ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেনের আগাম ঘোষণা অনুযায়ী, মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দেশটির সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, সংসদে নতুন দল আসার মাধ্যমে স্ক্যানডিন্যাভিয়ান এ দেশটির রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে পরিবর্তন আসতে পারে।
Advertisement
এর আগে পার্লামেন্টে উগ্র বামপন্থিদের অনাস্থা ভোটের হুমকি আসায় নির্দিষ্ট সময়ের সাত মাস আগেই গত ৫ অক্টোবর আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন ফ্রেডেরিকসেন।
ডেনমার্কের পার্লামেন্টে কোনো দল ১৭৯টি আসনের মধ্যে ৯০টি আসন পেলে সেটিকে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে অনেকের ধারণা, এবারের নির্বাচনে বর্তমান কট্টর বামপন্থী কিংবা কট্টর ডানপন্থী কোনো দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না।
এমন হলে সাবেক লিবারেল নেতা লারস লক্কে রাসমুসেনই প্রধানমন্ত্রিত্বের জন্য বাকি থাকেন। ডেনমার্কের রাজনীতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়ে এ বছরের জুনে নতুন দল গঠন করেন তিনি। অনেকের ধারণা, এবারের নির্বাচনে তার সমর্থন ছাড়া কোনো দলই সরকার গঠন করতে পারবে না।
Advertisement
এবার ৪০ লাখেরও বেশি ড্যানিশ ভোটার ১৪টি দলের মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচিত করবেন। এখন পর্যন্ত দেশটির তিন নেতা প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছেন। তারা হলেন- বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও সোশ্যাল ডেমোক্রেট দলের নেতা মেট ফ্রেডেরিকসেন, লিবারেল পার্টির নেতা জ্যাকব এলম্যান-জেনসেন ও কনজারভেটিভ পার্টির সরেন পৌলসেন।
উত্তর কোপেন হেগেনে নিজের ভোট দেওয়ার পর ফ্রেডেরিকসেন বলেন, যদিও এ নির্বাচনের সমীকরণ বেশ জটিল, কিন্তু আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাবো। আমি আশাবাদী, তবে নিশ্চিত করে কিছু বলেতে পারছি না।
জরিপ অনুসারে, রাসমুসেনের দল ১০ শতাংশে ভোট পেতে পারে। তাছাড়া তিনি সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে একটি ক্ষমতাসীন জোট গঠনের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এদিকে অভিবাসন সীমিত করতে চায় এমন দুটি নতুন দল সংসদে প্রবেশের জন্য প্রতিযোগিতা করছে। তাছাড়া এ দল দুটি পূর্ববর্তী সরকার গঠনে সহায়তাকারী দলকেও সংসদ থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য করতে পারে।
Advertisement
নতুন দুটি দলের মধ্যে রয়েছে- এ বছরের জুনে সাবেক অভিবাসনমন্ত্রী ইঙ্গার স্টোজবার্গের গঠন করা ‘ডেনমার্ক ডেমোক্রেটস’। অভিবাসন বিরোধী নতুন এ কট্টর ডানপন্থী দলটি বর্তমানে পার্লামেন্টে রয়েছে।
২০১৬ সালে ডেনমার্কের সাবেক অভিবাসন ও ইন্টিগ্রেশন বিষয়ক মন্ত্রী ইঙ্গার স্টোজবার্গ অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে ২৩ আশ্রয়প্রার্থী দম্পতিকে আলাদা রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যাদের মধ্যে একজনের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম। ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ডেনিশ বিশেষ বিচার আদালত তার সিদ্ধান্তকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। সেই সঙ্গে স্টোজবার্গকে দেওয়া হয় ৬০ দিনের কারাদণ্ড।
সব মিলিয়ে দেশটির বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি একসময়ের শক্তিশালী, জনপ্রিয় ও অভিবাসন বিরোধী ‘ডেনিশ পিপলস পার্টি’কে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ বিরোধের জেরে ভেঙে পড়া এ দলটি সংসদে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয় দুই শতাংশ ভোট পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। অথচ ২০১৫ সালে দলটি ২১.১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।
২০১৯ সালে রামুসেনকে অপসারণের মাধ্যমে ফ্রেডরিকসেন সংখ্যালঘু, একদলীয় সামাজিক গণতান্ত্রিক সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
এদিকে, ড্যানিশ পার্লামেন্টের ১৭৯টি আসনের মধ্যে দুটি এসেছে ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল ফ্যারো দ্বীপপুঞ্জ ও গ্রিনল্যান্ড থেকে এসেছে।
মঙ্গলবার সরকারি ছুটি থাকায় সোমবার (৩১ অক্টোবর) ফ্যারোতে নির্বাচন হয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা
এসএএইচ