ক্যাম্পাস

সুপারিশপত্রে সই না করায় বিভাগের সভাপতিকে পেটানোর হুমকির অভিযোগ

 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. হাকিমুল হক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরও। বিভাগের কাজের বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলার দায়িত্ব পালন করেন তিনি। অথচ তার বিরুদ্ধে বিভাগের সভাপতিকে গালিগালাজ ও টেবিল চাপড়ে কাচ ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। সেইসঙ্গে বিভাগের সভাপতিকে তিনি ‘লাঠি দিয়ে পেটানোর’ হুমকিও দিয়েছেন।

Advertisement

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ইসমত আরা বেগমের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দেন বিভাগের সভাপতি।

অধ্যাপক ইসমত আরা বেগম বলেন, সহযোগী অধ্যাপক হাকিমুল হক ২০২১ সালে একটি প্রজেক্ট পেয়েছেন। তিনি এ বছরও একটি প্রজেক্ট চান। কয়েকদিন আগে প্রজেক্টের জন্য সুপারিশের অনুরোধ জানান। তবে পরপর দুবছর প্রজেক্ট দেওয়ার নিয়ম না থাকায় তাকে সেটা দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে তিনি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন।

বিভাগের সভাপতি বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) সকালে তার একটি প্রজেক্ট নিয়ে আবারও আমার কাছে আসেন একজন কর্মচারী। আমি কর্মচারীর মাধ্যমে তাকে জানাই, সই নিতে হলে হাকিমুল হককে আসতে হবে। পরে তিনি আসলে আমি তাকে আগের আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে বলি। এটা না করলে আমি সই করবো না বলেও জানিয়ে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি টেবিল চাপড়াতে থাকেন। এতে টেবিলে কাচ ভেঙে যায়। যাওয়ার সময় তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঠি দিয়ে আমাকে পেটানোর হুমকি দেন।’

Advertisement

অধ্যাপক ইসমত আরা জানান, এ ঘটনায় তিনি মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুরো ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও তার কাছে সংরক্ষিত আছে। সে কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন।

তার অভিযোগ, সই করা করলে নিয়ম অনুযায়ী তিনি (হাকিমুল হক) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অভিযোগ দিতে পারতেন। তা না করে হাকিমুল হক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, টেবিল চাপড়ে ভেঙেছেন, যেটা তিনি কোনোভাবেই করতে পারেন না।

জানতে চাইলে ড. হাকিমুল হক বলেন, ‘সোমবার (৩১ অক্টোবর) রাতভর আমি প্রজেক্ট প্রস্তুত করেছি। এটি আজই জমা দেওয়ার কথা ছিল। এজন্য প্রজেক্টে সভাপতির সুপারিশ করে সই প্রয়োজন ছিল। আমি একজন কর্মচারী দিয়ে ফাইলটি সভাপতির কাছে পাঠাই। কিন্তু তিনি আমাকে যেতে বলেন। পরে আমি গেলেও তিনি (অধ্যাপক ইসমত আরা) সই করবেন না বলে জানিয়ে দেন। এসময় কথা কাটাকাটি হয়েছে। উত্তেজনাবশত টেবিল চাপড়ে কথা বলার সময় কাচ ভেঙে গেছে, এটা অনিচ্ছাকৃত।’

তিনি বলেন, ‘ওনি (ইসমত আরা) এর আগেও আমার সঙ্গে এমন আচরণ করেছেন। বিভাগের সভাপতির কাজ সই করা। এটা তার রুটিন কাজ। কিন্তু তিনি তা না করে আগের অনেকগুলো ঘটনাকে সামনে এনেছেন।’

Advertisement

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ ধরনের একটি ঘটনা শুনেছি। তবে এটা দেখা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সুলতান-উল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ জমা দিলেও সেটা আমার কাছে এখনো আসেনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। আগামীকাল লিখিত অভিযোগ হাতে পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

মনির হোসেন মাহিন/এএএইচ