সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯০ আসনে জিতবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আজকে কিংবা কালকে যদি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, বিএনপি ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯০ আসন পাবে। বিএনপি চাইলেই তখন একক সরকার গঠন করতে পারবে। কিন্তু বিএনপি সর্বক্ষেত্রে অংশীদারত্বে বিশ্বাস করে। এজন্যই জাতীয় সরকারের ধারণা দিয়েছি আমরা।’
‘জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন পরবর্তীতে জাতীয় সরকার ও দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট জাতীয় সংসদ অপরিহার্য’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে চট্টগ্রাম ক্লাবে বিএনপির মিডিয়া সেল এ সভার আয়োজন করে। সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে এ সভায় চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনরা অংশ নেন।
Advertisement
রুমিন ফারহানা বলেন, ‘গত ১৫ বছরে রাষ্ট্রের যে সর্বনাশ হয়েছে, ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণে বিএনপির একলা চলো নীতিতে এগোনো সমীচীন হবে না। বিএনপি এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে। কারণ এ দলের হাত ধরে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরেছে। বিএনপির হাত ধরেই দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এসেছিল। অর্থাৎ আমরা সর্বক্ষেত্রে মানুষের অংশীদারত্বে বিশ্বাস করি।’
তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগ বলেন, নির্বাহী বিভাগ বলেন, রাষ্ট্রের যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, সেগুলো আজকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না। এজন্য বড়সড় আকারে রাষ্ট্র মেরামতের প্রয়োজন। বিএনপি বলছে, আগামীতে তারা যদি জনগণের ভোটে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসে, তাহলে একটি জাতীয় সরকার গঠন করবে। এ জাতীয় সরকার হবে জয়ী এবং বিজিতের সম্মিলন।’
বিএনপির এ সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক ছোট ছোট রাজনৈতিক দল আছে, যাদের অনেক প্রাজ্ঞ ও অভিজ্ঞ নেতা রয়েছেন। দল হয়তো ছোট, কিন্তু তাদের অভিজ্ঞ ও বিদগ্ধ নেতা আছে। বিএনপি যদি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়, তাহলে সেই ছোট দলেরও প্রাজ্ঞ-অভিজ্ঞ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে তাদের হাতে হাত ধরে সম্মিলনের মাধ্যমে আমরা জাতীয় সরকার গঠন করবো।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক এ সম্পাদক বলেন, ‘দ্বিপক্ষ বহুমত, বহুপথকে বিশ্বাস করে। শুধু তা নয়, বিএনপি রংধনুর সাতটি রংয়ের মতো বিভিন্ন মতের প্রতি আস্থা রাখে। বিএনপির নিজের যেই যেই ক্ষমতা, সেটাও খর্ব করতে প্রস্তুত। শুধুমাত্র মানুষের কল্যাণের, দেশের কল্যাণে, জনগণের কল্যাণে।’
Advertisement
এমপি রুমিন আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগ রয়েছে। বিচার, আইন ও নির্বাহী বিভাগ। তার মধ্যে আইন বিভাগের কাজ হলো শুধু আইন প্রণয়ন নয়, রাষ্ট্রীয় নীতিও প্রণয়ন করতে হবে।। নির্বাচনে যখন একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা কোনো দল পায়, তখন স্বৈরতান্ত্রিকতা সেই সরকারের মধ্যে তৈরি হয়। সেটা যাতে তৈরি হতে না পারে, সেজন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের ধারণা নিয়ে এসেছেন। এতে একটি চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স আসবে। দুই কক্ষের মধ্যে একটি চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স প্রতিষ্ঠা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষ কিভাবে হবে? তারা কী জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবেন? নাকি জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন? বিশেষ প্রক্রিয়ায় সিলেকশন হবে? সেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে, আলোচনা করবো। উচ্চকক্ষে যারা বসবেন, তাদের বয়স এবং অভিজ্ঞতা, আমরা অন্যদেশে যেটা দেখেছি, অনেক বেশি। সেই বয়স ও অভিজ্ঞতাকে আমরা কাজে লাগাতো পারবো। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সরকার দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।’
‘সংসদেও বেল বাজে, নিজ দলেও তাই…’বক্তৃতার একপর্যায়ে অনুষ্ঠানের সভাপতি বেল বাজিয়ে রুমিন ফারহানাকে বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করার ইঙ্গিত দেন। এসময় রুমিন ফারহানা বলেন, ‘সংসদে সর্বক্ষণই বেল বাজিয়ে আমাকে থামিয়ে দেওয়া হয়। এখন নিজের দলেও তাই...।’
সভাপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, ‘আমাকে আরেকটু সুযোগ দেন।’ জবাবে মতবিনিময় সভার সভাপতি জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ‘ভালো আইন সর্বজনের জন্যেই সমান। এরপর তিনি রুমিন ফারহানাকে সময় বাড়িয়ে দেন।
ইকবাল হোসেন/এএএইচ/এএসএম