বরগুনার পাথরঘাটায় টেন্ডারের (দরপত্র) শিডিউল বিক্রির আগেই প্রায় অর্ধকোটি টাকার কাজ পছন্দের ঠিকাদারের কাছে বন্টন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, এরই মধ্যে ঠিকাদার কাজ শুরু করেছেন।
Advertisement
২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন তহবিলর (এডিবি) আওতায় পাথরঘাটা পৌরসভার ছটি প্রকল্পে দরপত্র আহ্বান করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বুধবার (১৯ অক্টোবর) টেন্ডার খোলার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এডিবির আওতায় ছয়টি প্রকল্প বাস্তবায়নে পাথরঘাটা পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী গাজী নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরে গত ২২ সেপ্টেম্বর টেন্ডার আহ্বান করে একটি বাংলা দৈনিক ও একটি ইংরেজি দৈনিক এবং একটি আঞ্চলিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত ঠিকাদারদের কাছে দরপত্র বিক্রি করা হবে। ১৯ অক্টোবর দুপুর ১টা পর্যন্ত দরপত্র পৌরসভা গ্রহণ করবে। ওইদিন বিকেল ৩টায় দরপত্রগুলো খোলা হবে। প্রত্যেক প্রকল্পের অনুকূলে যে ঠিকাদার চুক্তিমূল্য কম দেবেন তিনি ওই কাজের ঠিকাদার নিয়োগ পাবেন।
Advertisement
তবে সরেজমিনে দেখা যায়, ওই নোটিশে ১ ও ২ নম্বর প্যাকেজে পাথরঘাটা পৌরসভার খোলা মুরগি বাজার অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ এরই মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ শেষ হয়ে গেছে। পৌরসভা ভবন মেরামত কাজও শেষ হয়েছে।
পাথরঘাটা পৌরসভার ঠিকাদার মেসার্স জেমি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী গোলাম কিবরিয়া পিয়ার বলেন, আমি এখানকার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। অথচ ২০ দিন আগে প্রকাশিত দরপত্রের কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। জানতে পেরেছি পৌর কর্তৃপক্ষ গোপন টেন্ডারের মাধ্যমে মেয়রের আত্মীয়-স্বজনদের মাধ্যমে কাজ ভাগবাটোয়ারা করে নেবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার বলেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তারা জানতে পারেন পাথরঘাটা পৌরসভা ছয়টি কাজের অনুকূলে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। অথচ পৌরসভার নোটিশ বোর্ডে এ বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়নি। শিডিউল কিনতে গিয়ে জানতে পারি কাজগুলো আগে থেকেই পৌরমেয়র ও কাউন্সিলরদের সুবিধামতো ঠিকাদারদের বরাদ্দ দিয়েছে। এটা এক প্রকার অনিয়ম। এতে কাজের গুণগত মান খারাপ হবে।
এ বিষয় পাথরঘাটার পৌরসভার সচিব মো. জসিম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেন্ডার সংক্রান্ত কাজের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। এসব কাজকর্ম ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং পৌরমেয়র দেখাশোনা করেন।
Advertisement
জানতে চাইলে পাথরঘাটার পৌরমেয়র আনোয়ার হোসেন আকন টেন্ডারের আগেই কাজ শুরুর বিষয়টি অস্বীকার করেন।
তবে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী গাজী নজরুল ইসলাম বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। এতে পৌরসভার নাগরিকদের দীর্ঘসময় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ কারণে নাগরিকের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে পৌরসভার কাউন্সিলর ও মেয়র টেন্ডারের আগেই কাজ শুরু করেছেন।
তিনি আরও বলেন, কোনো ঠিকাদার যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শিডিউল ক্রয় করতে চান তাহলে আমরা শিডিউল বিক্রি করবো। তারা নির্দ্বিধায় টেন্ডার ড্রপ করতে পারবেন।
এসআর/এএসএম