মরমি কবি ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩২তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়ায় লালনের আখড়া বাড়িতে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। সোমবার (১৭ অক্টোবর) থেকে এ অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে।
Advertisement
সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ প্রধান অতিথি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন।
তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্যে থাকছে লালনের কর্মময় জীবন ও দর্শন নিয়ে আলোচনা সভা ও সংগীতানুষ্ঠান। লালন একাডেমির শিল্পীরা ছাড়াও কলকাতার লালন শিলীরা অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করবেন। অনুষ্ঠান ঘিরে তিনদিনের গ্রামীণ মেলাও বসবে।
এরই মধ্যে এ আয়োজনকে ঘিরে দেশের দূর-দূরান্ত থেকে বাউলভক্ত ও সাধুরা এসে ভিড় জমিয়েছেন লালনের আখড়া বাড়িতে।
Advertisement
লালন একাডেমির সভাপতি কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, অনুষ্ঠানকে ঘিরে এরই মধ্যে সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমনকী দেশের বাইরে থেকেও বহু লালনভক্ত ও সাধু এসে জড়ো হয়েছেন সাঁইজির আখড়ায়।
লালন একাডেমির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ফকির লালন সাঁইজি তার জীবদ্দশায় প্রতি বছরই দোল পূর্ণিমা তিথিতে গুরু-শিষ্যের মধ্যে ভাবের আদান-প্রদানের জন্য সাধু-বাউল ফকিরদের সঙ্গে নিয়ে উৎসবের আয়োজন করতেন। সেই থেকে প্রায় দুইশ বছর ধরে এই রেওয়াজ চালু রয়েছে। একইভাবে প্রায় ১৩২ বছর ধরে তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠান পালন করা হচ্ছে। কোনো দাওয়াত-পত্র ছাড়াই বাউলভক্ত ও সাধুরা মনের টানে এই দুটি দিবসকে ঘিরে সাঁইজির আখড়া বাড়িতে ছুটে আসেন।
কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক মঞ্জু জানান, এবারের তিরোধান দিবস উপলক্ষে আখড়া বাড়িতে রেকর্ডসংখ্যক দর্শনার্থী ও লালনভক্ত বাউলদের আগমন ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মূল মাজার প্রাঙ্গণ ও সামনের মরা কালী নদী যেখানে মঞ্চ রয়েছে সেসব স্থানে অসংখ্য বাউল ভক্তরা আসন পেতেছেন।
অনুষ্ঠানের নিরাপত্তাসহ সার্বিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম জানান, অনুষ্ঠানকে ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে মোড়া থাকবে লালনের আখড়া বাড়ি ও এর আশপাশের স্থান। দর্শনার্থীসহ অনুষ্ঠানে আগত বাউলভক্ত সাধুদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
Advertisement
আল মামুন সাগর/এসআর/জেআইএম