আন্তর্জাতিক

যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস

মাত্র দেড় মাস আগে ক্ষমতা পেয়েছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। কিন্তু দুর্ভাগ্য! এর বেশি আর যেতে পারলেন না। মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় ডাউনিং স্ট্রিটের নেতৃত্ব ছাড়তে হয়েছে তাকে। এর ফলে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে ক্ষণস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাম লিখিয়েছেন ট্রাস।

Advertisement

তার চেয়ে কম সময়ে আর কোনো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়নি। যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন সময় দায়িত্বপালনকারী প্রধানমন্ত্রী হলেন জর্জ ক্যানিং। ১৮২৭ সালে মারা যাওয়ার আগে মাত্র ১১৯ দিন এই পদে ছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) পদত্যাগের কারণ সম্পর্কে বলতে গিয়ে লিজ ট্রাস বলেন, যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন, তা বাস্তবায়ন করতে না পারার কারণেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ডাউনিং স্ট্রিট থেকে দেওয়া ভাষণে ট্রাস বলেন, যুক্তরাজ্য দীর্ঘদিন ধরে নিম্ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে পিছিয়ে ছিল এবং তিনি তার দলের সাহায্যে এটি পরিবর্তন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘কম ট্যাক্স উচ্চ প্রবৃদ্ধির অর্থনীতি’র জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল আমাদের সরকার। ট্রাস বলেন, আমি স্বীকার করছি... যে প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে কনজারভেটিভ পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়েছিলাম, তা দিতে পারবো না।

একটি বিশাল অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক অস্থিতিশীলতার মুহূর্তে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন লিজ ট্রাস।

এই সমস্যার শুরু মূলত গত ২৩ সেপ্টেম্বর। সেদিন ট্রাস প্রশাসনের প্রথম অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টেং বিশাল ট্যাক্স ছাড় দিয়ে মিনি-বাজেট ঘোষণার পরপরই যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক বাজারে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যেই মতবিরোধ দেখা দেয়।

বিতর্কের মুখে গত ৩ অক্টোবর রেকর্ড ট্যাক্স ছাড়ের সিদ্ধান্ত থেকে কিছুটা পিছু হটেন ট্রাস ও কোয়ার্টেং। কিন্তু তাতেও সমালোচনা থামেনি। শেষপর্যন্ত গত ১৪ অক্টোবর পদত্যাগ করেন কোয়ার্টেং। তার স্থলাভিষিক্ত হন আরেক কনজারভেটিভ নেতা জেরেমি হান্ট। দায়িত্ব পেয়েই তিনি কোয়ার্টেং, তথা লিজ ট্রাসের বেশিরভাগ পরিকল্পনা বাতিল করে দেন।

Advertisement

এছাড়া হাউজ অব কমন্সে ফ্র্যাকিং প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়ে গত রাতের ভোটাভুটিতেও ব্যাপক নাটকীয়তা সৃষ্টি হয়। এই বিতর্কের মধ্যেই পদত্যাগ করেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভারম্যান। ফলে প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের ওপর চাপ আরও বেড়ে যায় এবং শেষপর্যন্ত তিনিও সরকারপ্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।

সূত্র: বিবিসিকেএএ/