আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল ও দয়ালু। তাঁর দয়া এতবেশি যে, মারাত্মক গুনাহ করার পরও তিনি মানুষকে ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাইলের শিরকের মতো গুনাহও ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা চাইলে যে কাউকে ক্ষমা করে দিতে পারে। কোরআনের বর্ণনা থেকেই তা প্রমাণিত।
Advertisement
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম যখন চল্লিশ দিনের অঙ্গীকার নিয়ে স্বজাতি (বনি ইসরাইল) থেকে তুর পাহাড়ে অবস্থান নেয়। তখন বনি ইসরাইলরা গো-বাছুর পূজায় (শিরকে) লিপ্ত হয়। এরপর আল্লাহ তাআলা তাদেরকে শিরকের গুনাহ থেকে ক্ষমা করে দেন। যার বর্ণনায় আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَ اِذۡ وٰعَدۡنَا مُوۡسٰۤی اَرۡبَعِیۡنَ لَیۡلَۃً ثُمَّ اتَّخَذۡتُمُ الۡعِجۡلَ مِنۡۢ بَعۡدِهٖ وَ اَنۡتُمۡ ظٰلِمُوۡنَ - ثُمَّ عَفَوۡنَا عَنۡکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ ذٰلِکَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ - وَ اِذۡ اٰتَیۡنَا مُوۡسَی الۡکِتٰبَ وَ الۡفُرۡقَانَ لَعَلَّکُمۡ تَهۡتَدُوۡنَ
আর যখন আমি মুসার সঙ্গে চল্লিশ রাতের ওয়াদা করেছিলাম এরপর তোমরা গোবৎস বানিয়ে নিয়েছ মুসার অনুপস্থিতিতে। বস্তুত তোমরা ছিলে জালেম। তারপর আমি তাতেও তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে নাও। আর (স্মরণ কর) যখন আমি মুসাকে কিতাব এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্য বিধানকারী নির্দেশ দান করেছি, যাতে তোমরা সরল পথ প্রাপ্ত হতে পার। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৫১-৫৩)
Advertisement
আয়াতে বনি ইসরাইলদের প্রতি আল্লাহ তাআলা সবচেয়ে বড় নেয়ামাত এবং অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করেছেন। হজতর মুসা আলাইহিস যখন চল্লিশ দিনের জন্য তুর পাহাড়ে গেলেন, এ চল্লিশ দিনের মর্মার্থ আল্লাহ কুরআনের অন্য আয়াতে বলেন, ‘যখন আমি মুসার সঙ্গে ত্রিশ রাতের ওয়াদা করেছিলাম এবং আরও দশ বাড়িয়ে চল্লিশ করেছিলাম। ত্রিশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর এদিকে সামেরী নাকম এক ব্যক্তি সোনা-রূপা দিয়ে গো-বাছুরের একটি প্রতিমূর্তি তৈরি করে এবং তার কাছে পূর্ব থেকে সংরক্ষিত হজরত জিবরিল আলাইহিস সালামের ঘোড়ার খুরের তলার কিছু মাটি গো-বাছুরের প্রতিমুর্তির ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়ার সেটি জীবন্ত হয়ে উঠলো। এতে অশিক্ষিত বনি ইসরাইল তারই পূজা (শিরক) করতে আরম্ভ করলো।
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম তাদের মাঝে ফিরে আসলে তারা এ শিরক হতে তাওবা করে। তখন আল্লাহ তাআলা তাদেরকে এত বড় শিরকের অপরাধ থেকে মুক্তি দান করেন। আয়াতে এ কথাই স্মরণ করে দেয়া হয়েছে।
তাওরাত ছিল তাদের জন্য এমন এক কিতাব যা সত্য ও মিথ্যার প্রভেদকারী। যার উপর বনি ইসরাইল ঈমান এনেছিল। এ কিতাবেই শেষ নবি হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সর্বশেষ আসমানি গ্রন্থ কোরআনুল কারিমরে উপর ঈমান আনার কথা বলা হয়েছে। তাই আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাইলদেরকে বারবার এ কথারই স্মরণ করে দিচ্ছেন যে, তোমাদের প্রতি দেওয়া নেয়ামতের কথা স্মরণ করে আমার নির্দেশে শেষ নবি ও রাসুল এবং কোরআনের প্রতি ঈমান গ্রহণ করো। আর মুসলিম উম্মাহকে তাওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে আসার শিক্ষাও রয়েছে অত্র আয়াতে।
আল্লাহ তাআলা উক্ত আয়াতের শিক্ষায় মুসলিম উম্মাহকে তওবা করে ক্ষমা পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Advertisement
এমএমএস/জেআইএম