োজন, সারাদেশের মানুষকে নিয়ে তাদের কীভাবে মোকাবিলা করা যায়, সে প্রশ্নে। আমরা আশাবাদী যে, জানমালের ক্ষতি সাধনে তারা যেন বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং একইসঙ্গে জনগণের জীবনের নিরাপত্তা প্রদানেও সচেষ্ট থাকতে হবে।
Advertisement
খালেদা জিয়া, দেশের সাবেক শাসক। ঘাতক জিয়াউর রহমানের পথ ধরে একাত্তরের পরাজিত শক্তির সাথে মিত্রতা করে রাজনীতি করে গেছেন। আমরা সেই দুর্ভাগা দেশ, তার মতো মানুষকেও আড়াইবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে পেয়েছি।
রাজনৈতিক লেখাপড়ার ঘাটতি, বাস্তবতা বর্জিত পথচলাকে সঙ্গী করে দেশের প্রধান নির্বাহী হয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে চলতে থাকা সেই খালেদা জিয়ার জন্যও চেয়ার খালি রাখা হয়। যিনি মূলত দেশবিরোধী বলয়ের ঐক্যের প্রতীক।
মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতার বিরোধিতা করার বাহিনী, ১৫ আগস্টের পৈশাচিক ঘটনা ঘটানোর বাহিনী, দেশের অতি আস্তিক শক্তির একাংশ নিয়ে এই বেগমের রাজনীতি কি, জাতীয়তাবাদ কি, তা কেউই কখনই জানতে পারেনি। অথচ রাজনৈতিক অপশক্তি হিসেবে স্বীকৃত হয়ে পড়া তার দল বিএনপি চেয়ার খালি রাখছে। এমন একটা ভাব। যাতে খালি চেয়ার দেখে আমরা ভয়ে কেঁপে উঠছি !
দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বেগম জিয়ার বিচার হয়েছে, চলছে। বহু মামলার আসামি তিনি। কোনোটায় দণ্ডিত, কোনোটায় জামিনে আছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেদিন বললেন, বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে তাকে আবার জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে।
Advertisement
সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হলো, বিচার বিভাগ শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই এমন করে বলতে পেরেছেন তিনি। প্রতি জবাবে বলতে চাই যে, বিচার তো যা হয়েছে, তাতে করে বেগমের এখন জেলে থাকারই কথা। শেখ হাসিনা বিশেষ ক্ষমতা ও মায়া করে তাকে তার নিজের আবাসে থাকার বন্দোবস্ত করেছেন।
পারিবারিকভাবে যখন তার কাছে আবেদন করা হয়, শেখ হাসিনা উদারতা দেখিয়েই তো তাকে তার আবাসে থাকার ব্যবস্থা করেন। মামলার বিচারে কী হয়েছে বা হবে তা নিয়ে তো তিনি হস্তক্ষেপ করেননি। কাজেই জননেত্রী শেখ হাসিনা বলতেই পারেন, বাড়াবাড়ি করলে জেলই হবে সঠিক গন্তব্যস্থল। বাড়াবাড়ির সংজ্ঞা কি, তাও বোঝা উচিত। বিএনপি এক লাখ সমাবেশ করুক, সমস্যা নেই। নির্বাচনেও আসুক। কিন্তু নাশকতা করলে ছাড় দেওয়া হবে না।
একযুগের বেশি সময় ধরে বিএনপির কাছেই খোদ প্রতারকেরর মতো হয়ে আছেন পলাতক তারেক রহমান। কারণ, প্রায় ১৪ বছর ধরে তিনি লন্ডনে আরাম আয়েশে বসবাস করছেন। বহু অপরাধের মধ্যে থাকা সাজাপ্রাপ্ত এই আসামির জন্য যারা চেয়ার খালি রাখে, তাদের আগে মানসিক চিকিৎসা করানো দরকার। যদিও এমন সংস্কৃতি, আওয়ামী লীগের জন্য সহায়ক হয়ে পড়ে। বাংলাদেশও হাসে!
তারেকের মতো ব্যক্তি হয়তো বলেন, পলিটিক্স ইজ সাপোজড টু বি দ্য থারড-ওল্ডেস্ট প্রফেশন-আই হ্যাভ কাম টু রিয়েলাইজ দ্যাট ইট বিয়ারস এ ভেরি ক্লোজ রিসেম্বলেন্স টু দ্য ফার্স্ট অ্যান্ড সেকেন্ড! তারেক, তার পিতা ও মাতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশের ভাগ্যকে বিলম্বিত করবেই শুধু। তার মতো ব্যক্তিকে খলনায়ক হিসেবে ধরেই আমাদের সমাজ থেকে তথা নতুন প্রজন্ম থেকে হিরোরা আসুক, সে কামনাও করতে হবে।
লেখক: সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
এইচআর/ফারুক/এমএস