লাইফস্টাইল

পায়ে ব্যথা-জ্বালাপোড়া হতে পারে যে রোগের গুরুতর লক্ষণ

শরীরে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল হৃদরোগের অন্যতম কারণ। খারাপ কোলেস্টেরল ধমনীতে প্লেক তৈরি করে। কোলেস্টেরল একটি মোমযুক্ত পদার্থ, যা শরীরের সুস্থ কোষ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় এক উপাদান।

Advertisement

তবে যখন রক্তনালিতে অতিরিক্ত খারাপ কোলেস্টেরল বা চর্বি জমা হয়, তখন এটি ধমনীগুলো বন্ধ করে দেয়। তখন ধমনী দিয়ে রক্ত প্রবাহ কঠিন হয়ে যায়। যখন কোলেস্টেরল জমা হতে হতে বড় আকার ধারণ করে তখনই ঘটে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো ঘটনা।

বংশে কোনো উচ্চ কোলেস্টেরলের রোগী থাকলে অন্যদের মধ্যেও এ সময় পরে দেখা দিতে পারে। এর ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে অস্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, অতিরিক্ত ওজনসহ অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করা।

সবচেয়ে দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লেও এর কোনো গুরুতর লক্ষণ তেমন প্রকাশ পায় না। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল টের পাওয়া যায় পায়ের এক লক্ষণে।

Advertisement

এক্ষেত্রে পায়ে ব্যথা শরীরের উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণীয় সতর্কতা সংকেত। এ ছাড়াও উরু, নিতম্ব ও হাঁটুর ব্যথাও উচ্চ কোলেস্টেরলের সঙ্গে সম্পর্কিত।

এসব অংশে ব্যথা কেন হয়?

গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে রক্তনালিতে প্লেক জমা হয়। যা রক্তনালিকে সংকুচিত করে ও রক্ত প্রবাহকে সীমাবদ্ধ করে। ফলে পায়ের পেশিতে ব্যথা হয়।

এ কারণে সামান্য হাঁটাচলা কিংবা পরিশ্রমের কারণে রক্তের প্রবাহ কমে যায় ও যখন ব্যক্তি বিশ্রামে থাকে তখন তা সেরে যায়। এই লক্ষণে বুঝতে হবে আপনার শরীরের ওই পেশিগুলো কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত রক্ত পাচ্ছে না।

Advertisement

কোলেস্টেরলের কারণে কেমন ব্যথা হয়?

পা, উরু, হাঁটু ও নিতম্বে সাধারণ ব্যথা হতে পারে এক্ষেত্রে। পায়ে ব্যথা হতে পারে এমনকি হাঁটাহাঁটি বা ছোটখাটো শারীরিক কার্যকলাপ করলেও। এছাড়া ব্যথা, ক্র্যাম্পিং, পায়ে অসাড়তা ও ক্লান্তি প্রায়ই ঘটলে সতর্ক হতে হবে।

এ ধরনের ব্যথা সাধারণত বিশ্রামের সময় চলে যায়। আবার পরিশ্রম হলে ফিরে আসে। চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলা হয় ইন্টারমিটেন্ট ক্লোডিকেশন।

কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে পায়ে আর কোন কোন লক্ষণ দেখা দেয়-

>> পায়ে জ্বালাপোড়া>> পায়ের ত্বকের রং পরিবর্তন>> পায়ে বা আঙুলে ঘা হওয়া>> ঘন ঘন ত্বকের সংক্রমণ ইত্যাদি।

এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত আপনার কোলেস্টেরল পরীক্ষা করতে হবে।

কোলেস্টেরলের আদর্শ মাত্রা কত?

যদি মোট কোলেস্টেরল ২০০ এমজি/ডিএল এর নিচে হয় তাহলে তা স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হয়। ২০০-২৩৯ এমজি/ডিএল এর মধ্যে কোলেস্টেরলের মাত্রা থাকা স্বাভাবিক।

তবে ২৪০ এমজি/ডিএল উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রার ইঙ্গিত দেয়। ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এলডিএল এর সর্বোত্তম মাত্রা ১০০ এমজি/ডিএল এর কম।

কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার কারণ কী?

উচ্চ কোলেস্টেরলের অন্যতম কারণ হলো অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা। চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া, স্থূলতা, ধূমপান ও অ্যালকোহল পান করা জীবনধারা সম্পর্কিত কিছু কারণ যা শরীরে উচ্চ কোলেস্টেরলের জন্য দায়ী।

আবার বংশগত কারণেও ঘটতে পারে। এজন্য পরিবারে কারও মধ্যে এ সমস্যা থাকলে আপনাকেও সতর্ক থাকতে হবে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

জেএমএস/এএসএম