জাতীয়

সন্ধ্যায় সৃষ্টি হতে পারে ‘সিত্রাং’, আঘাত হানতে পারে মঙ্গলবার

বঙ্গোপসাগরে থাকা গভীর নিম্নচাপটি আজ (রোববার) সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এ রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।

Advertisement

তিনি বলেছেন, এটি সোমবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাতের পর থেকে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।

রোববার (২৩ অক্টোবর) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির বাস্তবায়ন বোর্ডের জরুরি সভার আগে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

গত ২০ অক্টোবর সৃষ্ট লঘুচাপটি রোববার দুপুরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গভীর নিম্নচাপটি আজ (রোববার) সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। যদি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়, তাহলে এর নাম হবে- সিত্রাং। এটি আরও এগিয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নিতে পারে। যদি উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নেয় তাহলে এটি কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত প্রতিটি জেলাতেই আঘাত হানবে।

Advertisement

সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে বলেও জানান এনামুর রহমান।

তিনি বলেন, এখন গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে যাচ্ছে। যদি দিক পরিবর্তন না করে তবে এটি ভারতের ভুবনেশ্বর ও পশ্চিম বাংলায় আঘাত হানবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার পর এর উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নেওয়ার সম্ভাবনা ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ। সব দেশের পূর্বাভাস মডেলই এটি বাংলাদেশে আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ২৪ অক্টোবর (সোমবার) দিবাগত রাত থেকে ২৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisement

এটি উত্তর-পূর্ব দিকে মোড় নিলে ৭৩০ কিলোমিটার বিস্তৃত ১৯টি উপকূলীয় জেলায় আঘাত হানতে পারে বলেও জানিয়ে এনামুর রহমান বলেন, উপকূলের আঘাত হানার সময় ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার থাকতে পারে।

প্রস্তুতির বিষয়ে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, লঘুচাপ সৃষ্টির পর থেকেই আমাদের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পূর্বাভাস সেন্টারগুলোর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখছি। সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোকে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আমাদের ভার্চুয়ালি মিটিং হয়েছে। জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং হয়েছে। সিপিপিকে (ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি) প্রস্তুতি গ্রহণ ও সতর্কবার্তা প্রচারের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা পর্যায়ে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো আমরা প্রস্তুত রাখতে বলেছি। আশ্রয় কেন্দ্রগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে।

‘আশ্রয়কেন্দ্রে মানবিক সহায়তা দিতে আমরা প্রত্যেক জেলায় ২৫ টন চাল, পাঁচ লাখ টাকা এবং ড্রাইকেক ও বিস্কিট সরবরাহ করেছি। এটা মজুত আছে, যে কোনো সংখ্যক লোক হলে খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারবে।

‘সিত্রাং’-এর বিস্তৃতি অন্যান্য ঘূর্ণিঝড় থেকে বেশি হলেও এটি খুব বেশি শক্তিশালী হবে না বলেও জানান তিনি।

অমাবস্যার কারণে জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে এনামুর রহমান বলেন, ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি নিয়ে সোমবার দুপুর ১২টায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ডাকা হয়েছে।

আরএমএম/আরএডি/জিকেএস