সাহিত্য

ঝুটন দত্তের সাতটি কবিতা

শ্রমিক

Advertisement

ভূমি মালিকানার দাবি করি নাস্বপ্ন দেখিনি ভূস্বামী হবার;তোমার বুকে ছুরি বসিয়ে সম্ভ্রমহানির দুঃসাহস নেই। সামান্য শ্রমিক আমি, আমার শ্রমের ন্যায্যতার অধিকারী মানবের মৌলিক অধিকার নিয়ে বাঁচতে চাই।পূর্বপুরুষের সংগ্রামী রক্তে ভেজা মাটি, স্বাধীনতার আমরা উত্তরসূরি... আগন্তুক নয়।

****

খোঁজ

Advertisement

হাওয়ায় দোলে মন এক পা, দু’ পা করে এগিয়ে যা-ও তুমি; ভরা নদের তীরে সন্ধ্যামালতী হাসে। আপন বেগে ছোটে জলের ধারা,আর বিরহী প্রেমিক ডোবে সুইমিং পুলে।

দূরের গহীন বনে বাজে বাঁশি কার খোঁজ কে রাখে পাথর নগরীতে!তবুও ময়ূরপুচ্ছ পেখম মেলে। তাই জানতে ইচ্ছে করে—তোমারে যে পাই, কতটুকু পাই এ ভব সংসারে।

****

শ্যাওলা

Advertisement

আমার বুকের দেয়ালেশ্যাওলা জমে আছে, অথচ আমি কখনো সীমারেখা চাইনি;চাইনি কোনো সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া। হে বন্ধু, দূর থেকে কুশল জানাও দেয়ালে শ্যাওলা জমে জমে পিচ্ছিল হয়ে আছি,কাছে এলে পরে যাওয়ার ভয় মনে আসে।

****

প্রতীক্ষা শেষে

একদিন দেখা হবে তোমার সাথে আমার,লক্ষ কোটি মাইলের দূরত্ব ঘুচে।

ইটের সলিং রাস্তায় হাঁটবো দুজন ঝরা পাতার মর্মর শব্দে, নিশি পোকার কোরাসে জ্বলে থাকবে ল্যাম্পপোস্ট।

কোনো গোপন প্রণয় নেই আমাদের, পৃথিবী জানবে তোমাকে ভালোবাসাই আমার ধর্ম।

****

জলকথা

বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা অনাদিকালের,কাঠফাটা রোদে মাটির বুকে জলের প্রতিটি ফোটা শান্তিমন্ত্রের মতো ধ্বনিত হয় স্বর্গীয় নৃত্যের তালে।

ত্রিতাপ বইতে হয় বৃক্ষকে,ঝড়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায় ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে—শুধু বৃষ্টি ছুঁয়ে চিরকাল পৃথিবী চির সবুজের।

****

মনঃকল্পিত

মনের অসুখ সেরে গেলে নদীতে লাফায় হাঙর;এ দৃশ্য হয়ে ওঠে মনোরম।মৌন বিকালের গান ঢুকে পড়ে দরজার ফাঁকে আস্তে করে, কক্ষের ভেতর শুয়ে থাকা পোষা বিড়াল চুপচাপ এসে বসে পায়ের কাছে।

****

কোনাকুনি পথ

একটু কাদা জল লেগে গেলে দোষ নেই, কিছুটা ধুয়ে নিতে হয়।কোনাকুনি পথ এগিয়ে রাখে সময়,নষ্ট সময়ের কষ্টে মানুষের যত হাহাকার।

অবাধ্য জীবন ডিটারজেন্টেধুয়ে নিতে পারলে শুকিয়ে নিতাম তার টেনে কড়া রোদে;স্বপ্ন দেখতাম ধবধবে সাদা জীবনের কোনাকুনি পথে।

এসইউ/জিকেএস