জাতীয়

দখলমুক্ত হলো সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়ি

কিংবদন্তি নায়িকা সুচিত্রা সেনের পাবনার পৈতৃক বাড়িটি ইমাম গাজ্জালী ট্রাস্টের কাছ থেকে দখলমুক্ত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ তাদের মালামাল সরিয়ে নিলে বুধবার সকালে বাড়িটিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।জেলা প্রশাসক কাজী আশরাফ উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন ধরে জামায়াত নিয়ন্ত্রিত ইমাম গাজ্জালী ট্রাস্টের দখলে ছিল বাড়িটি। প্রাথমিকভাবে বাড়িটিতে তালা ঝুলিয়ে আমরা দখলে নিয়েছি। বৃহস্পতিবার বাড়িটি আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝে নেওয়া হবে।জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনে সুচিত্রা সেনের পৈতৃক বাড়ি। সেখানে তিনি বাবা-মা ও ভাইবোনের সঙ্গে শৈশব-কৈশোর কাটিয়েছেন। ১৯৪৭ সালে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার দিবানাথ সেনের সঙ্গে সুচিত্রার বিয়ে হয়। এরপর স্বামীর সঙ্গে কলকাতায় চলে যান তিনি।সুচিত্রা সেনের বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত পাবনা পৌরসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৫১ সালে তিনি অবসরে যান। ১৯৬০ সালে বাড়িটি জেলা প্রশাসনের কাছে ভাড়া দিয়ে কলকাতায় চলে যান করুণাময় দাশগুপ্ত। সে সময় থেকে বাড়িটিকে সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কোয়ার্টার হিসেবে ব্যবহার করা শুরু হয়।১৯৮৭ সালে জামায়াত নেতাদের তদবিরে তত্কালীন জেলা প্রশাসক সৈয়দুর রহমান বাড়িটিকে অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে ইমাম গাজ্জালী ট্রাস্টকে ইজারা দেন। এই ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সেক্রেটারি ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুস সুবহান এবং জেলা জামায়াতের আইনবিষয়ক সম্পাদক আবিদ হাসান।পাবনাবাসী বাড়িটিতে সুচিত্রা সেন সংগ্রহশালা করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করলে ২০০৯ সালে পাবনা জেলা প্রশাসন বাড়িটির ইজারা বাতিল করে ইমাম গাজ্জালী ট্রাস্টকে দখল ছাড়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু জামায়াত নেতারা দখল না ছেড়ে উচ্চ আদালতে যান। আদালত তাদের পক্ষে স্থিতাবস্থা দেন।বাড়িটি দখলমুক্ত করতে রিট করেন আইনজীবী মঞ্জিল মোরসেদ। এটি দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেন আদালত। এরপর দখলকারীরা লিভ টু আপিল করেন। গত ৪ মে লিভ টু আপিল বাতিল করে বাড়িটি দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। গতকাল মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়। বুধবার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বাড়িটিতে হাজির হয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।জেলা জামায়াতের আইনবিষয়ক সম্পাদক ও ইমাম গাজ্জালী ট্রাস্টের সেক্রেটারি আবিদ হাসান বলেন, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আদালতের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা বাড়িটি ছেড়ে দিয়েছি।

Advertisement