দেশজুড়ে

নির্বাচনের দিনই আসেন যে ইউনিয়নের ভোটাররা

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সুতালড়ি ইউনিয়ন। পদ্মার দুর্গম চরে এর অবস্থান। যেতে হয় পদ্মা পাড়ি দিয়ে। অব্যাহত নদী ভাঙনে দিন দিন ছোট হয়ে আসছে ইউনিয়নের আয়তন। নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি হারানো বেশিরভাগ মানুষ বাধ্য হয়ে এলাকা ছেড়েছেন। অন্যত্র নতুন ঠিকানা গড়লেও ভোটার রয়ে গেছেন শেকড়েই। তাই ভোট এলেই কেবল তারা নিজের ইউনিয়নে ফেরেন।

Advertisement

বুধবার (২ অক্টোবর) সকাল থেকে হরিরামপুর উপজেলার সুতালড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে চলছে উপ-নির্বাচন। এ নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে ভোটাররা ফিরেছেন এলাকায়।

সকাল সাড়ে ৮টায় আন্ধারমানিক খেয়া ঘাটে দেখা যায়, কয়েকশ নারী-পুরুষ নৌকা পাড়ি দিয়ে সুতালড়ির চরে যাচ্ছেন। এদেরই একজন রহিজ উদ্দিন। সুতালড়ি চরে একসময় ঘর বাড়ি ছিল তার। কিন্তু প্রমত্তা পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে সব। এরপর পরিবার পরিজন নিয়ে চর ছেড়েছেন। নতুন বাড়ি করেছেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া গ্রামে। কিন্তু ভোটার রয়ে গেছেন চরেই। তাই তিনি ভোট দিতে এসেছেন।

নদী ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ায় ৩০ বছর আগে চর ছেড়েছেন মাহমুদ আলী। ঠিকানা পরিবর্তন হলেও, ভোটার পরিবর্তন করেননি। ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার তিনি। স্ত্রী ও পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন ভোট দিতে।

Advertisement

বৃদ্ধ আজমত আলী বলেন, ‘ভোটার আছি বলেই তো এলাকার মানুষ খোঁজ খবর নেন। ভোট এলে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা খোঁজেন। ভালোই লাগে।’

আলম ব্যাপারী বলেন, ‘উপ-নির্বাচন হলেও ভোটের গুরুত্ব আছে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে এসেছি। ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ায় নিরুপায় হয়ে এলাকা ছেড়েছি। কিন্তু মায়া ছাড়তে পারিনি।’

সুতালড়ি ইউনিয়নের ডুবাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন মৃধা জাগো নিউজকে বলেন, ‘সুতালড়ি ইউনিয়নে মোট ভোটার ২ হাজার ৬৪৯ জন। কিন্তু এর এক ভাগ ভোটার চরে থাকেন। বাকিরা সবাই অন্যত্র বাড়ি করেছেন। তারা নৌকায় ভোট দিতে আসছেন। ফলে সকালে ভোটার উপস্থিতি অনেক কম ছিল।

নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, সুতালড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের মৃত্যুর পর পদটি শূন্য হয়। উপ-নির্বাচনে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকের গুলজার আহম্মেদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল হক (মোটরসাইকেল) ও এমদাদুল হক (আনারস)। ৯টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হচ্ছে।

Advertisement

বি.এম খোরশেদ/এসজে/এমএস