>> মোহাম্মদ আলীর প্যালেস ভেঙে ফেলেছেন আওয়ামী লীগ নেতা >> সুউচ্চ প্রাচীরের অভ্যন্তরে প্রাচীন নিদর্শনের ধ্বংসযজ্ঞ>> ওয়াক্ফ এস্টেটের শতকোটি টাকার জমি ব্যক্তিগত সাজিয়ে বেচাকেনা
Advertisement
বগুড়ায় ঐতিহ্যবাহী নবাব এস্টেটের পৌনে চার একর জায়গা এখন প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে। প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো শতকোটি টাকা মূল্যের এই সম্পত্তি ব্যক্তিগত দেখিয়ে বিক্রিও হয়েছে। দফায় দফায় করা এই জালিয়াতিতে জেলা প্রশাসনের রাজস্ব ও ভূমি বিভাগের সংশ্লিষ্টতাও মিলেছে। সর্বশেষ পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর মূল বাড়িটি বিক্রির পর (প্যালেস) ভেঙে ফেলা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা এই জায়গায় বহুতল বাণিজ্যিক এলাকা (বিজনেস সিটি) গড়ে তুলবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৮৯০ সালে নবাব ওয়াকফ এস্টেটের জন্ম। তিনটি ওয়াক্ফ দলিলমূলে বগুড়া নবাব ওয়াক্ফ অবিভক্ত বাংলার কলকাতাস্থ ওয়াক্ফ প্রশাসনে প্রথম ইনরোলমেন্ট (ইসি) বা তালিকাভুক্ত হয়।
ওয়াক্ফ অফিস সূত্র জানায়, ইসি ৩৬৭৫, ইসি ৩৬৭৫ (এ) এবং ইসি ৩৬৭৫ (বি) এ তিনটি ওয়াক্ফ মিলে বগুড়া নবাব ওয়াক্ফ এস্টেট গঠিত। সাবেক পাকিস্তান ও বর্তমান বাংলাদেশ ওয়াক্ফ এস্টেটের আওতায় এই ইনরোলমেন্ট তিনটি আজ পর্যন্ত কার্যকর। নবাবদের বংশধর সৈয়দ রায়হান হাসান আলী চৌধুরী বর্তমানে ওয়াক্ফ এস্টটের দায়িত্বপ্রাপ্ত মোতাওয়াল্লি। তবে ওয়াক্ফ এস্টের নথিপত্রের বাইরে বাস্তব চিত্র চমকে দেওয়ার মতো। শতকোটি টাকার এসব সম্পত্তি কাগজ-কলমে থাকলেও বাস্তবে এর কিছুই ওফাক্ফর দখলে নেই।
Advertisement
বৃহত্তর বগুড়া জেলা (বগুড়া-জয়পুরহাট) ওয়াক্ফ পরিদর্শক নুরুজ্জামান বলেন, নবাব এস্টেটের ইনরোলমেন্ট এখনো চালু রয়েছে। প্রতি বছর চাঁদার টাকাও জমা হচ্ছে সরকারি কোষাগারে। সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৬৭৫ ইসির বিপরীতে এক হাজার ৬৮২ টাকা, ৩৬৭৫ (এ) ইসির বিপরীতে ২৩ হাজার ৯৭৮ টাকা এবং ৩৬৭৫ (বি) ইসির বিপরীতে ৫ হাজার ২০০ টাকা জমা হয়। ওয়াক্ফ নথিতে নবাবদের জমি-ঘরবাড়ির বিবরণ নথিভুক্ত রয়েছে। এর মানে হলো এই সম্পত্তিগুলো যে ওয়াক্ফ তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
ওয়াক্ফ নথি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১৮৯০ থেকে শুরু করে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত এই এস্টেটের মোতাওয়াল্লি ছিলেন মোহাম্মদ আলীর পিতার নানা (প্রপিতামহ) নবাব সোবহান চৌধুরী। তিনি মারা গেলে ১৯১৪ থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত মোতাওয়াল্লি ছিলেন মোহাম্মদ আলীর পিতা সৈয়দ আলতাফ আলী চৌধুরী। তার মৃত্যুর পর ১৯৪৪ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত এই এস্টেটের মোতাওয়াল্লি হন সৈয়দ মোহাম্মদ আলী চৌধুরী। তিনি মারা গেলে ১৯৬৩ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত মোতাওয়াল্লি ছিলেন বড় ছেলে সৈয়দ হাম্মাদ আলী চৌধুরী, এরপর ১৯৭০ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত মোতাওয়াল্লি হন মোহাম্মদ আলী বৈমাত্রীয় ভাই সৈয়দ ওমর আলী চৌধুরী। সর্বশেষ ১৯৯৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত (চলতি) মোতাওয়াল্লি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন মোহাম্মদ আলীর নাতি সৈয়দ রায়হান আলী চৌধুরী।
