ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের শিকার হয়ে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াসহ চার উপজেলার ৪০১ কেন্দ্রে প্রায় ৭৪ হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছেন।
Advertisement
সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত পৌনে ৮টায় জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ৭ নম্বর বিপৎসংকেত জারির পর জেলার হাতিয়া, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সুবর্ণচর উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। রাত পৌনে ৮টা পর্যন্ত এগুলোতে ৭৩ হাজার ৯৩০ জন আশ্রয় নিয়েছেন। রাতের দিকে এ সংখ্যা আরও অনেক বেড়ে যাবে।
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট তিন লাখ লোককে আশ্রয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ওইসব কেন্দ্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনা খাবারসহ শিশু খাদ্যের মজুত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। মেডিকেল টিমকেও সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।
Advertisement
এদিকে সন্ধ্যার পর থেকে বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রচণ্ড বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। হাতিয়ার ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নিঝুম দ্বীপের হরিণ ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিন জানান, লোকজনকে বিপৎসংকেত বলার পরও বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া যাচ্ছে না। তবুও জানমাল রক্ষায় প্রশাসনের সঙ্গে পুলিশ, ইউনিয়ন পরিষদ, রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করায় অনেকে কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাতিয়ার ২৪২টি আশ্রয়কেন্দ্রের বেশিরভাগেই বিদ্যুৎ নেই। অল্পকিছুতে সৌরবিদ্যুতের আলো রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন আশ্রয় নেওয়া লোকেরা।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সেলিম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোমবাতি দিয়ে বিকল্প আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যাপ্ত খাদ্য, ওষুধসহ চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
Advertisement
এরআগে নদী উত্তাল থাকায় রোববার (২৩ অক্টোবর) বিকেল ৩টা থেকে হাতিয়ার সঙ্গে সারাদেশের নৌ-চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে এ দ্বীপের সাত লাখ অধিবাসী কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কেন্দ্রীয় ম্যানেজিং বোর্ডের সদস্য ও নোয়াখালী ইউনিট সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন বলেন, উপকূলে অবস্থানরত ইউনিট প্রধানদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। উপকূলের লোকজনের সাহায্য করতে আট হাজার ৩৮০ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।
নোয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিকেল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালী জেলা শহরে ৬৩ মিলিমিটার এবং হাতিয়ায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ বৃষ্টিপাত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/জেআইএম