সেঞ্চুরি করেছে চিনির দাম। বলা চলে নিম্নআয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে পণ্যটি। তাই সরকার ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে চিনি বিক্রি শুরু করে। এখানে কেজিপ্রতি চিনি ৫৫ টাকায় মিলছে। সরকারের এ উদ্যোগ বেশ সাড়া ফেলেছে সাধারণ ক্রেতা ও নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে। টিসিবি থেকে কম দামে সহজেই চিনি পেয়ে খুশি তারা।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার বিভিন্ন স্থান ঘুরে এমনটি দেখা যায়। চিনি নিয়ে টিসিবির ট্রাক এলেই লাইনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে মানুষ। প্যাকেটজাত হওয়ায় মাপামাপির ঝামেলা না থাকায় দ্রুততম সময়ে মিলছে চিনি।
দুপুর আনুমানিক দেড়টা। নিউমার্কেট সংলগ্ন আজিমপুর পুরাতন কবরস্থানের গেটের অদূরে টিসিবির চিনি বিক্রির ট্রাক এসে থামতে মুহূর্তেই নারী-পুরুষ ও শিশুরা লাইনে দাঁড়িয়ে যান। মিনিট খানেকের মধ্যেই শতাধিক মানুষের লাইন। এসময় টিসিবির বিক্রেতা জানান, তারা প্রত্যেককে এক কেজি চিনি দেবেন। কেউ বেশি চাইলে তা দেওয়া হবে না।
আরও পড়ুন: টাকা দিয়েও মিলছে না চিনি, হু হু করে বাড়ছে দাম
Advertisement
এ প্রতিবেদককে কয়েকজন ক্রেতা জানান, বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেখানে অর্ধেক দামে টিসিবির চিনি কিনতে পারায় তারা খুশি।
হুইল চেয়ারে বসে চিনি কেনার অপেক্ষায় থাকা শারীরিক প্রতিবন্ধী আমজাদ হোসেন বলেন, সাধারণত টিসিবির ট্রাক থেকে সহজে পণ্য কেনা যায় না। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ওজন মেপে বিক্রি করায় সময় আরও বেশি লাগে। কিন্তু এবার চিনি প্যাকেটজাত হওয়ায় সময় কম লাগছে।
বিক্রেতারা জানান, যাদের টিসিবির কার্ড আছে বা নেই সবাইকে তারা এক কেজি করে চিনি দিচ্ছেন। ৫৫ টাকায় দেওয়া হচ্ছে চিনি।
টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট সুপার মার্কেট, মুগদা মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন রাস্তা, নিউমার্কেট, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বর, রামপুরা বাজার, মতিঝিল শাপলা চত্বর, মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার, শান্তিনগর বাজার, উত্তরার আজমপুর বাজার, কারওয়ান বাজারে টিসিবি চত্বর এবং ফার্মগেটের খামারবাড়ি এলাকায় টিসিবির ট্রাক থেকে চিনি বিক্রি হচ্ছে। গত ২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হয় এ কার্যক্রম।
Advertisement
এদিকে সরকার নির্ধারিত সবশেষ দাম অনুযায়ী, প্রতি কেজি খোলা চিনি ৮৪ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ৮৯ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বর্তমানে বাজার ও দোকানভেদে ১০৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে চিনি।
আরও পড়ুন: ব্যবসায়ীদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন নেই বাজারে
দেশে বছরে ২৫ লাখ টন চিনির চাহিদা রয়েছে। দেশীয় চিনিকলগুলো এক লাখ টনের মতো উৎপাদন করতে পারে। বাকি চিনি হয় আমদানি।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি চিনিশিল্প বিভিন্ন সংকট মোকাবিলা করছে। এলসি খোলায় সমস্যা, ডলারের উচ্চমূল্য ও পরিশোধন ইউনিটে গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে চিনির সংকট তৈরি হয়েছে।
এমইউ/জেডএইচ/জেআইএম