জীবিতকে মৃত দেখিয়ে ওয়ারিশ সনদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইউনুস মল্লিকের বিরুদ্ধে।
Advertisement
স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নিত্যানন্দ মণ্ডল। তার দুই ছেলে। এর মধ্যে নিত্যানন্দ মণ্ডল ও তার বড় ছেলে বর্তমানে ভারতের কলকাতায় বসবাস করেন। তার ছোট ছেলে বলরাম মণ্ডল উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের আকপাড়া গ্রামে নিজেদের বাড়িতে বসবাস করেন।
সম্প্রতি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করতে ওয়ারিশ সনদের প্রয়োজন হয়। এই সনদের জন্য তারা স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইউনুস মল্লিকের শরণাপন্ন হন। বলরাম মণ্ডলের বাবা ও ভাই কলকাতায় থাকায় বাবাকে মৃত ও ভাইয়ের নাম গোপন রেখে ওয়ারিশ সনদ ইস্যু করেন ইউপি সদস্য। এ সনদ ইস্যু করতে মোটা অঙ্কের অর্থের লেনদেন হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
গত ২ আগস্ট এ সনদ ইস্যু করা হয়। এছাড়া গত ২২ সেপ্টেম্বর নিত্যানন্দ মণ্ডলের বাবা মৃত নারদ চন্দ্র মণ্ডলের চার ছেলের মধ্যে নিত্যানন্দ মণ্ডলকে বাদ রেখে বাকি তিন ছেলেকে ওয়ারিশ দেখিয়ে আরও একটি মিথ্যা সনদ দেওয়া হয়। যে সনদে ইউপি সদস্য মো. ইউনুস মল্লিকের সই রয়েছে।
Advertisement
এ বিষয়ে বলরাম মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের পৈত্রিক জমির কিছু অংশ বিক্রি করতে ওয়ারিশ সনদের দরকার হয়। আমার বাবা কলকাতায় থাকেন। তিনি অসুস্থ হওয়ায় দেশে আসাও সম্ভব নয়। তাই আমার কাকা এভাবে ওয়ারিশ সনদ করে এনেছেন। তিনি কীভাবে ওয়ারিশ সনদ করে এনেছেন তা আমার জানা নেই।
তবে বড় ভাইয়ের বিষয়টি কেন গোপন করেছেন জিজ্ঞাসা করলে এ বিষয়ে বলরাম কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
জানতে চাইলে ইউপি সদস্য মো. ইউনুস মল্লিক জাগো নিউজকে বলেন, বলরামের বাবা কলকাতায় থাকেন সেটি আমি জানি। তিনি অসুস্থ তাই দেশে আসতে পারবেন না। কিন্তু ওয়ারিশ সনদ দরকার তাই আমি সরল বিশ্বাসে এভাবে সনদ তৈরি করে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে এভাবে ওয়ারিশ সনদ দেওয়া আমার ঠিক হয়নি। আমার ভুল হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আমি কোনো টাকা-পয়সা নিইনি।
Advertisement
কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার ইফতেখার আহমেদ ইকু জাগো নিউজকে বলেন, ওয়ারিশ সনদ যাচাই-বাছাইয়ের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্যদের। সে অনুযায়ী ওয়ারিশ সনদ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্য যাচাই-বাছাই করে আমার কাছে আনেন। আমি শুধু সই করে দিই। কিন্তু মেম্বার যে কাজ করেছেন তা মোটেও ঠিক করেননি। এ ধরনের কাজ অন্যায়। জীবিত ব্যক্তিকে মৃত দেখিয়ে ওয়ারিশ সনদ দেওয়া একটা গর্হিত কাজ।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালী জাগো নিউজকে বলেন, এটা বড় ধরনের অন্যায়। অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে সত্যতা প্রমাণ হলে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এন কে বি নয়ন/এমআরআর/এমএস