বগুড়ার ইতিহাস গবেষকদের ভাষ্য, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ আলী চৌধুরীর স্মৃতিবিজড়িত প্রাচীন ঐতিহ্যের সাক্ষী নওয়াব প্যালেস। একদিকে এটি ওয়াক্ফ সম্পত্তি, অন্যদিকে এটি প্রত্নতত্ত্ব গুরুত্ব বহন করে। সে কারণে এই সম্পত্তি হস্তান্তরযোগ্য নয়। তবে ক্রেতারা বলছেন, এটি ওয়াক্ফ সম্পত্তি নয়। এটা নবাব পরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। যে কারণে বেচাকেনা হয়েছে।
নবাবদের এই বাড়ির ভেতরে ঢোকার অনুমতি না থাকায় আধুনিক ড্রোন ক্যামেরা ব্যবহার করে দেখা গেছে, প্রাচীন এই স্থাপনার ধ্বংসযজ্ঞের বর্তমান চিত্র। সেখানে শত বছরের পুরোনো স্থাপনা ভাঙা ইট-সুরকির স্তূপ ছাড়া কিছুর দেখা মেলেনি। সুউচ্চ প্রাচীরঘেরা দুর্গের মতো এই প্যালেসে দ্বিতল ভবনে নওয়াব পরিবার থাকতেন। এ ভবনের আশপাশে একতালা ভবনও ছিল দুটি। ছোটবড় মিলিয়ে মোট ভবন তিনটি। দ্বিতল ভবনে আটটি কক্ষে ৯ দরজা বাইরে থেকে দেখা যেতো। একই ভবনের নিচতালায় ১৬টি কক্ষের ১৩টি দরজা ছিল। কারু ভবনের চারটি কক্ষে ১১ দরজা ছিল। এছাড়া কর্মচারীদের জন্য ব্যবহৃত আটটি ভবনেরও ৯টি দরজা ছিল। নওয়াব বাড়ির মূল গেট ছিল তিন স্তরের। প্রথম গেট খোলা। দ্বিতীয় গেট লোহার তৈরি। তৃতীয় গেট কাঠের। প্রধান গেটের ওপর একটি ঘণ্টা ঝুলানো ছিল। আরও ছিল একটি সার্চলাইট। গেটের দেওয়ালে ছিল নানা ধরনের কারুকাজ। বিশাল উঠোনজুড়ে ছোটবড় প্রাচীন ও মূল্যবান ৭১টি গাছ ছিল, যা বাসভবনের ছায়াদানসহ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতো। এসবের কোনো কিছুই এখন নেই। ঐতিহ্যের স্মৃতিগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
বগুড়া শহরের সূত্রাপুর মৌজার ১৭০৮নং দাগে অবস্থিত নবাবাড়ির মোট সম্পত্তির পরিমাণ তিন একর ৭৫ শতক বা প্রায় ১০ বিঘা। এ সম্পত্তির সবই ধাপে ধাপে বিক্রি হয়েছে। মূল ভবন ছাড়া অন্যান্য জায়গার ওপর ক্রেতারা গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবন টিএমএসএস মহিলা মার্কেট, শরীফ উদ্দিন সুপার মার্কেট ও আল-আমিন কমপ্লেক্স, র্যাংগস ভবন, রানার প্লাজা বহুতল বাণিজ্যিক ভবন। এক একর ৫৮ শতক জমির ওপর ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মাদ আলী চৌধুরীর মূল প্যালেস ভবন। বাড়ির সঙ্গে রয়েছে তাদের স্বামী-স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের কবর । রেকর্ড বলছে, ১৮৮৪ সালে নবাব বংশের উত্তরসূরিরা এই বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন। তার মানে নবাবদের এ বাড়িটির বয়স ১৩৮ বছর।
বৃহত্তর বগুড়া সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম কামরুল ইসলাম বলেন, নবাব প্যালেসটি বিক্রিতেও জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। অন্যান্য জায়গার মতো এ বাড়িটিও ওয়াক্ফ সম্পত্তি। এরপরও সরকারি মূল্য হিসেবে স্থাপনাসহ এই বাড়ি বিক্রি দেখানো হয়েছে ২৭ কোটি ৪৫ লাখ সাত হাজার টাকায়। এটির ক্রেতা বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ও বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাছুদুর রহমান মিলন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি শফিকুল হাসান জুয়েল এবং আবাসন ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর।
