নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ইটভাটা বস্তির অসংখ্য শিশু। কাছে স্কুল না থাকা ও স্কুলে ভর্তির টাকার অভাবে সরকারের সবার জন্য শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এসব ইটভাটার বস্তির শিশু। উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটা ঘুরে জানা যায়, রূপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটার বস্তিতে বিপুল সংখ্যক শিশু রয়েছে যারা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা সরকারের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচির বাইরেই রয়ে গেছে।উপজেলার আড়িয়াব, মাসাব, তেতলাবো, কর্নগোফ, গোলাকান্দাইল, সাওঘাট, আধুরিয়া, দাউদপুর এলাকায় অধিকাংশ ইটভাটা রয়েছে। এ সব ইটভাটায় দেশের বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাজার হাজার লোক ভাটা শ্রমিক হিসেবে কাজ করে। আড়াইহাজার, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, বরিশাল, নাটোর, পঞ্চগড়, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন জেলার নিম্নবৃত্ত সাধারণ মানুষেরা একটু বাড়তি আয়ের আশায় পরিবারের সকলকে নিয়ে ভাটায় কাজ করেন। দূর দূরান্ত থেকে আশা পরিবারগুলোর নারী, পুরুষ এমনকি শিশু কিশোরদের ইটভাটায় কাজ করতে দেখা যায়। এতে করে এসব শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। অল্প বয়সে অধিক পরিশ্রমের কারণে বস্তির শিশুদের নানা রোগ ও পুষ্টিহীনতায় ভুগতে দেখা গেছে। বছরের ছয় মাস ভাটার কাজ চলে আর বর্ষা মৌসুমে ভাটার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। তখন কিছু পরিবার নিজ এলাকায় চলে যায়। গ্রামের বাড়িতে কাজ না থাকার কারণে আবার অনেক পরিবার ইটভাটার বস্তিতে বসবাস করতে থাকে।ইট ভাটা বন্ধের সময় এসব শ্রমিকরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রিকশা, ভ্যান চালানোসহ নানা কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। কিছু ভাটা শ্রমিক ইট ভাটায় ছয় মাস থাকে ও বাড়িতে ছয় মাস বসবাস করে। অস্থায়ীভাবে বসবাসের কারণে এসব শিশুরা শিক্ষার আলো পাচ্ছে না। অন্যদিকে বস্তি থেকে স্কুল অনেক দূরে হওয়ায় এবং স্কুলের ভর্তি টাকা যোগাতে না পারায় এসব বস্তির শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না। এ ছাড়া অভিভাবকদের অজ্ঞতা, সচেতনতার অভাবে ইটভাটার শ্রমিক পরিবারের বিপুল সংখ্যক শিশু শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে ইটভাটার শ্রমিক ময়মনসিংহ এলাকার রেইজউদ্দিন জানান, তার দুই সন্তান রাকিব শিশু শ্রেণি আর রত্নাকে ২য় শ্রেণিতে কর্নগোফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেছেন। ভর্তি বাবদ তার কাছ থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৪০০ টাকা নিয়েছেন।একই বস্তির সর্দার দেলোয়ার জানান, তার সন্তানকে ২৬০ টাকা দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়েছে। অনেক শ্রমিক টাকার অভাবে তাদের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করাতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, রূপগঞ্জের সকল শিশুদের সবার জন্য শিক্ষা কর্মসূচির আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। মীর আব্দুল আলীম/এসএস/এমএস
Advertisement