১৬টি নদ-নদী ও সাড়ে ৪শ চরাঞ্চল নিয়ে উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রাম। এ জেলার মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস কৃষিখাত।এবার ঘন বৃষ্টি ও দফায় দফায় বন্যায় আমন চাষাবাদ বিলম্বিত হলেও আগাম শীতকালীন সবজি চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রচেষ্টায় এসেছে ভিন্নতা। চলতি মৌসুমে জেলায় ৭ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৭১০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো অসুবিধা নেই বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
Advertisement
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রতিটি উপজেলায় কৃষি বিভাগের নিয়মিত তদারকি ও পরামর্শ অব্যাহত রয়েছে। আগাম শীতকালীন শাক-সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। গতবছরের চেয়ে এ মৌসুমে শাক-সবজির বাম্পার ফলন দেখা যাচ্ছে।
বর্তমানে লাউ, শিম, পটল, কুমড়া, টমেটো, বরবটি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, পেপে, করলাসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির চাষ হচ্ছে। অনেক জমি থেকে শাক-সবজির উৎপাদন শুরু হয়েছে। দিনে দিনে শাক-সবজি চাষাবাদের জমির পরিমাণ বেড়েই চলেছে।প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো অসুবিধা হবে না বলে জানিয়েছে কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস।
সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের আরাজী পলাশবাড়ী গ্রামের সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘মোট ২০ বিঘা জমিতে শীতকালীন সবজির আবাদ করছি। এর ৩ বিঘা জমিতে লাউয়ের চাষাবাদ করেছি। জমি থেকে লাউ তোলা শুরু করেছি। ফলন ও দাম ভালো পাচ্ছি। ৪ বিঘা জমির করলা, ৩ বিঘা জমির শসা বিক্রি শুরু করেছি। দাম ভালো পাচ্ছি। কুমড়া চাষ করছি প্রায় ১০ বিঘা জমিতে। আশা করছি জমি থেকে ভালো পরিমাণে কুমড়া তুলতে পারবো।’
Advertisement
সদর উপজেলার কাঁঠাল বাড়ি ইউনিয়নের কৃষক মো. তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘৩ বিঘা জমিতে মুলার আবাদ করেছি। জমিতে মুলার ভালো ফলন দেখা যাচ্ছে। গত কয়েকদিনে ঘন বৃষ্টিতে মুলার পাতায় পচন ধরেছে। ৩ বার ওষুধ স্প্রে করা হলো। আর যদি ঘন বৃষ্টি না হয়, আশা করি মুলা চাষে লাভবান হবো।’
রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের আমিনবাজার এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমি ৩ বিঘা জমিতে বেগুন, ২ বিঘা জমিতে লাউশাক, ১ বিঘা জমিতে লালশাক ও মুলাশাক আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। বিক্রিও শুরু করেছি। আগাম বাজার পাওয়ায় শাক-সবজি ভালো দামে বিক্রি করতে পারছি।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, ‘এবার জেলায় ৭ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৭১০ হেক্টর জমিতে শাক-সবজির উৎপাদন শুরু হয়েছে। কেবল শীতকালীন সবজির চাষাবাদ শুরু হলো। আমাদের কাজ চলছে। আশা করি এ মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কোনো অসুবিধা হবে না।’
এসইউ/জেআইএম
Advertisement