পাবনার ঈশ্বরদীতে ঢ্যাঁড়শের ভালো ফলন ও বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় এবার খুশি চাষিরা। স্থানীয়ভাবে আষাঢ়ি ঢ্যাঁড়শ হিসেবে পরিচিত এ ফসলের ফলন খুব ভালো হয়েছে। পাশাপাশি অন্য বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দামে ঢ্যাঁড়শ বিক্রি করে চাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।
Advertisement
উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের পতিরাজপুর ও নিকরহাটা গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, শত শত হেক্টর জমিতে ঢ্যাঁড়শের আবাদ হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো। মণপ্রতি ১৫০ টাকা চুক্তিতে নারী-পুরুষ ঢ্যাঁড়শ জমি থেকে তুলে বাজারজাতকরণের জন্য প্রস্তুত করছেন।
নিকরহাটা গ্রামের আজিম উদ্দিন বলেন, ‘১৬ বিঘা জমিতে ঢ্যাঁড়শ আবাদ করেছি। প্রতি বিঘায় আবাদে খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। আশা করি ৫০-৬০ হাজার টাকার ঢ্যাঁড়শ বিক্রি হবে। সার, বীজ ও কীটনাশকের দাম না বাড়লে চাষিরা আরও লাভবান হতো।’
একই গ্রামের চাষি আইনুল হক জানান, সার-কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা কোনো ফসলেই লাভবান হতে পারছেন না। এবার ঢ্যাঁড়শের বাজারদর অন্যবারের তুলনায় বেশি হওয়ায় কৃষকরা কিছুটা হলেও লাভবান হতে পারবেন। এর আগে ঢ্যাঁড়শ প্রতি কেজি পাইকারি ২০ টাকার বেশি কখনো বিক্রি করতে পারেননি। এবার তো সর্বোচ্চ ৩৮ টাকা কেজি দরে আড়তে গিয়ে বিক্রি করেছেন। এখনো ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
Advertisement
পতিরাজপুর গ্রামের ঢ্যাঁড়শ চাষি কবির মালিথা জানান, ‘এবার ঢ্যাঁড়শের বাজার বেশ ওঠানামা করেছে। কোরবানির ঈদের পর প্রায় টানা একমাস ঢ্যাঁড়শ ৫-৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। তখন অনেকেই ঢ্যাঁড়শ গরু-মহিষকে খাইয়েছে। গত এক মাসে প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়শ ২৫-৩৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অতীতে কখনো এতো বেশি দামে চাষিরা ঢ্যাঁড়শ বিক্রি করতে পারেননি।’
মুলাডুলি সবজি আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক জাগো নিউজকে জানান, কাঁচামালের বাজারদর প্রতিদিনই ওঠানামা করে। গত ১৫ দিনে এ আড়তে ঢ্যাঁড়শ ২৮-৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা।
মুলাডুলি ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলিউজ্জামান জিয়া জানান, আষাঢ়ি ঢ্যাঁড়শের ফলন এবার ভালো হয়েছে। এটি উঁচু জমিতে আবাদ করা হয়। সাধারণত আষাঢ় মাসে ফলন শুরু হয় বলে কৃষকদের কাছে আষাঢ়ি ঢ্যাঁড়শ হিসেবে পরিচিত। ঢ্যাঁড়শের দাম ভালো পাওয়ায় এবার চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার জাগো নিউজকে বলেন, ‘উপজেলায় এ বছর ৫৩০ হেক্টর জমিতে ঢ্যাঁড়শ আবাদ হয়েছে। উপজেলার মুলাডুলি, সাঁড়া ও সাহাপুর ইউনিয়নে ঢ্যাঁড়শের বেশি চাষ হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে এবং কৃষকরা বাজারমূল্য অন্য বছরের তুলনায় ভালো পাচ্ছেন।’
Advertisement
শেখ মহসীন/এসইউ/এমএস