পুণ্য সেবার মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়ায় শেষ হলো তিন দিনের লালন উৎসব। বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল থেকে সাধু ভক্তরা লালন চত্বর ছেড়ে নিজ বাড়ি ফিরে গেছেন। বিকেলের মধ্যে আখড়াবাড়ি অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়। সাধু-ভক্তদের মিলনমেলা ভাঙলেও সন্ধ্যার পর হাজারো দর্শনার্থীর ঢল নামে ছেঁউড়িয়ায়।
Advertisement
বিদায় লগ্নে অনেক সাধু ও লালন ভক্তরা চোখের জল ভাসিয়ে আসন ছাড়েন। আবার ১ কার্তিক বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ধামে আসবেন তারা।
বুধবার সন্ধ্যায় ১৩২তম তিরোধান দিবসের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমীর সভাপতি মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার খাইরুল আলম, স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক আরিফ-উজ-জামান, কুষ্টিয়া জজ কোর্টের জিপি আখতারুজ্জামান মাসুম, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার সেলিম তোহা, কুষ্টিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার রফিকুল আলম টুকু, কুষ্টিয়া শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, দিশার নির্বাহী পরিচালক রবিউল ইসলাম প্রমুখ।
এদিনে প্রধান আলোচক হিসেবে লালন দর্শনের আলোকে বক্তব্য দেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরোয়ার মুর্শেদ। এছাড়া আমন্ত্রিত অতিথিদের আলোচনা শেষে লালন একাডেমি ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত খ্যাতনামা শিল্পীদের পরিবেশনায় রাতভর লালন সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হয়।
Advertisement
তিন দিন ধরে এক তারা দোতারা বাদ্যযন্ত্র নিয়ে সাধুরা গানের মধ্য দিয়ে লালনকে স্মরণ করেন। ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’, ‘মায়েরে ভজলে হয় বাপেরই পরিচয়’, ‘মিলন হবে কত দিনে’ ‘রাত পোহালে পাখি বলে, দে রে খাই দে রে খাই’ লালন সঙ্গীতের লালনের আধ্যাত্মিক গানে মুখরিত ছিল আখড়াবাড়ি। দিন রাত চলে সাধু ভক্তদের লালন সংগীত। লালনের আধ্যাত্মিক গানের মধ্যেই খুঁজে পেয়েছে লালনের দর্শন।
আল-মামুন সাগর/এসজে/জিকেএস