দেশজুড়ে

ফটোগ্রাফিতে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেলেন ফরিদপুরের অভিজিৎ

ফটোগ্রাফিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গোল্ড মেডেল পেয়েছেন ফরিদপুরের অভিজিৎ ভক্ত। তিনি ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট হাউজিং এস্টেটের বাসিন্দা প্রশান্ত কুমার ভক্তের ছেলে। অভিজিৎ ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে মনোক্রম ক্যাটাগরিতে (সাদাকালো) তিনি এ বছর ‘এসএসএস গোল্ড মেডেল’ বিজয়ী হয়েছেন।

Advertisement

ঢাকায় আয়োজিত বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির ২১ অক্টোবর এক অনুষ্ঠানে তার স্বীকৃতির সদনপত্র তুলে দেন অতিথিরা।

জানা গেছে, অভিজিৎ ভক্তের বাবা প্রশান্ত কুমার ভক্ত অবসরপ্রাপ্ত অ্যাকাউন্স অফিসার। মা ভারতী রানী দাস ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নার্স (সেবিকা) সুপারভাইজার। দুই ভাইয়ের মধ্যে অভিজিৎ ছোট।

সৌখিন ফটোগ্রাফার অভিজিৎ ভক্ত জাগো নিউজকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই একজন বড় ফটোগ্রাফার হওয়ার স্বপ্ন আমার। সে লক্ষেই মোবাইল দিয়ে নদী, আকাশ, ফুল, লতা-পাতা ও প্রকৃতির ছবি তোলা। বাংলাদেশ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির (বিপিএস) কম্পিটিশনের সার্কুলার আসার পর এক রকম অনিশ্চয়তার উপর ছবি সাবমিট করি। এরপর অক্টোবরে অনলাইনে বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টার দিকে এসএসএস গোল্ড মেডেল বিজয়ী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে আমার নাম ঘোষণা করে বিপিএস অ্যাওয়ার্ড কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

অ্যাওয়ার্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিশ্বের মধ্যে মোট ১০৩টি ছবি পুরষ্কার পেয়েছে। এরমধ্যে আমি এসএসএস গোল্ড মেডেল বিজয়ী হয়েছি। মেডেলটি তুর্কির সিলে সনত সারায়ি (এসএসএস) প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠানো হবে।

অভিজিৎ আরও বলেন, ছবি তোলার সময় নিজের কাছে কখনো মনেই হয়নি আমার তোলা ছবিটি এতো বড় পর্যায়ে যেতে পারে। এজন্য বড় কোনো জায়গাতে কখনো ছবি সাবমিট করা হয়নি। বিপিএস কম্পিটিশনের সার্কুলার আসার পর একরকম অনিশ্চয়তার উপর ছবি সাবমিট করি। সেখানে মোট চারটি ছবি এক্সেপটেন্স হয় এবং একটি ছবিতে এসএসএস গোল্ড মেডেল বিজয়ী হই। পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবিটি ফরিদপুরের ধলার মোড় থেকে মোবাইল দিয়ে তোলা। এছাড়া তোলা রঙিলা চায়ের দোকানের ছবি ফ্রান্সের একটি ম্যাগাজিনে ছাপা হয়। চলতি বছরের মার্চে খুলনা ফটোগ্রাফিক সোসাইটি (কেপিএস) থেকে আয়োজিত ন্যাশনাল এক্সিবিশনে আমার তোলা ছবি বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম স্থান পায়।

অভিজিৎ ভক্তের মা ভারতী রানী দাস জাগো নিউজকে বলেন, সন্তানের ভালো যে কোনো সাফল্যে বাবা-মা খুশি হন। আমরাও তার এ সাফল্যে গর্বিত। আমার ছেলের জন্য সবার কাছে আশীর্বাদ কামনা করি।

অভিজিৎ ভক্তের বাবা প্রশান্ত কুমার ভক্ত জাগো নিউজকে বলেন, অভিজিৎ খুব ছোট থেকে আমার ও ওর বড় ভাইয়ের মোবাইল দিয়ে ফুল-পাতা ও প্রকৃতির ছবি তুলতো। পরে ওর নিজের মোবাইল থেকে টুকটাক বাইরের ছবি তোলা শুরু করে। অনার্স প্রথম বর্ষে এসে ক্যামেরা কেনার ইচ্ছা থাকলেও নানান কারণে ক্যামেরা কিনে দেওয়া সম্ভব হয়নি। বন্ধুদের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে বেড়াতো। জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সম্মাননাও পেয়েছে। অনার্স তৃতীয় বর্ষে ওঠার পর নিজের টাকা দিয়ে প্রথম ক্যামেরা কিনে অভিজিৎ। বিকেল হলেই ফরিদপুরের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে ঘুরে ঘুরে ছবি তোলা তার নেশা হয়ে ওঠে। নতুন নতুন কম্পোজিশনে ছবি তোলার জন্য বেশ জনপ্রিয় আমার ছেলে। অন্যদিকে ফরিদপুর ফটোগ্রাফিক সোসাইটিতে (এফপিএস) সদস্যপদ লাভ করে তাদের সঙ্গে নিয়মিত ছবি তোলা নিয়ে আলোচনা করে নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকে। বর্তমানে স্ট্রিট ফটোগ্রাফির পাশাপাশি ওয়েডিং সেক্টরেও কাজ করছে।

Advertisement

এন কে বি নয়ন/জেএস/জিকেএস