সূত্র বলছে, ১ দশমিক ৫৫ একর সম্পত্তির মধ্যে আবদুল গফুর ৬২ শতাংশ, শফিকুল হাসান ৬২ শতাংশ এবং মাসুদুর রহমান ৩১ শতাংশের মালিক। ২০১৬ সালের ১৫ এপ্রিল মরহুম মোহাম্মাদ আলীর দুই পুত্র সৈয়দ হামদে আলী চৌধুরী ও সৈয়দ হাম্মাদ আলী চৌধুরী ইংল্যান্ড থেকে ঢাকায় এসে বিক্রি দলিলে স্বাক্ষর করেন। দুদিন পর ১৭ এপ্রিল বগুড়া সদর রেজিস্ট্রি অফিসে গোপনীয়তায় দলিল রেজিস্ট্রি (দলিল নং -৪৩১৮ ) সম্পন্ন হয়। সে সময় বগুড়া সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন এস এম সোহেল রানা।
তিনি দলিল সম্পাদনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, জমিটি ওয়াক্ফ বলে তার জানা ছিল না। এ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্রও তাকে দেখানো হয়নি। এছাড়া জমিটি ব্যক্তিগত হিসেবে ভূমি অফিস থেকে খারিজ করা ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১০ সালে তৎকালীন বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুনির চৌধুরীর হাত দিয়ে ওয়াক্ফ সম্পত্তির নথিপত্র গোপন করে নবাববাড়ি বা নবাব প্যালেস ব্যক্তি সম্পত্তি হিসেবে তৈরির তৎপরতা শুরু হয়। মোহাম্মদ আলীর প্রথম স্ত্রীর দুই পুত্র তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হিসেবে ভুয়া কাগজপত্র তৈরিতে প্রশাসনকে ম্যানেজ করেন। কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পতি হলে এর অর্ধেক অংশ প্রয়াত মোহাম্মদ আলীর ছোট স্ত্রী আলিয়া বেগম এবং তার দুই সন্তান সৈয়দ মাহমুদ আলী ও সৈয়দা মাহমুদারও পাওয়ার কথা। সেটি না করে গোপনে মোটা অর্থের বিনিময়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুনির চৌধুরী তার প্রভাব খাটিয়ে ভূমি অফিসে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানে আরও একটি নথিতে দেখা গেছে, ২০০৪ সালে সৈয়দ হামদে আলী চৌধুরী ওয়াক্ফ এস্টেটের কাছে একটি আবেদন করেন। সেখানে তিনি নিজে এই সম্পত্তি ওয়াক্ফর বলে স্বীকার করে এস্টেটের মোোওয়াল্লির কাছে আগ্রহ ব্যক্ত করে বলেন, তাকে মোতাওয়াল্লি করা হলে নবাবদের সম্পত্তির দেখভাল ঠিকমতো হবে। সেই সূত্রে ওয়াক্ফ এস্টেট তাকে মোতাওয়াল্লি নিয়োগ করলে পরে রায়হান হাসান আলীর রিটের কারণে সেই নির্দেশনা বাতিল হয়। একই ব্যক্তিই পরবর্তীসময়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে নবাবদের সম্পত্তি ব্যক্তিগত দেখিয়ে নিজ নামে খারিজ করেন।
এ ব্যাপারে বগুড়ার সাবেক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুনির চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এদিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলীর স্মৃতিবিজড়িত নওয়াব প্যালেস ওয়াক্ফ সম্পত্তি বলেই পরিচিত। এ কারণে তা হস্তান্তরযোগ্য হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ২০১৬ সালে ব্যক্তিসম্পত্তি দেখিয়ে ‘নওয়াব প্যালেস’ বিক্রির তৎপরতা শুরু হয়। তখন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বাড়িটি প্রত্নসম্পদ হিসেবে ঘোষণার কাজ শুরু করে। সেই প্রক্রিয়ার মধ্যেই নওয়াব পরিবারের দুই উত্তরসূরির কাছ থেকে নওয়াব প্যালেস কিনে নেন শহরের তিন ব্যবসায়ী। নওয়াব প্যালেসের এক একর ৫৫ শতাংশ সম্পত্তি ওই তিনজনের নামে দলিল সম্পাদন করা হয়।
