সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২২ উদযাপিত হয়েছে। তবে এ কার্যক্রমে বিশেষ অবদান রাখায় উজ্জ্বল কুমার ভৌমিক নামের মাদক মামলার এক আসামিকে উপজেলার শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং সম্মাননা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
Advertisement
শনিবার (২৯ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ হলরুমে কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২২ উদযাপন অনুষ্ঠানে দুজনকে সম্মাননা দেওয়া হয়। এদের মধ্যে একজন উজ্জ্বল কুমার ভৌমিক। কাজীপুর থানা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জাগো নিউজকে জানান, কমিউনিটি পুলিশিং কাজে বিশেষ অবদান রাখায় উপজেলার শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি পুলিশিং সম্মাননা দেওয়া হয়েছে ২০১৫ সালের শেষের দিকে ইয়াবাসহ এপিবিএনের হাতে আটক হওয়া মাদক মামলার আসামি উজ্জ্বল কুমার ভৌমিককে।
আক্ষেপ করে তারা বলেন, ‘সমাজে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া, জনগণকে সচেতন করা, আইনি সহায়তা দেওয়া এবং পুলিশ ও জনগণের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে কাজ করে কমিউনিটি পুলিশ। তাহলে মাদক মামলার আসামি কীভাবে এ সম্মাননা পায়?’
Advertisement
ওই অনুষ্ঠানে কাজীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেফাজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক ও কাজীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল কুমার, সব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কাজীপুর থানা পুলিশ জানায়, কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে উপজেলায় ভালো অবদান রাখায় দুজনকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। এ সম্মাননা স্মারক পাওয়া দুজন হলেন উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য উজ্জ্বল কুমার ভৌমিক এবং কাজীপুর থানার উপ-পরদির্শক (এসআই) শাহিন মারুফ।
কাজীপুর উপজেলার সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘উজ্জ্বল কুমার ভৌমিক একজন মাদক মামলার অসামি। তিনি ২০১৫ সালের শেষের দিকে সোনামুখী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ২৫টি ইয়াবাসহ এপিবিএনর (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) হাতের আটক হয়েছিলেন। মাসখানেক জেলও খেটেছেন। শুধু তাই নয়, ওই মামলাটি উপজেলার সবচেয়ে বড় মাদক মামলা হিসেবে বিবেচিত।’
এ বিষয়ে কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ্যামল কুমার জাগো নিউজকে বলেন, ‘উজ্জ্বল কুমার ভৌমিকের নামে মাদক মামলা আছে আমার জানা ছিলে না। আমি ৯ মাস হলো এই থানায় যোগদান করেছি। যে কারণে এই ভুলটি হয়েছে।’
Advertisement
জানতে চাইলে সম্মাননা পাওয়া উজ্জ্বল কুমার ভৌমিক জাগো নিউজকে বলেন, ২০১৫ সালের শেষের দিকে একটি মহলের চক্রান্তে মাদক মামলার আসামি হয়ে আমি এক মাস ৮ দিন জেলে ছিলাম। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। ওই মামলায় ২৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। বাকিদের সাক্ষ্য শেষে রায় হবে। এতে আমি অবশ্যই মুক্তি পাবো।’
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আসলে উপজেলা পর্যায়ে কমিউনিটি পুলিশিং সম্মাননা স্মারক দেওয়ার এখতিয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেই। আমরা জেলা পর্যায়ে দুজনকে এই সম্মাননা দিয়েছি। বিষয়টি আমি দেখছি।’
এসআর/জেআইএম