জাপানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার নতুন অর্থমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হলো। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শিগেইউকি গোতোকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। সম্প্রতি বিতর্কিত একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসূত্রের জেরে দেশটির অর্থমন্ত্রী পদত্যাগ করেন।
Advertisement
বিরোধী আইন প্রণেতাদের পদত্যাগের আহ্বানের কয়েক সপ্তাহের পর, সাবেক অর্থমন্ত্রী দাইশিরো ইয়ামাগিওয়া সোমবার তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। তিনি বলেন যে, ইউনিফিকেশন চার্চের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে বেশি সময় নিয়েছেন।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা বলেন যে, তিনি গোতোকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছেন কারণ তিনি অভিজ্ঞ একজন রাজনীতিবিদ। অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের ক্ষেত্রে তিনি দক্ষ এবং একজন ভাল উপস্থাপক। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী যে তিনি বিস্তৃত দৃষ্টিকোণ থেকে আর্থ-সামাজিক সংস্কারে কাজ করবেন’।
জাপান সরকার যখন একটি অর্থনৈতিক প্রণোদনা প্যাকেজ এবং একটি নতুন অতিরিক্ত বাজেট সংকলনের জরুরি ব্যবস্থাপনার মুখোমুখি, তখন নতুন অর্থমন্ত্রী নিয়োগের খবর পাওয়া গেলো।
Advertisement
জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে ফুমিও কিশিদা ৩২ বছরের নিচের বয়সীদের জন্য অক্টোবরের শেষে একটি প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সোমবার ক্ষমতাসীন দলের একজন কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে প্যাকেজটি প্রায় ২৬ ট্রিলিয়ন ইয়েন হতে পারে।
ইয়ামাগিওয়া প্রথম মন্ত্রী যিনি কিশিদার সরকার থেকে পদত্যাগ করলেন। গত জুলাই মাসে দেশটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের হত্যার ঘটনার পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তি ইউনিফিকেশন চার্চের বিরুদ্ধে ক্ষোভ পোষণ করেন। অভিযোগ করেন যে এটি তার মাকে দেউলিয়া করেছে এবং এর জন্য শিনজো আবেকে দায়ী করে এ হামলা চালান।
আবের মৃত্যু পর চার্চের সঙ্গে বিস্তৃত যোগসূত্র প্রকাশ করা হয় বিভিন্ন ব্যক্তির। কিশিদার ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সদস্যরা সমর্থন হারাতে থাকেন এ ঘটনার পর। এলডিপি স্বীকার করে যে অনেক স্বতন্ত্র আইন প্রণেতাদের গির্জার সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে। কিন্তু কোনও সাংগঠনিক যোগসূত্র ছিল না। কিশিদা এই ইস্যুতে তদন্তের নির্দেশও দেন।
একজন বেসরকারি-খাতের অর্থনীতিবিদ বলেন গোতোর নিয়োগ সম্ভবত কিশিদার সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসাবে করোনভাইরাস-সম্পর্কিত নীতিগুলো পরিচালনা করার অভিজ্ঞতারভিত্তিতে হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে কোভিড-১৯ মোকাবিলাসহ অন্যান্য ইস্যুও। ধারণা করা হচ্ছে তার সেই ধারাবাহিক সাফল্য বজায় রাখার কারণে হয়ত এ দায়িত্ব পেলেন তিনি।
Advertisement
সূত্র: রয়টার্স
এসএনআর/জেআইএম