মহামারি করোনার সময় থেকেই কমবেশি সবাই নিয়মিত হাত ধোয়ায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। তবে করোনার প্রাদুর্ভাব কিছুটা কমতেই দৈনিক হাত ধোয়ার অভ্যাসও কমেছে অনেকের মধ্যে! তবে ছোট-বড় সবারই নিয়মিত হাত ধোয়া কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন রোগব্যাধি থেকে বাঁচতে হাত ধোয়ার বিকল্প নেই।
Advertisement
প্রতিবছর ১৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী পালিত হয় ‘গ্লোবাল হ্যান্ডওয়াশিং দিবস’। রোগ প্রতিরোধ ও জীবন বাঁচানোর কার্যকর ও সাশ্রয়ী উপায় হিসেবে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতার লক্ষ্যেই পালিত হয় এই দিবস।
প্রথম গ্লোবাল হ্যান্ডওয়াশিং ডে অনুষ্ঠিত হয় ২০০৮ সালে। তখন সারা বিশ্বের ১২০ মিলিয়নেরও বেশি শিশু ৭০টিরও বেশি দেশে সাবান দিয়ে তাদের হাত ধুয়েছিল।
তারপর থেকেই ‘গ্লোবাল হ্যান্ডওয়াশিং ডে’র জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। গ্লোবাল হ্যান্ডওয়াশিং ডে’র এ বছরের থিম হলো, ‘সর্বজনীন হাতের পরিচ্ছন্নতার জন্য একতাবদ্ধ’।
Advertisement
হাত থেকে শরীরে যেভাবে জীবাণু প্রবেশ করে
বারবার চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করার অভ্যাস আছে কমবেশি সবার মধ্যেই। আসলে চোখ, নাক ও মুখ দিয়েই কিন্তু শরীরে সব জীবাণু প্রবেশ করে আমাদের অসুস্থ করে তোলে।
এক্ষেত্রে অপরিচ্ছন্ন হাত থেকে জীবাণুগুলো খাবার ও পানীয়তে প্রবেশ করে। পরে যখন কেউ ওইসব খাবার বা পানীয় গ্রহণ করেন তখন সেগুলো চলে যায় শরীরে। কিছু কিছু জীবাণু নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে কিছু ধরনের খাবার বা পানীয়তে সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে। ওই খাবারগুলো গ্রহণ করলেই মানুষ অসুস্থ হয়ে যায়।
আবার অপরিষ্কার হাত থেকে জীবাণু হ্যান্ড্রাইল, টেবিল বা খেলনার মতো অন্যান্য বস্তুতে স্থানান্তরিত হতে পারে। এরপর একইভাবে যখন অন্য ব্যক্তি সেগুলো স্পর্শ করেন তখন তার হাতে চলে যায় জীবণু।
Advertisement
তবে হাত ধোয়ার মাধ্যমে জীবাণু অপসারণ করা সম্ভব। ডায়রিয়া ও শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ প্রতিরোধসহ ত্বক ও চোখের সংক্রমণ প্রতিরোধেও সাহায্য করে হাত ধোয়ার অভ্যাস।
নিয়মিত হাত ধুলে যেসব রোগের ঝুঁকি কমে
১. সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ফলে ডায়রিয়াজনিত রোগ ৩০ শতাংশ কমে যায়।
২. এই অভ্যাস তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে।
৩. কলেরা, ইবোলা, শিগেলোসিস, সার্স, হেপাটাইটিস ই ও কোভিড-১৯ এর মতো প্রাদুর্ভাব-সম্পর্কিত প্যাথোজেনগুলোর সংক্রমণ কমাতে হাত ধোয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. হাত পরিচ্ছন্ন রাখার মাধ্যমে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বিস্তার কমে।
৫. গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে।
৬. হাসপাতাল থেকে ছড়ানো বিভিন্ন সংক্রমণ (এইচএআইএস) এর বিস্তার রোধ করে।
৭. শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাত ধোয়ার অভ্যাস স্কুলে অনুপস্থিতির হারও কমাতে পারে।
৮. নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস থাকলে উত্পাদনশীলতাও বৃদ্ধি পায়।
৯. স্কুলছাত্রীদের মধ্যে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অসুস্থতার কারণে অনুপস্থিতি ২৯-৫৭ শতাংশ কমে।
১০. ছোট থেকেই শিশুর হাত ধোয়ার অভ্যাস তার বিকাশ উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
সূত্র: সিডিসি
জেএমএস/এমএস