এর আগে ২০১৬ সালের মে মাসে নওয়াব প্যালেসকে ‘সংরক্ষিত পুরাকীর্তি’ ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। ‘সংরক্ষিত পুরাকীর্তি’ হিসেবে সাইনবোর্ডও টাঙিয়েছিল প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নওয়াব প্যালেস অধিগ্রহণ কিংবা নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হয় সরকার। ব্যক্তিগত সম্পত্তি পুরাকীর্তি ঘোষণায় সরকারের গেজেট প্রকাশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন মালিকানা দাবিদার বগুড়ার ওই তিন ব্যবসায়ী। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই মামলায় হেরে যায়। কিন্তু এসব প্রক্রিয়ার কোনো সময়ই এই সম্পত্তি যে ওয়াক্ফর তা উল্লেখ করা হয়নি। ওয়াক্ফ এস্টেটের পক্ষ থেকেও আজ পর্যন্ত কোনো প্রতিবাদ কিংবা আইনি পদক্ষেপ নেয়নি।
বিগত সময়ে নওয়াববাড়ি রক্ষায় বগুড়ার সচেতন নাগরিক আন্দোলন শুরু করেছিল। মোহাম্মদ আলীর দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে সৈয়দ মাহমুদ আলী চৌধুরী ও বোন সৈয়দা মাহমুদা বগুড়ায় এসে তাদের এই পৈতৃক সম্পত্তি ও ঐতিহ্য রক্ষা কল্পে সরকারকে অধিগ্রহণের দাবি জানিয়ে গেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি।
সৈয়দ মাহমুদ আলী চৌধুরী বলেন, আমরা প্রশাসনের কোনো সহযোগিতা পাইনি। আমার বৈমাত্রীয় দুই ভাই এই জালিয়াতিতে জড়িত। তারা বগুড়ার এই ঐতিহ্য শেষ করে দিলো। সর্বশেষ আমার বাবার স্মৃতিবিজড়িত প্যালেসটি ভেঙে ফেলা হলেও কেউ প্রতিবাদ করেনি।
জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ও বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের মহাসচিব তৌফিক হাসান বলেন, নওয়াব প্যালেস বগুড়ার অমূল্য সম্পদ। এটি কোনোভাবেই বিক্রয়যোগ্য সম্পত্তি নয়। এটি গোপনে বিক্রি দুঃখজনক।
বগুড়ার প্রবীণ ব্যক্তি ইতিহাস গবেষক আব্দুর রহিম বগুড়ার নবাববাড়ির ইতিহাস ও মোহাম্মদ আলীর জীবনী নামক দুটি বইয়ের লেখক। তিনি বলেন, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি ঐতিহ্যবাহী এই স্মৃতি চিহ্নটি ধরে রাখতে। কিন্তু প্রশাসনের অসহযোগিতা ও প্রভাবশালীদের দৌরত্ম্যের কারণে তা পারিনি। এখন ভেঙে চুরমার করা হলো বগুড়াবাসীর স্বপ্ন।
বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক ও বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাছুদুর রহমান মিলন বলেন, ২০১৬ সালে উত্তরসূরিদের কাছ থেকে তারা নওয়াব প্যালেস কেনেন। কিন্তু ক্রয় করা এই বাড়িকে অবৈধভাবে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি ঘোষণা করে গেজেট ঘোষণা করে সরকার। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। আদালত তাদের পক্ষে রায় দেন। এরপর আদালত গেজেট বাতিল ঘোষণা করে। এটা এখন আমাদের নিজস্ব সম্পত্তি।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা বলেন, প্যালেস ভবনটির ব্যাপারে আদালত মালিক দাবিদারদের পক্ষে রায় দিয়েছেন। যে কারণে সেটি ভেঙে ফেলা হলেও আমাদের করার কিছু নেই।
এএইচ/এএসএম