দেশজুড়ে

লক্ষ্মীপুরের উপকূলে ভাঙন আতঙ্ক, নৌ চলাচল বন্ধ

বঙ্গোপসাগর থেকে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা উপকূলীয় এলাকায় সোমবার (২৪ অক্টোবর) দিনব্যাপী ঝোড়ো হাওয়া বইছে। বৃষ্টিও হয়েছে সারাদিন। জোয়ারের তীব্র স্রোত ও ভাটার টানে উপকূলে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে।

Advertisement

অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় মানুষের কষ্ট বেড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আশানুরূপ মানুষ আসেনি। গবাদিপশু চুরির ভয়ে বাড়িঘর ছাড়তে অনাগ্রহ চরের বাসিন্দাদের।

দুপুর থেকে লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল নৌরুটে সবধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। যাত্রীদের নিরাপদ স্থানে এনে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন।

কমলনগর উপজেলার মতিরহাট, নাসিরগঞ্জ ও নবীগঞ্জ এলাকায় খবর নিয়ে জানা গেছে, সকাল থেকে নদী শান্ত ছিল। বৃষ্টির কারণে হাট-বাজারে মানুষের উপস্থিতি কম ছিল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হননি।

Advertisement

তবে প্রশাসন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। নদী তীরবর্তী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল না। মতিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও উত্তর পশ্চিম চরমার্টিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কেউ আসেনি।

অন্যদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেঘনায় জোয়ার আসা শুরু হয়। জোয়ারের পানি নদীর সংযোগ খালগুলোতে ঢুকেছে। এরসঙ্গে বাতাসের গতিবেগ ও বৃষ্টি বেড়েছে।

জোয়ারে প্রায় দুই ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সন্ধ্যায় নদীতে ভাটা নামে। এ ভাটায় ভাঙন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত কমলনগরের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষজন আসেনি। উপকূলীয় এলাকায় ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখানো হয়েছে। রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনার জন্য মাইকিং করেছেন।

Advertisement

মজুচৌধুরীর হাট ফেরিঘাটের প্রান্তিক সহকারী রেজাউল করিম বলেন, আবহাওয়া অফিস ও ঊধ্র্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে আসা শুরু করেছেন। আলোর জন্য মোমবাতির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি শুকনা খাবারেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে।

রামগতি ইউএনও এসএম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, উপজেলার চর আবদুল্লাহ মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন একটি ইউনিয়ন। সেখানে প্রায় ৪০-৫০টি পরিবার রয়েছে। তাদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ উদ্ধারকর্মীরা কাজ করছেন। মাইকিং করে সবাইকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য বলা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, দুর্গম চর থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়কালীন চিকিৎসার জন্য মেডিকেল টিম ও শুকনো খাবার প্রস্তুত রয়েছে। নদী এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

কাজল কায়েস/এসআর/জেআইএম