কাজী সহিদুল ইসলাম বেসরকারি টিভি চ্যানেল দুরন্ত টেলিভিশনের ব্রডকাস্ট অপারেশন ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত। তিনি সম্প্রতি তার প্রতিষ্ঠানের কর্মসংস্থান ও কর্মী নিয়োগের বিষয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অনন্যা আক্তার—
Advertisement
জাগো নিউজ: প্রথমেই আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সংক্ষেপে জানতে চাই—কাজী সহিদুল ইসলাম: দুরন্ত টেলিভিশন ২০১৭ সালে প্রথম বাংলাদেশি শিশুতোষ টেলিভিশন হিসেবে যাত্রা শুরু করে। সেই থেকে আজ পর্যন্ত; বাংলাদেশে মোস্ট টপ চ্যানেলগুলোর মধ্যে দুরন্ত অন্যতম। দুরন্ত মূলত বাংলাদেশের শিশুদের বিনোদন ও বিনোদনের মধ্য দিয়ে শেখার যে প্রক্রিয়া, তা নিয়ে কাজ করছে।
জাগো নিউজ: আপনার প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আছে?কাজী সহিদুল ইসলাম: তিনটি বিভাগের মাধ্যমে আমাদের কাজগুলো হয়ে থাকে। কারিগরি বিভাগের মধ্যে রয়েছে ব্রডকাস্ট অপারেশনস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। এরপরে রয়েছে প্রোগ্রাম ডিপার্টমেন্ট। প্রোগ্রামগুলো মূলত কিছু স্থানীয়ভাবে প্রডিউস করা হয়। আবার কিছু ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যাটফর্ম থেকে একোয়ার করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল কন্টেন্টের জন্য আবার প্রয়োজন হয় ডাবিংয়ের। এ ছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো রয়েছে মার্কেটিং, ফিন্যান্স, এইচআর বিভাগ। এসব বিভাগের চাহিদা অনুসারেই আমরা নিয়োগগুলো দিয়ে থাকি।
জাগো নিউজ: আপনার প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা কেমন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন?কাজী সহিদুল ইসলাম: আমাদের প্রতিষ্ঠানের মূল শক্তি আসলে টিমওয়ার্ক। আমরা এ টিম বন্ড ধরে রাখতে কর্মীদের রিফ্রেসমেন্টের সুযোগ করে দিই। প্রায়ই আমরা কর্মীদের নিয়ে আউটিংয়ের ব্যবস্থা করি। এতে কর্মীদের মধ্যে টিম বন্ডিং তৈরি হয়, তারা রিলাক্সেশনের সুযোগ পান, মোটিভেটেড হন। এতে কাজের এনার্জিও বাড়ে। এ ছাড়া দুরন্ত টেলিভিশন কর্মীদের অনেক বেশি ফ্রিডম অব ওয়ার্ক দেয়। কাজের স্বাধীনতা থাকলে অনেক বেশি সৃজনশীল কাজ করা সম্ভব। এ জন্য দুরন্ত ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ দিতেই হয়।
Advertisement
জাগো নিউজ: কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলো প্রাধান্য দিয়ে থাকেন?কাজী সহিদুল ইসলাম: এখানে দুটো বিষয় থাকে। অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রে এক রকম। ফ্রেশারদের ক্ষেত্রে ভিন্ন বিষয় প্রত্যাশা করা হয়। সিনিয়র পোস্টগুলোর জন্য মূলত অভিজ্ঞ কর্মী চাওয়া হয়। ফ্রেশারদের ক্ষেত্রে মূলত তাদের কমিউনিকেশন স্কিল দেখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা অনেক রকম তাত্ত্বিক বিষয় পড়ে আসি। ফ্রেশারদের ক্ষেত্রে দেখা হয়, তারা তাত্ত্বিক বিষয়গুলোকে কতটা প্র্যাকটিক্যালি ভাবতে পারেন। পুঁথিগত বিদ্যা আমরা কমবেশি সবাই জানি। আমাদের দেশে ফ্রেশাররা মূলত কমিউনিকেশনে দুর্বল। ধরুন, একটা সিভি পাঠানো হলো, সিভি পড়া শেষে চোখে পড়ার মতো কিছু পাওয়া যায় না। এ ছাড়া ভাইভা দিতে এসে অনেক অ্যাপ্লিকেন্টকেই দেখা যায়, প্রস্তুতি নেই। আপনি যেই প্রতিষ্ঠানে ভাইভা দিতে এসেছেন, তাকে নিয়ে আপনার পড়াশোনা করে আসা উচিত। প্রতিষ্ঠানটি কী নিয়ে কাজ করে, কীভাবে কাজ করে। একটু চেষ্টা করলেই ৫০-৬০ ভাগ জেনে যাওয়া যায়।
জাগো নিউজ: কর্মী হিসেবে যোগদানের আগে কোন কোন বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত?কাজী সহিদুল ইসলাম: যোগদানের শুরুতেই অবশ্যই প্রতিষ্ঠানের অরগানাইজেশনাল স্ট্রাকচারটা বোঝা উচিত। স্ট্যাডি করা, সিনিয়রদের সঙ্গে আলাপ করে নিজের কাজটা বোঝা। কাজ করতে করতে নিজেকে ডেভেলপ করা। প্রত্যেকটা সমস্যা থেকে শেখা। মোট কথা কোম্পানিতে ভ্যালু অ্যাড করা। একবছর পর প্রতিটি কোম্পানি কর্মীদের ইভালুয়েশন করে। পারফরমেন্স, পাংচুয়ালিটি, প্রফেশনালিজম, আউটলুক—সব কিছুই এ মূল্যায়নের মধ্যে পড়ে।
জাগো নিউজ: চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?কাজী সহিদুল ইসলাম: প্রথমত, একটা ভালো সিভি বানাতে হবে; যেটা আপনাকে রিপ্রেজেন্ট করবে। ইন্টারন্যাশনাল ওয়েবসাইটগুলোতে ভালো কিছু ফরমেট পাওয়া যায়। ভালো অপরচুনিটিগুলো পেতে নেটওয়ার্কিং বাড়াতে হবে। লিংকডইন, বিডিজবসসহ যেসব মাধ্যমে সার্কুলারগুলো পাওয়া যায়; সেগুলোতে কানেক্টেড থাকতে হবে। কমিউনিকেশন স্কিল বাড়াতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কারিকুলামে থাকুক বা না থাকুক—ইংরেজি ভাষার দক্ষতা, প্রেজেন্টেশন দেওয়ার ব্যাপারে দক্ষতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি ডোমেইন বেইজ নলেজগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। থিওরিকে প্র্যাকটিক্যালি ভাবার প্র্যাকটিস করতে হবে। ক্যারিয়ার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে, যারা স্পেসিফিক ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছেন—ইঞ্জিনিয়ারিং, বিবিএ অথবা অন্যকিছু; তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড বেজড ক্যারিয়ারই বাছাই করা উচিত। যদিও আমাদের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি অনেক সময়ই আমাদের সেই সুযোগটুকু দেয় না।
এসইউ/এমএস
Advertisement